বর্ধমান, ১৯ ফেব্রুয়ারিঃ- বর্ধমানের মিউনিসিপ্যাল বয়েজ হাই স্কুলে শিক্ষানুরাগী প্রতিনিধি নির্বাচনে তৃণমূলের অফিসিয়াল প্রার্থী হারলেন। এই ঘটনায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ফের প্রকাশ্যে এল। মঙ্গলবার স্কুলে শিক্ষানুরাগী প্রতিনিধি নির্বাচন ছিল। স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের অনুগামী সুশান্ত ঘোষ সেই নির্বাচনে দাঁড়ান। অন্যদিকে দলেরই অপর গোষ্ঠীর প্রার্থী থাকহরি ঘোষও নির্বাচনে লড়েন। নির্বাচনে ৬ জন অভিভাবক প্রতিনিধি ছাড়াও ৩ জন শিক্ষক প্রতিনিধি, ১ জন অশিক্ষক কর্মী প্রতিনিধি এবং স্কুলের প্রধান শিক্ষক ভোটার ছিল। ভোটাধিকার থাকলেও জেলাশাসকের প্রতিনিধি, জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের প্রতিনিধি, পুরসভার চেয়ারম্যান এবং ভাইস চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি এদিন ভোট দেননি। নির্বাচনে সুশান্ত বাবুকে ৭-৪ ভোটে হারিয়ে দেন থাকহরি বাবু। ফল ঘোষনার পরই সিপিএমের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তাঁকে হারানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সুশান্ত বাবু। তিনি বলেন, শিক্ষানুরাগী প্রতিনিধি নির্বাচনে আমিই দাঁড়াব বলে দলের তরফে ঠিক হয়েছিল। কিন্তু, পরে থাকহরি বাবু দাঁড়িয়ে যান। ফল থেকেই পরিষ্কার, সিপিএমের সঙ্গে হাত মিলিয়ে আমাকে হারানো হয়েছে। তবে, এই ঘটনা দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের বহিঃপ্রকাশ বলে তিনি মানতে চাননি। অভিভাবক প্রতিনিধি তথা তৃনমূল ট্রেড ইউনিয়ন নেতা সুব্রত কুশারি বলেন, সুশান্ত বাবু দলের প্রার্থী ছিলেন। সিপিএমের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে দলেরই কিছুলোক তাঁকে হারিয়ে দিল। এরফলে দলের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বহু লড়াই করে সিপিএমকে স্কুল থেকে হটানো গিয়েছিল। এবার ঘুরপথে সিপিএমই স্কুলে কর্তৃত্ব চালাবে। অন্যদিকে, থাকহরি বাবু বলেন, কে প্রার্থী হবেন দলের তরফে তা মোটেই ঠিক করে দেওয়া হয়নি। তাই, তিনিই অফিসিয়াল প্রার্থী বলে সুশান্ত বাবু যে দাবি করছেন তা ঠিক নয়। শিক্ষকও অশিক্ষক প্রতিনিধিরা অনেক আগেই সমর্থন বদলে তৃণমূলের হয়ে গিয়েছেন। সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য স্কুলের ভালোর জন্য যা ভালো মনে করেছেন তাই করেছেন। ভোটের ফলকে সকলেরই মর্যাদা দেওয়া উচিত। বর্ধমানে এধরণের ঘটনা অবশ্য প্রথম নয়। কিছুদিন আগে শিবকুমার হরিজন বিদ্যালয়েও একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। সেখানেও অফিশিয়াল প্রার্থীকে হারিয়ে শিক্ষানুরাগী প্রতিনিধি নির্বাচনে জেতেন তৃণমূল নেতা নিহারেন্দু আদিত্য। বিষয়টি রাজ্য নেতৃত্বের নজরে এনেছেন অভিভাবক প্রতিনিধিদের একাংশ। রবিরঞ্জন বাবু বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে, স্কুলের শিক্ষানুরাগী প্রতিনিধি নির্বাচন দলীয় প্রতীকে হয়না। নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার অধিকার সকলেরই আছে। এটাই গণতন্ত্র। এই ঘটনার সঙ্গে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কোনও যোগ নেই। তৃণমূলের বর্ধমান জেলার পর্যবেক্ষক অলক দাস বলেন, ঘটনার কথা শুনেছি। যিনি জিতেছেন, তাঁর রাজনৈতিক পরিচয় আমার জানা নেই। অন্যদিকে, সুশান্ত বাবু পরিচিত নাম। দলের জন্মলগ্ন থেকেই তিনি আছেন। স্থানীয় বিধায়ক তথা মন্ত্রী রবিরঞ্জন বাবুর নির্দেশেই তিনি ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন। প্রতীক নির্বাচনে না হলেও স্কুল নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে দলের কিছু নির্দেশ থাকে। যাঁরা সেই নির্দেশ মানছেন না তাঁরা দলেরই ক্ষতি করছেন। সব কিছু খতিয়ে দেখে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Tags Barddhaman Bardhaman Bôrdhoman Boys High School Burdwan Burdwan Municipal Boys High School Burdwan Municipal High School Education Education Interested Person Election High School Municipal Municipal High School Person Interested in Education School
Check Also
বর্ধমানে আয়োজিত হলো পঞ্চম শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল
বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বর্ধমান চলচ্চিত্র চর্চা কেন্দ্রের উদ্যোগে আয়োজিত হলো শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। রবিবার …