Breaking News

জেলাশাসকের মানবিক মুখঃ ৭০ বছরের বৃদ্ধ ফিরে পেলেন বেঁচে থাকার রসদ

DM-er uddoge Kalna Hospital-a bhorti thaka asohay briddho-r sahaকালনা, ১৮ মার্চঃ- এবার অসহায় বৃদ্ধের সহায়তায় এগিয়ে এলেন বর্ধমানের জেলাশাসক ওঙ্কারসিং মীনা। রবিবার কালনায় খাদ্যভবনের একটি অনুষ্ঠান সেরে ফেরার পথে আচমকাই কালনা মহকুমা হাসপাতালের পরিকাঠামো এবং ব্যবস্থাপনা খতিয়ে দেখতে গিয়ে জেলাশাসকের নজরে পড়লেন ৭০ বছরের এক বৃদ্ধ। আর তারপরেই অসুস্থ ওই বৃদ্ধের বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে তাঁর সুরাহার ব্যবস্থা করলেন জেলাশাসক। সোমবার জেলাশাসক জানিয়েছেন, রবিবার কালনা মহকুমা হাসপাতাল পরিদর্শন করতে যান। সেখানে হাসপাতালের কয়েকটি বিষয়ে তাঁর নজর কাড়ে। জেলাশাসক জানিয়েছেন,  যে ওষুধগুলি হাসপাতালে থাকা উচিত তা না থাকায় তিনি এদিনই জেলার মুখ্য স্বাস্থ্যাধিকারিককে দিয়ে কালনা মহকুমা হাসপাতালে ওই প্রয়োজনীয় ওষুধগুলি পাঠিয়ে দেবার ব্যবস্থা করেছেন। এদিকে রবিবার হাসপাতাল পরিদর্শন করার সময় হাসপাতালের সার্জিক্যাল বিভাগে ৭০ বছরের এক বৃদ্ধকে দেখে তাঁর সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। জেলাশাসক এদিন জানিয়েছেন, ওই বৃদ্ধের নাম পূর্ণচন্দ্র পাল। তাঁর বাড়ি কালনার পূর্বসাতগেছিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বিক্রমনগর কলোনীতে। নিঃসন্তান পূর্ণচন্দ্র বাবুকে দেখার কেউই নেই। ইতিমধ্যেই তাঁর ডান পায়ে একটি ক্ষত হওয়ায় তারই চিকিৎসা করতে আসেন তিনি প্রায় মাসখানেক আগে কালনা মহকুমা হাসপাতালে। কিন্তু, তাঁর এই চিকিৎসার পর যে ধরণের ওষুধের দরকার তা হাসপাতালে না মেলায় কোনও সহৃদয় ব্যক্তি তাঁকে ওই ওষুধ কিনে দেন। বর্তমানে বেশ কিছুটা সুস্থও হয়ে উঠেছেন তিনি। জেলাশাসক জানিয়েছেন, তা সত্ত্বেও পূর্ণচন্দ্রবাবু হাসপাতাল ছেড়ে যেতে চাইছেন না। কারণ জিজ্ঞাসা করায়, তিনি জেলাশাসককে জানিয়েছেন, তাঁকে দেখভাল করার কেউ নেই। এই বৃদ্ধ অবস্থাতেও তিনি ৩ টি বাড়িতে বিভিন্নরকম কাজ করে তাঁর জীবন অতিবাহিত করার চেষ্টা করছেন। ৭০ বছরের বৃদ্ধের এই করুণ কাহিনী তৎক্ষনাৎ জেলাশাসককে নাড়া দেয়।  আর এরপরেই তিনি সংশ্লিষ্ট বিডিওকে পূর্ণচন্দ্র বাবুর বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর নেওয়ার নির্দেশ দেন। এরপরই সোমবার বিডিও অফিস থেকে পূর্ণচন্দ্র বাবুর বিষয়ে খোঁজ খবর নেওয়ার পর তাঁর বার্ধক্যভাতা চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। জেলাশসক এদিন জানিয়েছেন, দ্রুততার সঙ্গেই ওই বৃদ্ধের বার্ধক্যভাতা চালু হয়ে যাবে। এছাড়াও সোমাবারই ওই বৃদ্ধের হাতে এক হাজার টাকা প্রাথমিকভাবে তুলে দেওয়া হয়। অন্যদিকে, এদিন পূর্ণচন্দ্র বাবু জানিয়েছেন, মাথা গোঁজার মত তাঁর একটি ঘর আছে। কিন্তু তাঁর জমিজায়গা থাকলেও আজ আর কিছুই নেই। যদিও পূর্ণচন্দ্র বাবুর ভাই জীবন পাল রয়েছেন। পূর্ণচন্দ্র বাবু জানিয়েছেন, আগে তিনি দিনমজুরের কাজ করতেন। কিন্তু, বয়সের ভারে আর তা করতে পারেন না। তাই ৩ টি বাড়িতে জল তুলে দেওয়া সহ টুকটাক কাজ করে দেন। তার বিনিময়ে তাঁরা খাবার দেন। বস্তুত, কালনা মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসার পাশাপাশি তাঁর খাবার জুটে যাওয়ায় তিনি হাসপাতাল ছেড়ে যেতে না চাওয়ার কথাই বলেছেন এদিন। যদিও জেলাশাসক জানিয়েছেন, তাঁকে সুস্থ করেই তাঁর বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হবে। পূর্ণচন্দ্র বাবু জানিয়েছেন, জেলাশাসকের এই উদ্যোগ এবং সহযোগিতা যে তিনি পাবেন ভাবতেই পারেননি। এই ঘটনায় এই বয়সেও তিনি মনের জোর ফিরে পেলেন জেলাশাসকের জন্য।

About admin

Check Also

Kartik Puja on Saturday, Kartik fight in Katwa on Sunday; Preparations are in full swing

কাটোয়ায় কার্তিক লড়াইয়ের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি তুঙ্গে

কাটোয়া (পূর্ব বর্ধমান) :- গ্রামবাংলায় এখনও একটা ছড়া মুখে মুখে ঘোরে – কার্তিক ঠাকুর হ্যাংলা, …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *