বর্ধমান, ১৯ ফেব্রুয়ারিঃ- আন্তর্জাতিক ভাষা দিবসের প্রাক্কালে জেলার নামের বানান পরিবর্তনের দাবি উঠল। দাবি তুললেন পুরসভার চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল অপূর্ব দাস। তাঁর এই দাবিকে কিয়দংশে সমর্থন জানালেও বানান পরিবর্তনের সমস্যা আছে বলে মতপ্রকাশ করেছেন রাজ্যের মন্ত্রী ড. রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায় এবং বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. স্মৃতি কুমার সরকার। তাঁদের মতে, কিছুক্ষেত্রে বানানের পরিবর্তন ঘটানোই যেতে পারে। কিন্তু, সব ক্ষেত্রে নয়। বানান বদলের দাবিকে সমর্থন জানালেও বর্তমান সময়ে এনিয়ে বেশিদূর এগানো সম্ভব নয় বলে মত প্রকাশ করেছেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি।
গত বছর ভাষা দিবসের আগেই জেলার নামের বাংলা বানান ‘বর্দ্ধমানের’ পরিবর্তে ‘বর্ধমান’ এবং ইংরাজী বানান BURDWAN -এর পরিবর্তে BARDHAMAN করার দাবি জানিয়েছিলেন অপূর্ব বাবু। পুরসভার চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়ে এই দাবি জানিয়েছিলেন তিনি। চিঠিতে তিনি জানান ‘ক্যালকাটা’ -র বদলে এখন ‘কলকাতা’ লেখা হয়। ইংরাজীতে CALCUTTA বর্তমান KOLKATA হয়েছে। তেমনই BURDWAN -এর পরিবর্তে BARDHAMAN হওয়া উচিত। তাঁর মতে ব্রিটিশরা বর্ধমানের পরিবর্তে বার্ডোয়ান উচ্চারণ করতেন। সেখান থেকেই BURDWAN লেখা শুরু। এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদেরও পরামর্শ নেওয়ার দাবি জানান তিনি। জেলা পরিষদের নথিতে এবং কাগজপত্রে অনেকদিনই বর্ধমান এবং BARDHAMAN লেখা চালু হয়েছে। স্টেশনেও অনেক আগেই BURDWAN -এর পরিবর্তে BARDHAMAN লেখা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের ওয়েবসাইটেও জেলার নামের বানান BARDHAMAN লেখা রয়েছে। কিন্তু, পুরসভা, বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনও BURDWAN লেখার চলই আছে। উপাচার্য বলেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে বানানের পরিবর্তন করা যেতেই পারে। কিন্তু, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে সেই পরিবর্তন সম্ভব নয়। গেজেটে যে বানান আছে তাই লিখতে হবে। তাছাড়া আর্ন্তজাতিক স্তরে বিশ্ব বিদ্যালয়ের পরিচিতি দ্য ইউনিভার্সিটি অব বার্ডোয়ান। সেক্ষেত্রে বানানের পরিবর্তন হলে সমস্যা দেখা দেবে। ঠিক যে কারনে এখন দ্য ইউনিভার্সিটি অব ক্যালক্যাটা লেখা হয়। তবে, স্থানীয় ভাবে বানানের পরিবর্তন ঘটানো যেতেই পারে। মন্ত্রী রবিরঞ্জন বাবু বলেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে বানান পরিবর্তন সম্ভব। কিন্তু সব ক্ষেত্রে নয়। যে সব নামের বানান আইনগত ভাবে নথিভূত সেই সব বানানের পরিবর্তন করলে আইনি সমস্যা আছে। জেলা পরিষদের সভাধিপতি উদয়শংকর সরকার বলেন, এই পরিবর্তন আমরা অনেক আগেই করেছি। ভাবনা চিন্তা করেই এই বানানের এই পরিবর্তন করা হয়েছে। তবে, এই সময়ে এধরনের পরিবর্তন আদৌ সম্ভব নয়। রাজ্যের নাম বদল নিয়ে বিভিন্ন প্রস্তাব সরকারের কাছে জমা পড়েছিল। কিন্তু, সে ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্তই নেওয়া হল না। বিষয়টি ঠান্ডা ঘরে পাঠিয়ে দেওয়া হল। পুরসভার চেয়ারম্যান আইনূল হক বলেন, পুরসভায় বাংলায় কাজকর্ম অনেক আগেই চালু করেছি আমরা। কিন্তু, জেলার নামের বানানের পরিবর্তনের ক্ষেত্রে আইনি সমস্যা আছে। তাই, এটা সম্ভব নয়।