Breaking News

ডাকযোগে চিঠি পেয়ে নাবালিকার বিয়ে রুখল বর্ধমান থানার পুলিশ

Dakjoge police Chithi pea nabalikar Biye rukhlo.বর্ধমান, ২৪ ফেব্রুয়ারিঃ- ডাকযোগে চিঠি পেয়ে নাবালিকার বিয়ে রুখল বর্ধমান থানার পুলিশ। পরে নাবালিকার বাবা ও মায়ের কাছ থেকে বিয়ে বন্ধ রাখার ব্যাপারে মুচলেকাও লিখিয়ে নেওয়া হয়। যাবতীয় প্রস্তুতি সারা হয়ে যাওয়ার পর আচমকা বিয়ে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সমস্যায় পড়েছে মেয়েটির পরিবার। যদিও আইনি জটিলতায় বিয়ে বন্ধের বিষয়টি মেনে নিতে বাধ্য হয়েছেন নাবালিকার বাবা ও মা। নাবালিকার বিয়ে রোখায় পুলিশের ভূমিকায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।Dakjoge police Chithi pea nabalikar Biye rukhlo.

     বর্ধমান থানার কানাইনাটশালের মুদিপাড়ার বাসিন্দা পেশায় রিক্সা চালক জয়দেব মালোর চার মেয়ে। বড় মেয়ের আগেই বিয়ে হয়ে গিয়েছে। মেজো মেয়ে রাখি মালো (১৬) বড়নীলপুরের আচার্য দুর্গাপ্রসন্ন বিদ্যামন্দিরে নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় অভাবের কারনে গত বছর পড়াশুনা ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। এরপর মেয়ের বিয়ে দেওয়ার তোরজোড় শুরু করে তার বাবা-মা। দেখা শোনার পর বর্ধমান শহরের রায়নগরের যুবক পেশায় ফল বিক্রেতা স্বপন বাড়ুইয়ের সঙ্গে রাখির বিয়ের ঠিক হয়। সোমবার তার বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। মেয়ের বিয়ের খরচ অনেক কষ্টে যোগাড় করেন বাবা-মা। বিয়ের যাবতীয় প্রস্তুতিও সাড়া হয়ে গিয়েছিল। বাড়িতে বাঁধা হয়েছে প্যান্ডেল। বিয়ের বাজারও সম্পূর্ণ। ইতিমধ্যেই বরপক্ষকে ১০ হাজার টাকা, খাট-বিছানা, আংটিও দেওয়া হয়েছে বলে পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে। আত্মীয় স্বজনদের কেউ কেউ ইতিমধ্যেই চলে এসেছেন। এক কথায় বাড়িতে সাজো সাজো রব। এসবের মধ্যেই ছন্দ পতন ঘটালো একটি চিঠি। দিন কয়েক আগে রাখির বিয়ে রুখতে একটি চিঠি পৌঁছায় বর্ধমান থানায়। চিঠিটি পেয়েই নড়ে চড়ে বসে পুলিশ। চাইল্ড লাইন নামক একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় পুলিশের তরফে। বিভিন্ন ভাবে খোঁজ খবর নিয়ে রাখি যে নাবালিকা  এ ব্যাপারে নিশ্চিত হয় পুলিশ। এরপর চূড়ান্ত হয় বিয়ে রোখার পরিকল্পনা। সেই মতো রবিবার বেলা সাড়ে ১১ টা নাগাদ স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটির কাউন্সিলার রেশমী পালকে সঙ্গে নিয়ে রাখির বাড়িতে পৌছায় পুলিশ। বাড়িতে পুলিশ দেখে হকচকিয়ে যায় পরিবারের লোকজন। ভীতি কাটাতে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটির কাউন্সিলারই কথা বলেন পরিবারের লোকজনের সঙ্গে। রাখির বয়স সংক্রান্ত শংসাপত্র দেখতে চাওয়া হয়। শংসাপত্র না থাকার কথা জানিয়ে নোটারির একটি এফিডেভিট দেখান রাখির বাবা-মা। তাতে বয়স সংক্রান্ত কোনও শংসাপত্র না থাকার কথা জানিয়ে ৯৪ সালে রাখির জন্ম বলে উল্লেখ করা হয়েছে। চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি এফিডেভিটটি করা হয়েছে। রেশন কার্ড অনুযায়ী বয়স দেখা যায় ১৬ বছর। এরপরই পুলিশের তরফে বিয়ে বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয় নাবালিকার বাবা-মাকে। নাবালিকার বিয়ের ব্যাপারে আইনি বাধার পাশাপাশি সামাজিক এবং শারীরিক সমস্যার বিষয়টিও বুঝিয়ে বলা হয় রাখির বাবা-মাকে। বিষয়টি বুঝে মেয়ের বিয়ে বন্ধে রাজি হয়ে যান জয়দেব বাবু এবং তাঁর স্ত্রীDakjoge police Chithi pea nabalikar Biye rukhlo. দীপা। পুলিশকে তাঁরা মুচলেকাও লিখে দেন। পরে জয়দেব বাবু বলেন, অনেক কষ্টে মেয়ের বিয়ে ঠিক করেছিলাম। চেয়ে চিন্তে বিয়ের খবরও যোগাড় হয়ে গিয়েছিল। তবে, আইন ভেঙে তো আর কিছু করা যায়না। পাত্র পক্ষকে বোঝাবো যাতে মেয়ে প্রাপ্ত বয়স্কা হওয়া পর্যন্ত তাঁরা অপেক্ষা করেন। বর্ধমানের পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মীর্জা বলেন, নাবালিকার বিয়ের খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তা বন্ধ করেছে। মেয়েটির পরিবারকে সব কিছু বুঝিয়ে বলা হয়েছে। মেয়েটির বাবা-মা বিয়ে বন্ধ করতে রাজি হয়েছেন। এব্যাপারে তাঁরা মুচলেকাও লিখে দিয়েছেন।

About admin

Check Also

The fifth short film festival was organized in Burdwan

বর্ধমানে আয়োজিত হলো পঞ্চম শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বর্ধমান চলচ্চিত্র চর্চা কেন্দ্রের উদ্যোগে আয়োজিত হলো শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। রবিবার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *