E Purba Bardhaman

কুমুদ সাহিত্য মেলা কমিটির উদ্যোগে পালিত হল পল্লীকবি কুমুদরঞ্জন মল্লিকের ১৪১ তম জন্মবার্ষিকী

Kumud Sahitya Mela Committee celebrated the 141st birth anniversary of Palli Kabi Kumud Ranjan Mallick

মঙ্গলকোট (পূর্ব বর্ধমান) :- “বাড়ী আমার ভাঙ্গন-ধরা অজয় নদীর বাঁকে, জল যেখানে আদরভরে স্থলকে ঘিরে থাকে”। পল্লীকবির ‘আমার বাড়ী’ কবিতার এই দুটি লাইন বাঙালির আট থেকে আশি অধিকাংশ মানুষই জানেন। পূর্ব বর্ধমান জেলার কোগ্রামে পল্লীকবি কুমুদরঞ্জন মল্লিকের বসতভিটে মধুকর প্রাঙ্গণে টানা ১৫ বছর ধরে কুমুদ সাহিত্য মেলা কমিটি পালন করে আসছে কুমুদ সাহিত্য মেলা। এবারেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া মহকুমার এই কোগ্রামে মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেছিলেন কুমুদরঞ্জন মল্লিক। এখানেই বেড়ে ওঠেন পল্লীকবি। ক্রমেই বসতভিটে হয়ে ওঠে কোগ্রাম। যদিও পরবর্তী সময়ে তিনি কর্মসূত্রে মাথরুন গ্রামেও থাকেন। পল্লীকবির ১৪১ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে রবিবার সকাল ৯ টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত কোগ্রামে কবির আমবাগানে চলে ১৫ তম বর্ষের সাহিত্য-সংস্কৃতি বিষয়ক মেলাটি। এবারের সাহিত্য মেলার উদ্বোধক ছিলেন রবীন্দ্র ভারতী সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায়। প্রধান অতিথি ছিলেন বার কাউন্সিল অফ ওয়েস্ট বেঙ্গলের কার্যনির্বাহী চেয়ারম্যান শ্যামল ঘটক। অনুষ্ঠান সভাপতিত্ব করেন বিধান শিশু উদ্যানের সম্পাদক গৌতম তালুকদার। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়, শীর্ষেন্দু সিংহরায়, বৈদূর্য ঘোষাল, কাজি নজরুল ইসলামের বংশধর সোনালি কাজি, পল্লিকবি কুমুদ রঞ্জন মল্লিকের বংশধর মহাশ্বেতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মঙ্গলকোট থানার আইসি মধুসূদন ঘোষ, পূর্ব বর্ধমান জেলা আদালতের সিনিয়র এপিপি সঞ্জয় ঘোষ, আন্তর্জাতিক হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক প্রকাশ মল্লিক, হুগলি জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের অফিস মাস্টার সাহানা খাতুন, সাহিত্যিক শুভাশীষ মল্লিক, বাংলাদেশের যশোরের লেখক কাজী নূর, চিকিৎসক অভয় সামন্ত, সাংবাদিক অরূপ লাহা, বাচিক শিল্পী দেবিকা মুখার্জি প্রমুখ। এবারের অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে ১৭ জনকে রত্ন সম্মান দেওয়া হয় কুমুদ সাহিত্য মেলা কমিটির তরফে। টলিউডের সঙ্গীত পরিচালক অশোক ভদ্রকে ‘লোচনদাস রত্ন’, সঙ্গীত শিল্পী কুমকুম সেনগুপ্তকে ‘নজরুল ইসলাম রত্ন ‘, হাওড়া জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের অফিস মাস্টার প্রসেনজিৎ ভট্টাচার্যকে ‘নুরুল হোদা রত্ন’, সাংবাদিক সংগঠক শম্ভু সেনকে ‘সমীরণ চৌধুরি রত্ন’, সাংবাদিক পার্থ চৌধুরীকে পুরুষোত্তম সামন্ত স্মৃতি পুরস্কার, স্বাস্থ্য বিজ্ঞানী ডক্টর শ্যামলেন্দু চ্যাটার্জিকে বর্ধমান জেলা রত্ন, কেন্দ্রীয় সরকারের পেটেন্ট পাওয়া বিজ্ঞানী চন্দ্র নারায়ণ বৈরাগ্যকে মেমারি রত্ন, বাংলাদেশের ময়মনসিংহের লেখক পঙ্কজ পালকে হাসান আজিজুল হক রত্ন, সাংবাদিক রফিকউদ্দিন মন্ডলকে দক্ষিণ দামোদর রত্ন, সমাজসেবী সফিকুল ইসলামকে খন্ডঘোষ রত্ন, বর্ধমান সহযোদ্ধার কর্মকর্তা সোমনাথ ভট্টাচার্যকে কাটোয়া মহকুমা রত্ন, আইনজীবী মাসুদ করীমকে মঙ্গলকোট রত্ন, আঞ্চলিক গবেষক নির্ম্মলেন্দু পালকে কালনা মহকুমা রত্ন, সমাজসেবী মুলচাঁদ আগরওয়ালকে বীরভূম রত্ন, সাংবাদিক আমিরুল ইসলামকে সমীর ভট্টাচার্য রত্ন এবং পশুপ্রেমী সমাজসেবী আমির সেখকে মমতা মণ্ডল স্মৃতি পুরস্কার দেওয়া হয়। কুমুদ সাহিত্য মেলা কমিটির পক্ষে মোল্লা জসিমউদ্দিন, শ্যামলাল মকদমপুরী, সুদিন মণ্ডল, ধনঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এবছর তাঁরা কবির বাসভবনে কবির মূর্তি স্থাপন করেছেন। মূর্তিটি তৈরি করেছেন শিল্পী পীযূষ কান্তি বৈরাগ্য। মেলায় পল্লিকবি কুমুদ রঞ্জন মল্লিকের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে কবির লেখা কবিতার ওপরে ছবি আঁকেন কলকাতা থেকে আসা ৫ জন চিত্রশিল্পী। চিত্রশীল্পীরা হলেন দীপঙ্কর সমাদ্দার, সুদীপ্ত ভট্টাচার্য, উজ্জ্বল মুখার্জি, কৌশিক মজুমদার এবং বিশ্বনাথ দাস। কবি কুমুদ রঞ্জন মল্লিকের বংশধর মহাশ্বেতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বিকেলে মোল্লা জসিমউদ্দিনের উপস্থিতিতে চিত্রশিল্পীদের আঁকা ছবিগুলি কবির গৃহে সংরক্ষণ করে রাখেন।

Exit mobile version