বর্ধমান, ১৯ জানুয়ারিঃ- মঙ্গলকোট থানার ন’পাড়ায় গুলিবিদ্ধ হলেন এক তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাঁকে ভরতি করা হয়েছে। তৃণমূল কর্মীর গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। উত্তেজিত তৃণমূল কর্মীরা থানায় বিক্ষোভ দেখায়। পুলিশের গাড়িতে ভাঙচুরও চালানো হয়। পরে এস ডি পি ও –র নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী থানায় পৌছে লাঠিচার্জ করে বিক্ষোভকারীদের হটিয়ে দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে এলাকায় পুলিশি টহল চলছে। পুলিশ জানিয়েছে, জখম তৃণমূল কর্মীর নাম মোজাহার মোল্লা (৫০)। ন’পাড়া গ্রামেরই পূর্ব পাড়ায় তাঁর বাড়ি। হাসপাতালের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ এনেছেন জখম তৃণমূল কর্মীর পরিবারের লোকজন। মোজাহারের স্ত্রী ইসমাতারা বিবির অভিযোগ, ভরতি হওয়ার পর থেকেই দীর্ঘক্ষন তাঁর স্বামীকে বিনা চিকিৎসায় ফেলে রাখা হয়। পা থেকে দ্রুত গুলি বের করার ব্যাপারে উদ্যোগী হয়নি হাসপাতাল। ফলে, ক্ষত থেকে দীর্ঘক্ষন রক্তপাত হয়। এদিকে তৃনমূল কর্মীর গুলিবিদ্ধ হওয়া নিয়ে রাজনৈতিক চাপান উতর শুরু হয়েছে। তৃনমূলের এবং জখমের পরিবারের লোকজনের অভিযোগ, হামলায় সিপিএমের লোকজন জড়িত। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এলাকায় কর্তৃত্ব ফিরে পেতে সিপিএম পরিকল্পিত ভাবে হামলা চালিয়েছে। যদিও, সিপিএমের তরফে হামলায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করা হয়েছে। সিপিএমের পালটা অভিযোগ কিছুদিন ধরেই তৃনমূলের দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে এলাকা দখলের লড়াই চলছে। তার পরিণতিতেই এই ঘটনা ঘটেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার সকালে জমিতে জল ধরাতে যাচ্ছিলেন মোজাহার। সেখান থেকে ধান বিক্রির টাকা আনতে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। সকাল ৯ টা নাগাদ জমিতে যাওয়ার সময় রাস্তায় কয়েকজন দুষ্কৃতী তাঁর পথ আটকায়। কোন কিছু বোঝার আগেই দুষ্কৃতীরা তাঁকে বেদম পেটায়। হামলা থেকে বাঁচতে তিনি পালাতে গেলে দুষ্কৃতীরা তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে। দুষ্কৃতীদের ছোঁড়া গুলি তাঁর পায়ে লেগেছে বলে পরিবারের লোকজনের দাবি। গুলির আওয়াজ শুনে এলাকার তৃনমূল কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে দুষ্কৃতীরা বোমাবাজি করে পালায়। এর পরই এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। তৃনমূলের লোকজন মঙ্গলকোট থানায় ব্যাপক বিক্ষোভ দেখায়। ঘটনায় জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি জানাতে থাকে বিক্ষোভকারীরা। বিক্ষোভ চলাকালীন পুলিশের একটি গাড়িতে ভাঙচুরও চালানো হয়। জখমের স্ত্রী ইসমাতারা বিবি বর্ধমান হাসপাতালে দাঁড়িয়ে বলেন, সিপিএম আশ্রিত সমাজবিরোধীরাই তাঁর স্বামীর উপর হামলা চালিয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সন্ত্রাস সৃষ্টি করে এলাকা দখল করতে চাইছে সিপিএম। তাঁর অভিযোগ, হাসপাতালে স্বামীর ঠিকমতো চিকিৎসা হচ্ছেনা। সিপিএমের অজয়-ভাগীরথি জোনাল কমিটির সম্পাদক দুর্যোধন সর বলেন, তৃনমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারনেই এই ঘটনা ঘটেছে। ঘটনায় সিপিএমের কেউ জড়িত নয়। অযথা সিপিএমের নাম জড়ানো হচ্ছে। বর্ধমানের পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মীর্জা বলেন, দুষ্কৃতীদের হামলায় তৃনমূলের একজন জখম হয়েছেন। হামলায় জড়িতদের পরিচয় জানা গিয়েছে। তাদের ধরতে তল্লাশি চলছে। ঘটনার পর উত্তেজিত তৃনমুল কর্মীরা পুলিশের গাড়িতে ভাঙচুর চালায়। সেই ঘটনায় দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে, পুলিশ টহল দিচ্ছে।