Breaking News

নারকোটিক কন্ট্রোল ব্যুরো -র অফিসার সেজে তোলা আদায় এবং প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তার ৩

বর্ধমান ও রায়না, ১৬ জুনঃ- নারকোটিক কন্ট্রোল ব্যুরো (এন সি বি )-র অফিসার সেজে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় তোলা আদায় এবং প্রতারণার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে রায়না থানার পুলিশ। শনিবার রাতে বর্ধমান থানার শক্তিগড়  এলাকায় জাতীয় সড়কের পাশে একটি ল্যাংচার দোকানের সামনে থেকে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে। ধৃতদের নাম বিনোদ সিং, মান্না মন্ডল এবং সালাউদ্দিন খান। কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় ধৃত ৩ জনের বাড়ি। প্রথম জনের বাড়ি টালিগঞ্জ ট্রাম ডিপো এলাকায়। দ্বিতীয় জনের বাড়ি রিজেন্ট পার্ক থানা এলাকায়। অপর জনের বাড়ি আলিপুর থানা এলাকায়। ধৃতদের ব্যবহৃত একটি গাড়িও পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছে। ধৃতরা এন সি বি –র সোর্স বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। রবিবার ধৃতদের বর্ধমানের সিজেএম আদালতে পেশ করা হয়। গ্যাঙয়ের বাকিদের হদিশ পেতে এবং তোলাবাজি ও প্রতারণার বিষয়ে বিশদে জানতে ধৃতদের ১০ দিন পুলিশি হেপাজতে নেওয়ার আবেদন জানান তদন্তকারী অফিসার। ভারপ্রাপ্ত সিজেএম মধুসূদন পাল ধৃতদের ৪ দিন পুলিশি হেপাজতে রাখার নির্দেশ দেন।

     পুলিশসূত্রে জানা গিয়েছে, এন সি বি –র অফিসার পরিচয় দিয়ে একটি গ্যাং রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি এবং তোলাবাজি চালাচ্ছে বলে কিছুদিন ধরেই পুলিশের কাছে খবর আসছিল। এনিয়ে বর্ধমান জেলা পুলিশ এন সি বি-র ইন্টেলিজেন্স শাখার সঙ্গে যোগাযোগ করে। সেখান থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে একটি প্রতারণা চক্রের এধরনের কাজকর্মে লিপ্ত থাকার ব্যাপারে নিশ্চিত হয় পুলিশ। এর পরই গ্যাংটিকে ধরতে সক্রিয় হয় পুলিশ। ভুয়ো এন সি বি –র অফিসারদের ধরতে এক প্রতারিতের সাহায্য নেয় পুলিশ। তিনিই গ্যাংটির কাজকর্মের বিষয়ে বিশদ তথ্য দেন পুলিশকে। এরপর গ্যাংটিকে ধরতে পরিকল্পনা করে পুলিশ। সেইমতো গাঁজা পাচারে যুক্ত একটি লরিতে তল্লাশি চালানোর টোপ দিয়ে সেই প্রতারিত গ্যাংটিকে ফোন করেন। সেই টোপ গিলে ফেলে ভুয়ো এন সি বি-র অফিসাররা। শনিবার সন্ধ্যায় শক্তিগড় এলাকায় গাড়িতে চেপে আসে ৪ জন। আগেভাগেই সেখানে পুলিশ অপেক্ষা করছিল।গাড়ি থেকে নামার পর চারজনকে ঘিরে ফেলে পুলিশ। তাদেরকে ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। জেরায় নিজেদের এন সি বি –র অফিসার বলে পরিচয় দেয় চারজন। পুলিশকে রীতিমতো হুমকি দেয় তারা। তাদের মধ্যে কেউ কেউ এন সি বি –র পরিচয়পত্রও দেখায়। তাতে হকচকিয়ে যায় পুলিশ। শেষমেশ  জেলা পুলিশের এক কর্তা এন সি বি-র উপর মহলে ফোনে যোগাযোগ করেন। সেখান থেকে সবুজ সংকেত মেলার পর পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। এক জনকে ছেড়ে দেয়। কিন্তু, এক জনকে কেন ছেড়ে দেওয়া হল এনিয়ে পুলিশের কেউই মুখ খুলতে চাননি। প্রতারকদের সঙ্গে এন সি বি-র কেউ জড়িত কীনা তা নিয়েও নানা মহলে প্রশ্ন উঠেছে।

     পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, বর্ধমান শহরের ছোটনীলপুরের বাসিন্দা সৌরভ কুন্ডুর কাছ থেকে বেশ কয়েকবার গাড়ি ভাড়া নেয় প্রতারকরা। তাঁর গাড়ি নিয়ে বর্ধমান, বীরভূম ও মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালায় প্রতারকরা। তল্লাশি চালিয়ে প্রচুর পরিমানে গাঁজা উদ্ধার করে। কয়েকজনকে ধরেও আনে। যদিও পরে মোটা টাকা নিয়ে ধৃতদের ছেড়ে দেয়। উদ্ধার হওয়া গাঁজা তারা বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করে দেয়। যদিও গাড়ি ভাড়ার টাকা তারা মেটায়নি। টাকা চাইলে সৌরভকে গাঁজা কেসে ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয় প্রতারকরা। টাকা না পেয়ে এবং প্রতারকদের কাজকর্মের বিষয়ে সৌরভ রায়না থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। বর্ধমানের এস ডি পি ও (সদর) অম্লান কুসুম ঘোষ বলেন, গ্যাংটির কাজকর্ম সম্পর্কে জানতে এবং বাকি জড়িতদের ধরতে ধৃতদের পুলিশি হেপাজতে নেওয়া হয়েছে।

About admin

Check Also

Doctor Birupaksha Biswas was transferred to Kakdwip a year ago, did not go

এক বছর আগেই কাকদ্বীপে বদলি করা হয় চিকিৎসক বিরূপাক্ষকে, যাননি; ক্যান্টিন মালিক আইনের পথে

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বিতর্কিত চিকিৎসক বিরূপাক্ষ বিশ্বাসকে এক বছর আগেই স্বাস্থ্য দপ্তর বদলির নির্দেশ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *