Breaking News

সিডি মেশিন এবং সাউন্ড বক্সের লোভে যুবককে খুনের দায়ে যাবজ্জীবন সাজা হল তিনজনের

কালনা, ২৭ ফেব্রুয়ারিঃ- সিডি মেশিন এবং সাউন্ড বক্সের লোভে যুবককে খুনের দায়ে যাবজ্জীবন সাজা হল তিনজনের। পাশাপাশি সাজাপ্রাপ্তদের প্রত্যেককে ৪ হাজার টাকা আর্থিক জরিমানা করেছে আদালত। জরিমানার টাকা না দিলে তাদের আরও ৩ মাস জেলে থাকতে হবে। বুধবার কালনার ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক অখিলেশ পাণ্ডে এই সাজা ঘোষণা করেছেন। সাজাপ্রাপ্তদের নাম গোপেশ্বর মাঝি, তাপস মাঝি ও নিমাই মন্ডল। প্রথম দু’জনের সম্পর্ক বাবা ও ছেলের। কালনা থানার ডাঙা পাড়ায় তাদের বাড়ি। কালনা থানারই শ্যামগঞ্জ এলাকায় নিমাইয়ের বাড়ি।

     কেসের সরকারি আইনজীবী তাপস কুমার গণ বলেন, কালনার শ্যামগঞ্জ এলাকার যুবক সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়ের (২১) ক্যাসেট, সিডি বিক্রির ব্যাবসা ছিল। তাঁর সিডি মেশিন এবং সাউন্ড বক্স ছিল। কিন্তু, সিডি-ক্যাসেট বিক্রির ব্যাবসা মোটেই পছন্দ ছিলনা সঞ্জয়ের পরিবারের লোকজনের। পরিবারের লোকজন তাঁকে ব্যাবসা ছাড়ার পরামর্শ দিতেন। এরই মাঝে একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরির সুযোগ পান সঞ্জয়। তাই ক্যাসেট-সিডির ব্যাবসা ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। সিডি, ক্যাসেট, সিডি মেশিন এবং সাউন্ড বক্স বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। তাঁর এই সিদ্ধান্তের কথা পরিচিতদের জানান তিনি। বিষয়টি জানতে পেরে তাপস তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে। সে সিডি, ক্যাসেট, সিডি মেশিন এবং সাউন্ড বক্স কিনে নেবে বলে সঞ্জয়কে জানায়। ১০ হাজার টাকায় রফা হয় দু’জনের। সেইমতো ২০০৮ সালের ১৪ নভেম্বর সন্ধ্যায় জিনিসপত্রগুলি নিতে আসে তাপস। প্রতিবেশি কাজল বিশ্বাসের ভ্যানরিকশয় চাপিয়ে মালপত্র তাপসের বাড়িতে পৌঁছে দেয় সঞ্জয়। বাবা টাকা যোগাড় করতে গিয়েছে বলে তার বাড়িতে সঞ্জয়কে অপেক্ষা করতে বলে তাপস। মালপত্র পৌঁছে দিয়েই ফিরে যায় কাজল।

     অনেক রাতেও বাড়ি না ফেরায় সঞ্জয়ের পরিবারের লোকজন তাঁকে খুঁজতে বের হন। কাজলকে সঙ্গে নিয়ে তাপসের বাড়িতে যান সঞ্জয়ের পরিবারের লোকজন। সেখানে সঞ্জয়ের হদিশ না মিললেও তাঁর মানিব্যাগটি পড়ে থাকতে দেখেন পরিবারের লোকজন। এতে সন্দেহ বাড়ে। তাপস এবং তার বাব গোপেশ্বর প্রথমে মুখই খুলতে চায়নি। পরে চাপের মুখে ভেঙে পড়ে সঞ্জয়কে খুনের কথা কবুল করে তারা। সঞ্জয়কে খুনের পর প্রমাণ লোপাটের জন্য দেহটি ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে গঙ্গায় ভাসিয়ে দিয়েছে বলে বাবা ও ছেলে স্বীকার করে। সঞ্জয়ের সাইকেলটিও তারা জলে ফেলে দিয়েছে বলে কবুল করে। নিখোঁজ হওয়ার দু’দিন পর বেশ কিছুটা দূর থেকে সঞ্জয়ের মৃত দেহ উদ্ধার হয়। মৃতের বাবা গুরুচরণ মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে কালনা থানার পুলিশ গোপেশ্বর ও তাপসকে গ্রেপ্তার করে। পরে ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাস করে খুনের ঘটনায় নিমাইয়ের জড়িত থাকার কথা জানতে পারে পুলিশ। তার ভিত্তিতে পুলিশ তাকেও গ্রেপ্তার করে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই আদালতে চার্জিশিট পেশ করে পুলিশ। গ্রেপ্তার হওয়ার পর বাবা ও ছেলে জামিন পায়নি। যদিও হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছিল নিমাই। মাত্র ১০ হাজার টাকার মালপত্রের লোভে একটা তরতাজা যুবককে খুন করা হল। এই শাস্তি প্রাপ্য ছিল তিনজনের।

About admin

Check Also

The fifth short film festival was organized in Burdwan

বর্ধমানে আয়োজিত হলো পঞ্চম শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বর্ধমান চলচ্চিত্র চর্চা কেন্দ্রের উদ্যোগে আয়োজিত হলো শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। রবিবার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *