Breaking News

ছুরির কোপে স্ত্রীকে খুন করার পর, বিষ খেয়ে হাসপাতালে ভরতি স্কুল শিক্ষক।

Madhabdihi Thana elakay School Shikshak nijer Bou-ke gবর্ধমান ও মেমারি, ২০ মার্চঃ- এলোপাথারি ছুরির কোপ বসিয়ে স্ত্রীকে খুন করল এক স্কুল শিক্ষক। পরে বিষ খান তিনি। মেমারি গ্রামিন হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছে। ঘটনার বিষয়ে মাধবডিহি থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেছে মৃতার পরিবার। তার ভিত্তিতে বধূনির্যাতন এবং পরিকল্পিত খুনের ধারায় কেস রুজু করেছে থানা। মৃতার স্বামী ছাড়া বাকি অভিযুক্তরা পলাতক। তাদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। মৃতার নাম সুপ্রভা যশ (২২)। মাধবডিহি থানার আড়ুই গ্রামের যশ পাড়ার তাঁর শ্বশুরবাড়ি। বর্ধমান শহরের জগৎবেড় এলাকায় তাঁর বাপের বাড়ি। তিনি বর্ধমানের মহিলা কলেজের কলা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। গৃহবধূকে খুনের ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। বর্ধমানের পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মীর্জা বলেন, মৃতার পরিবারের তরফে মাধবডিহি থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। মৃতার স্বামী চিকিৎসাধীন। একটু সুস্থ হলেই তাঁকে ধরা হবে। বাকি অভিযুক্তদেরও ধরার চেষ্টা চলছে।

     পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ১৬ মাস আগে সুপ্রভার সঙ্গে মাধবডিহির ছোট বৈনান হাইস্কুলের পদার্থ বিজ্ঞানের শিক্ষক প্রবীর যশের বিয়ে হয়েছিল। তাঁদের একটি ৬ মাসের ছেলে আছে। বিয়েতে পাত্র পক্ষের চাহিদা মতো পণ সুপ্রভার বাপের বাড়ি থেকে দেওয়া হয়। বিয়ের পর তাঁর পড়াশুনা চালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি শ্বশুর বাড়ির লোকজন। এনিয়ে বিয়ের কয়েক মাস পর থেকেই শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে তাঁর মনোমালিন্য শুরু। তার উপর তাঁর শালোয়ার-কামিজ পড়ার ব্যাপারেও আপত্তি জানায় শাশুড়ি। পড়া বন্ধ করা এবং শালোয়ার-কামিজ না পরার ফতোয়া না মানায় শ্বশুর বাড়িতে তাঁর উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু হয়। সেখানে তাঁকে মাঝে মধ্যেই মারধর পর্যন্ত করা হত। তাঁর উপর হওয়া নির্যাতনের বিষয়ে তিনি বাপের বাড়িতে জানানোয় দুটি পরিবারের মধ্যে আলোচনায় বসাও হয়। কিন্তু, তাতেও অত্যাচার কমেনি। এমনকি স্থানীয় সালিশির পরও সুপ্রভার উপর  অত্যাচার বন্ধ হয়নি।

     কয়েকদিন ধরেই তাঁর উপর অত্যাচার সীমা ছাড়ায়। ক্ষোভে, দুঃখে দিন তিনেক খাওয়াও বন্ধ করে দেন তিনি। বুধবার সকালে বাবার সঙ্গে ফোনে কথা বলার পর তিনি চা এবং মুড়ি খেতে যান। সেই সময়ই শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাঁর হাত থেকে মুড়ির বাটি ছিনিয়ে নিয়ে ফেলে দেয়। এর পরই স্বামী এবং শ্বাশুড়ি তাঁকে মারধর করতে শুরু করে। হাতের কাছে থাকা ফল কাটার ছুরি নিয়ে স্ত্রীর শরীরে এলোপাথারি কোপ বসিয়ে দেয় প্রবীর। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন সুপ্রভা। সেই অবস্থাতেই মা পূর্ণিমা এবং ছেলেকে নিয়ে চম্পট দেয় প্রবীর। পরে জামালপুর থানার মশাগ্রামে তাকে বিষক্রিয়ায় অসুস্থ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরাই তাকে মেমারি হাসপাতালে ভরতি করে দেয়। মৃতার শ্বশুর জয়দেব যশ অবশ্য বাড়িতেই রয়েছে। অসুস্থতার কারণে সে পালাতে পারেনি। খবর পেয়ে মাধবডিহি থানার পুলিশ দেহটি তুলে ময়না তদন্তে পাঠায়।

About admin

Check Also

The fifth short film festival was organized in Burdwan

বর্ধমানে আয়োজিত হলো পঞ্চম শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বর্ধমান চলচ্চিত্র চর্চা কেন্দ্রের উদ্যোগে আয়োজিত হলো শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। রবিবার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *