E Purba Bardhaman

উদ্বোধন হ’ল ডাকবিভাগের বিশেষ কভার ‘বর্ধমান সীতাভোগ’ এবং ‘বর্ধমান মিহিদানা’

India Post department released special covers on 'Bardhaman Sitabhog' and 'Bardhaman Mihidana'

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বর্ধমানের মিহিদানাসীতাভোগের জন্য এবার স্পেশাল কভার। সৌজন্যে ভারতের ডাকবিভাগ। শুক্রবারই বর্ধমান মুখ্য ডাক অফিসে উদ্বোধন করা হল স্পেশাল কভারটি। বর্ধমানের সুস্বাদু সীতাভোগমিহিদানার সুখ্যাতি বিশ্বজোড়া। ২০১৭ সালে জিওগ্রাফিক্যাল ইনডিকেশন বা জিআই ট্যাগও পেয়েছে ‘বর্ধমান মিহিদানা’ এবং ‘বর্ধমান সিতাভোগ’। এবার ডাকবিভাগও স্বীকৃতি দিল এই দুই মিষ্টান্নকে। আর এর ফলেই এতদিন যা মুখে মুখে প্রচারিত ও প্রসারিত হচ্ছিল এবার দেশ দেশান্তরে ছড়িয়ে পড়বে বর্ধমানের এই দুই মিষ্টির খবর।

শুক্রবার বর্ধমানের সীতাভোগ ও বর্ধমানের মিহিদানার ছবি ও তথ্য সম্বলিত বিশেষ খাম বা স্পেশাল কভার চালু করা হল। পোস্ট অফিসগুলিতে ৫ টাকার ডাকটিকিট-সহ ২৫ টাকা মূল্যের এই খাম পাওয়া যাবে। এদিন বর্ধমান মুখ্য ডাকঘরে এক অনুষ্ঠানে সাউথ বেঙ্গল রিজিওনের পোস্টমাস্টার জেনারেল শশী সালিনী কুজুর এই খামের উদ্বোধন করেন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বর্ধমান ডিভিশনের সিনিয়র সুপারিনটেনডেন্ট সৈয়দ ফরাজ হায়দার নবী, বর্ধমান হেড পোস্ট মাস্টার মধুসূদন রায় ও বর্ধমান সিতাভোগ এন্ড মিহিদানা ট্রেডাস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক প্রমোদ কুমার সিং। এদিন পোষ্টমাষ্টার জেনারেল জানিয়েছেন, বর্ধমানের এই দুই মিষ্টিকে ভারতীয় ডাক বিভাগ স্বীকৃতি দেওয়ায় এর গ্রহণযোগ্যতা এবং বিশ্বাসযোগ্যতা আরও বেড়ে গেল। তিনি জানিয়েছেন, ভারতীয় ডাক বিভাগ দেশের কিছু কিছু বিষয় নিয়ে এই ধরণের প্রচারমূলক কাজ করে থাকে। তিনি জানিয়েছেন, এর আগে পূর্ব বর্ধমান জেলার কালনার লালজি মন্দিরের ডাকটিকিট প্রকাশ করেছিল ডাকবিভাগ। এবার বর্ধমানের সীতাভোগ ও মিহিদানার খাম প্রকাশ করা হল। ফলে এর মাধ্যমে একদিকে ডাক বিভাগ ব্যবসা বাড়াতে পারবে। পাশাপাশি, সীতাভোগ ও মিহিদানার জিআই ট্যাগ পাওয়ার বার্তা দেশের কোণায় কোণায় পৌঁছে দিতে পারবে। তিনি জানিয়েছেন, যখন সরকারী পর্যায়ে কোনো বিষয়কে তুলে ধরা হয় এবং তা যদি হয় ডাকবিভাগের মাধ্যমে তাহলে তার গুরুত্ব অনেকটাই বেড়ে যায়।

এদিন বর্ধমান সিতাভোগ এন্ড মিহিদানা ট্রেডাস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক প্রমোদ কুমার সিং জানিয়েছেন, ২০১৭ সালের পর ২০২১ – জিআই ট্যাগ পাওয়ার পর কয়েকবছর কেটে যাবার অবশেষে ডাক বিভাগ যে উদ্যোগ নিয়েছে তাতে তাঁরা আশার আলো দেখছেন। তিনি জানিয়েছেন, এর মাধ্যমে বর্ধমানের ঐতিহ্যবাহী সীতাভোগ মিহিদানার প্রচার আরও বাড়বে। ফলে ব্যবসায়ীক সাফল্যের পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সুযোগও বাড়বে। তিনি জানিয়েছেন, গত প্রায় ২ বছর ধরে করোনা জনিত কারণে সমস্ত ব্যবসারই অত্যন্ত খারাপ অবস্থা। এই অবস্থায় ডাক বিভাগ যেভাবে এগিয়ে এসেছে তার পাশাপাশি কেন্দ্র সরকারের রেল মন্ত্রক এবং রাজ্য সরকারও যদি আরও এগিয়ে আসে প্রচার প্রসারের জন্য তাহলে আরও ভাল হবে। ডাক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সীতাভোগ, মিহিদানার পাশাপাশি ডাকবিভাগের নজর রয়েছে বর্ধমানের গোবিন্দভোগ চালের ওপরও। এই সুগন্ধি গোবিন্দভোগ চালের জন্য ইতিমধ্যেই বর্ধমান জেলা চিহ্নিত হয়েছে। উল্লেখ্য, সীতাভোগ-মিহিদানার উৎপত্তির ইতিহাস নিয়ে বিভিন্ন মত পাওয়া যায়। তারই মধ্যে সব থেকে বেশি যেটা শোনা যায় তা হল, ১৯০৪ সালে বড়লাট জর্জ ন্যাথানিয়েল কার্জন বর্ধমানের জমিদার বিজয়চাঁদ মহতাবকে ‘মহারাজা’ খেতাব দিতে বর্ধমানে আসেন। কার্জনের বর্ধমান আগমনকে স্মরণীয় করে রাখতে বিজয়চাঁদ মহতাব বর্ধমানের মিষ্টি প্রস্তুতকারক ভৈরবচন্দ্র নাগকে দিয়ে এই মিষ্টি তৈরী করান।

Exit mobile version