E Purba Bardhaman

প্রশাসন চাইছে বন্ধ হোক ওভারলোর্ডিং, তৃণমূল কংগ্রেসের নেতার দাবী অতিরিক্ত পণ্য বোঝাই করতে দিতে হবে

The administration wants to stop the overloading of goods, Trinamool Congress leader's demand should be allowed to overload the goods

গলসী (পূর্ব বর্ধমান) :- একদিকে যখন খোদ সরকারী নির্দেশ মেনে পূর্ব বর্ধমান জেলায় সমস্ত রকম ওভারলোর্ডিং বা অতিরিক্ত মাল বোঝাই নিয়ে জেলা ভূমি দপ্তর এবং পরিবহণ দপ্তর একের পর এক গাড়ি আটক, জরিমানা করে রাজস্ব বৃদ্ধি করছে, সেই সময় খোদ পূর্ব বর্ধমান জেলা আই.এন.টি.টি.ইউ.সি.-র জেলা সভাপতি দাবী করলেন অতিরিক্ত পণ্য বোঝাই করতে না দিলে শ্রমিকরা সমস্যায় পড়ছেন। এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ালো। বুধবার পূর্ব বর্ধমান জেলা আই.এন.টি.টি.ইউ.সি.-র জেলা সভাপতি সৈয়দ মহম্মদ সেলিম গলসীর পারাজ এলাকায় একটি সেতু পরিদর্শন করতে যান। তাঁর সঙ্গে ছিলেন আই.এন.টি.টি.ইউ.সি.-র ব্লক সভাপতি বাপ্পাদিত্য রায়, পারাজ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সাজাহান সেখ প্রমুখরাও। এদিন মহম্মদ সেলিম জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরেই পারাজ এলাকায় ডিভিসির সেচখালের পুরনো সেতুটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ায় পরিবর্তে পাশেই একটি নতুন সেতু তৈরীর কাজ শুরু হয়। কিন্তু সেই সেতুর কাজ অত্যন্ত ধীরগতিতে হওয়ায় দুই পাড়ের প্রায় ১০-১২টি গ্রামের মানুষ সমস্যায় পড়েন। সেজন্য একটি অস্থায়ী সেতু নির্মিত হয়। আগে ওই অস্থায়ী সেতু দিয়ে সর্বোচ্চ ৩টন মাল পরিবহণের সরকারী নির্দেশ থাকলেও পরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তা বাড়িয়ে করা হয় ১২টন। সেলিম সাহেব জানিয়েছেন, এই এলাকায় রয়েছে ৭-৮টি রাইস মিল। এছাড়াও রয়েছে অসংখ্য বালিখাদান। তিনি জানিয়েছেন, এই সেতু দিয়ে ১২টনের বেশি মাল নিয়ে যেতে না দেওয়ায় এই বালিখাদান এবং রাইস মিলের প্রায় ৫-৭ হাজার শ্রমিক পরিবার সংকটে পড়েছে। তিনি জানিয়েছেন, ওভারলোর্ডিং বা অতিরিক্ত মাল নিয়ে যেতে না পারলে এই শ্রমিকরা আর্থিকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। তিনি জানিয়েছেন, এব্যাপারে তাঁকে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার জন্য রাজ্য নেতৃত্ব নির্দেশ দেন। গোটা বিষয়টি নিয়ে তিনি রাজ্য নেতৃত্বকে রিপোর্ট দেবেন। একইসঙ্গে তিনি আবেদন জানাবেন ব্রীজের কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য। এদিকে, তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা আই.এন.টি.টি.ইউ.সি.-র সভাপতির ওভারলোর্ডিং বা অতিরিক্ত পণ্য বোঝাইয়ের দাবী করার ঘটনায় রাজনৈতিক তরজা চরমে উঠেছে। জেলা কংগ্রেসের কার্য্যকরী সভাপতি বুলবুল আহমেদ জানিয়েছেন, শাসকদলের মদতেই যে ওভারলোর্ডিং বা অতিরিক্ত পণ্য পরিবহণ চলছে এই ঘটনা তারই প্রমাণ। এর থেকে লজ্জার আর কিছু নেই। তিনি জানিয়েছেন, প্রশাসন অতিরিক্ত পণ্য বোঝাই বন্ধ করতে চাইছে আর শাসকদলের নেতাই অতিরিক্ত পণ্য বোঝাইয়ের মদত দিচ্ছেন। এর কারণ আখেরে লাভ হচ্ছে শাসকদলের নেতাদেরই। অন্যদিকে, বিজেপির জেলা সম্পাদক সুধীররঞ্জন সাউ জানিয়েছেন, রাজ্যের শাসকদলের চেহারা এখন ক্রমশই স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে বাংলার মানুষের কাছে। দুর্নীতির দায়ে জেল খাটছেন নেতা থেকে আমলারা। আর দলের নেতারা অতিরিক্ত পণ্য বোঝাইয়ের হয়ে সাফাই দিচ্ছেন। তিনি দাবী করেছেন, ওভারলোর্ডিং বা অতিরিক্ত পণ্য বোঝাই হলে শ্রমিকদের লাভ যতটা তার থেকে অনেক বেশি লাভ তৃণমূলের নেতা, পুলিশের। গোটা রাজ্য জুড়েই লুটপাট চলছে আই.এন.টি.টি.ইউ.সি.-র জেলা সভাপতির বক্তব্যেই স্পষ্ট।

Exit mobile version