Site icon E Purba Bardhaman

বর্ধমান রেল ষ্টেশনের ভেঙে পড়া জলাধার আদপেই ১৮৯০ সালে তৈরী নয়, দাবী গবেষকের

An FIR has been filed by the deceased's husband in the incident of breaking the water tank at Burdwan railway station

3 dead, 34 injured after water tank burst on Bardhaman Railway Station platform

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বুধবার বর্ধমান রেল স্টেশনের ২ ও ৩ নং প্ল্যাটফর্মের মাঝে থাকা জলাধারের একাংশ ভেঙে বড়সড় দুর্ঘটনা এবং ৩ জনের মৃত্যুর ঘটনায় বিতর্ক চলছেই। আর তারই মাঝে বর্ধমানের বিশিষ্ট ইতিহাস গবেষক ডক্টর সর্বজিৎ যশ বেশ কয়েকটি প্রশ্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলে ধরে বিতর্কের পারদ আরও বাড়িয়ে দিলেন। সর্বজিৎ জানিয়েছেন, যে জলাধারটি ভেঙে গেছে সেটি সম্পর্কে পূর্ব রেলের জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র জানিয়েছেন, এটি ১৮৯০ সালে তৈরি। কিন্তু সেখানেই বড় কৌতূহল তৈরি হয়েছে। সর্বজিৎ প্রশ্ন তুলেছেন, ১৮৯০ খ্রিস্টাব্দে এই ধরনের লোহার স্ট্রাকচার তৈরি করার পদ্ধতি কি ভারতবর্ষে ছিল? ভারতবর্ষের সর্বপ্রাচীন স্তম্ভ জলাধারের বয়স ১৪০ বছর, যা পুনেতে অবস্থিত। তখনও লোহার স্ট্রাকচার করার সময় আসেনি। তাহলে বর্ধমান স্টেশনে তা কী করে সম্ভব হলো? ভারতবর্ষে রেলে প্রথম বিদ্যুতায়ন হয় ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দে ‘গ্রেট ইন্ডিয়ান পেনিনসুলার রেলওয়ে’তে। অপরদিকে ইস্টার্ন রেলওয়ে বৈদ্যুতিকরণ হয় ১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দে এবং বর্ধমান পৌরসভা, বর্ধমান শহরে বিদ্যুতায়ন করে ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দে। যখন পৌরপতি ছিলেন মৌলভি মোঃ ইয়াসিন। অর্থাৎ, বর্ধমান স্টেশনে ১৮৮০ খ্রিস্টাব্দে বিদ্যুৎ ছিল না, তাহলে ওই উচ্চতায় জল তোলা হতো কীভাবে? সর্বজিৎ বলেছেন, অন্য যুক্তি দিয়ে কেউ বলতে পারেন যে, ডিজেল পাম্পের মাধ্যমে হয়ত জল তোলা হতো। কিন্তু ইতিহাস বলছে, প্রথম ডিজেল ইঞ্জিন আবিষ্কৃত হয় ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দে, ভারতে রেল কোম্পানি তা প্রথম ব্যবহার করে ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে (অবশ্য বর্ধমানে নয়)। তাই বর্ধমান স্টেশনে ১৮৯০ খ্রিস্টাব্দে ডিজেল পাম্পের মাধ্যমে জল তোলার যুক্তি খাটে না। তিনি জানিয়েছেন, কলকাতার টালা ট্যাংক তৈরি হয় ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে। তবে টালা ট্যাংকের উচ্চতা বর্ধমান স্টেশনের ট্যাংকের থেকে অনেক কম। বর্ধমান স্টেশনের কর্তৃপক্ষ কি কলকাতার থেকেও এগিয়ে ছিল? সর্বজিৎ জানিয়েছেন, যে দুর্ঘটনা ঘটেছে তা কখনই কাম্য নয়। কিন্তু ইতিহাস বিকৃত হচ্ছে কিনা সেটাই তিনি তুলে ধরে জানতে চাইছেন। যদি সর্বজিৎবাবুর এই মন্তব্য প্রসঙ্গে রেল দপ্তরের কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

Exit mobile version