Breaking News

পুলিশের ‘ট্রিগার হ্যাপি’ তকমা ঘোচাতে জেলায় আসা জল কামান পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে।

Water Cannon at Burdwan Police Line. বর্ধমান, ২১ জানুয়ারিঃ- পুলিশের ‘ট্রিগার হ্যাপি’ তকমা ঘোচাতে জল কামান, রবার বুলেট ব্যবহারের উপর জোর দিতে চাইছে রাজ্য সরকার। সেইমতো রাজ্যের প্রায় সবকটি জেলাতেই জল কামান এবং রবার বুলেট দিয়েছে রাজ্য সরকার। বর্ধমান জেলা পুলিশও একটি জল কামান পেয়েছে। কিন্তু, যান্ত্রিক ত্রুটির কারনে সেটি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। জেলার গ্রামীন এলাকায় জল কামান আদৌ ব্যবহার সম্ভব কীনা তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে পুলিশের একাংশের মধ্যেই। তাঁদের মতে, এটা অপচয় ছাড়া কিছুই নয়। যদিও পুলিশ কর্তারা জল কামানের ব্যবহারের পক্ষেই সওয়াল করেছেন। পুলিশ কর্তাদের মতে, বড় ধরনের গণ্ডগোল থামাতে জল কামান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে। শুধু গণ্ডগোল থামাতেই নয়, দোষীদের চিহ্নিত করতেও খুবই উপযোগী জল কামান। তাঁদের মতে, গণ্ডগোল চলাকালীন পরিস্থিতি আয়ত্তের বাইরে চলে গেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রবার বুলেটের ব্যবহারও জরুরি। রবার বুলেটে প্রাণহানির সম্ভাবনা প্রায় থাকেনা বললেই চলে। এতে পুলিশের ‘ট্রিগার হ্যাপি’ তকমা যেমন মুছবে, তেমনই গণ্ডগোল থামাতে গিয়ে প্রাণহানির ঘটনাও কমবে।

বাম আমলে সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম, রায়না সহ বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ কারীদের দমাতে গুলি চালাতে হয় পুলিশকে। তাতে বেশ কয়েক জনের মৃত্যু হয়। এনিয়ে বিভিন্ন মহলে সমালোচনার ঝড় ওঠে। গুলি চালনা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলাও হয়। সেই সময় বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরকার পরিবর্তনের পর মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসে পুলিশের অযথা গুলি চালানোয় রাশ টানতে উদ্যোগী হন মমতা। যদিও এই সরকারের আমলেও গুলি চালনার ঘটনা ঘটে। কয়েকমাস আগে বীরভূমের লোবাগ্রামে এবং নদীয়ার তেহট্টে বিক্ষোভকারীদের নিয়ন্ত্রণে আনতে গুলি চালায় পুলিশ। যদিও দু’জায়গাতেই গুলি চালানোর কথা অস্বীকার করা হয় সরকারি ভাষ্যে। যদিও এর পরই বিক্ষোভ দমনে জল কামান এবং রবার বুলেট ব্যবহারের নির্দেশিকা জারি হয়। সেইমতো জেলাগুলিতে জল কামান এবং রবার বুলেট পাঠানো হয়।

গত বছরের অক্টোবর মাসের শেষ দিকে একটি জল কামান আসে বর্ধমানে। সেটি পুলিশ লাইনে রয়েছে। পুলিশ সূত্রেই জানা গিয়েছে, কামানটির মূল্য কয়েক লক্ষ টাকা। কামানটি আসারWater Cannon at Burdwan Police Line. পর সেটি পরীক্ষামূলক ভাবে দু’একবার চালানো হয়েছে। পরে সেটিতে যান্ত্রিক ত্রুটি ধরা পড়ে। ফলে, কামানটি বর্তমানে পুলিশ লাইনে পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে। কী আছে বিশালাকার জলকামানটিতে? ১০ হাজার লিটার জল ধরার মতো দু’টি রিজার্ভার আছে জল কামানটিতে। কামানটির সামনে ও পিছনে দু’টি করে চারটি পাইপ আছে। দমকলের মতো পাম্প চালু করে রিজার্ভারে জল ভরা থাকবে। জলে রং মেশানো থাকবে। বিক্ষোভ থামাতে কামানের ব্যবহার শুরু হলে পাইপ থেকে প্রচন্ড বেগে জল বের হবে। জলে মেশানো রং সহজে উঠবেনা। ফলে, রং দেখে বিক্ষোভকারীদের পরবর্তীকালে শনাক্ত করা সহজ হবে। কামানটি চালাতে বর্ধমানে একটি বিশেষ দল গড়া হয়েছে। দলে একজন এ এস আই, চারজন কনস্টেবল এবং দু’জন চালক রয়েছেন। মেশিনটি চালাতে এ এস আইকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। কামানটি বিকল হওয়ার পর সেটির ত্রুটিই ধরতে পারেননি সেই প্রশিক্ষিত এ এস আই। জেলার গ্রামীণ এলাকার রাস্তা ঘাট এমনিতেই বেহাল। তাই, গ্রামীণ এলাকায় গণ্ডগোল থামাতে মেশিনটি আদৌ নিয়ে যাওয়া যাবে কীনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে পুলিশের একাংশের মধ্যেই। তাঁদের মতে, পাকা এবং চওড়া রাস্তা ছাড়া জল কামানের ব্যবহার আদৌ সম্ভব নয়। যদিও পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মীর্জা বলেন, গণ্ডগোল থামাতে জলকামান এবং রবার বুলেটের ব্যবহার অত্যন্ত জরুরি। যে কোনও রাস্তাতেই কামানটি নিয়ে যাওয়া যাবে। যান্ত্রিক সমস্যা থাকলে তা সারিয়ে নেওয়া হবে।

About admin

Check Also

The fifth short film festival was organized in Burdwan

বর্ধমানে আয়োজিত হলো পঞ্চম শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বর্ধমান চলচ্চিত্র চর্চা কেন্দ্রের উদ্যোগে আয়োজিত হলো শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। রবিবার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *