বর্ধমান, ২ ফেব্রুয়ারিঃ- বর্ধমানের অরবিন্দ স্টেডিয়ামের মাঠে জলসা আয়োজনের অনুমতি দিয়ে আবারও বিতর্কে জড়াল জেলা ভলিবল ও বাস্কেটবল সংস্থা। খেলা এবং প্রশিক্ষণ শিবির বন্ধ রেখে জলসার অনুমতি দেওয়ায় সংস্থার কর্মকর্তাদের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ স্থানীয় ক্লাব ও শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা। মাঠের বারোটা বাজিয়ে জলসা আয়োজনের অনুমতি দেওয়ায় সংস্থার কর্মকর্তাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ভলিবল এবং বাস্কেট বল প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া বেশ কয়েকটি ক্লাব। জলসা আয়োজনের অনুমতি নিয়ে সংস্থার অভ্যন্তরীন বিবাদও প্রকাশ্যে এসেছে। সংস্থার কর্মসমিতির বেশিরভাগ সদস্যকে অন্ধকারে রেখে গুটি কয়েক কর্মকর্তা জলসা আয়োজনের অনুমতি দিয়েছেন বলে কয়েকজন সদস্য অভিযোগ করেছেন। মাঠে খেলা এবং প্রশিক্ষণ শিবির বন্ধ রাখার কথা স্বীকার করেছেন সংস্থার সম্পাদক বনবিহারী যশ। তিনি বলেন, মাঝে মধ্যে সরকারি সাহায্য মেলে ঠিকই, তবে তা যথেষ্ট নয়। সংস্থার খরচ চালাতে তাই জলসা, বিয়ে সহ নানা অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুমতি দিতে হয়। তাতে মাঠের কিছু ক্ষতি হয় ঠিকই। ক্ষতির পরিমাণ বেশি হলে কশান মানির টাকা কেটে নেওয়া হয়।
কাল, রবিবার অরবিন্দ স্টেডিয়ামের মাঠে জলসার আয়োজন করছে একটি বেসরকারি সংস্থা। প্রথমে জলসা আয়োজনের অনুমতি দেয়নি পুলিশ। নিয়ম ভেঙে জলসা আয়োজনের অভিযোগে শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে জলসার হোর্ডিং খুলে ফেলে পুলিশ। পরে রাজ্যের এক মন্ত্রী এবং এক প্রভাবশালী আমলার হস্তক্ষেপে জলসা আয়োজনের অনুমতি দিতে পুলিশ বাধ্য হয় বলে আয়োজক সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে। ভলিবল ও বাস্কেট বল সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, স্টেডিয়ামের মাঠে জলসা আয়োজনের জন্য সংস্থাটি ১ লক্ষ টাকা দিয়েছে। কশান মানি বাবদ আরও ১ লক্ষ টাকা সংস্থায় জমা রাখার কথা আয়োজকদের। স্টেডিয়ামের দুটি গ্যালারীতে ২ হাজার আসন রয়েছে। মাঠে আরও হাজার খানেক লোক বসতে পারে। প্রশাসন সূত্রে কত টিকিট বিক্রি করা হয়েছে তা কেউই জানাতে পারেননি। যদিও জলসার জন্য প্রায় ১৫ হাজার টিকিট বিক্রি করা হয়েছে বলে আয়োজক সংস্থার একটি সূত্রে জানা গিয়েছে। ৩ হাজার দর্শক ধরার মতো স্টেডিয়ামে এত সংখ্যক লোকের কি করে সংকুলান হবে তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। ঘিঞ্জি এলাকায় আইনশৃঙ্খলার অবনতি হলে হিমশিম খেতে হবে প্রশাসনকে। গণ্ডগোল হলে তার দায় বর্তাবে পুলিশ-প্রশাসনের উপরেই।
শনিবার স্টেডিয়াম ঘুরে দেখা গেল, ভলিবল কোর্টের মাঝেই অনুষ্ঠানের মঞ্চ বানানো হয়েছে। মাঠের চারপাশে বহু গর্ত খোঁড়া হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় বড় বড় গর্ত করে বাঁশ পোঁতা হয়েছে। ভলিবল এবং বাস্কেট বল কোর্টেই দর্শকদের বসার জায়গা নির্দিষ্ট করা হয়েছে। দর্শকদের পায়ের চাপে মাঠের দশা যে বেহাল হবে তা বলাই বাহুল্য। টাকার জন্য জলসা এবং বিয়ে উপলক্ষে অরবিন্দ স্টেডিয়ামকে ভাড়া দেওয়ার ঘটনা এই প্রথম নয়। এর আগেও বহুবার খেলা ছাড়া অন্য কাজে স্টেডিয়াম ভাড়া দেওয়া হয়েছে। যদিও সেই সময়ও সমালোচনার ঝড় উঠেছিল। সেই সময়কার সমালোচকদের অনেকেই ঘটনা চক্রে এখন সংস্থার কর্মকর্তা। সরকার বদল হয়, কর্মকর্তাদের চেয়ার বসা ব্যক্তিদের বদল হয় কিন্তু শুধু বদল হয়না কর্মকর্তাদের মানসিকতা। বর্ধমানের পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মীর্জা বলেন, সবকিছু ঠিকঠাক থাকায় জলসার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় যথেষ্ট পুলিশ থাকবে।