বর্ধমান, ২৭ জুনঃ- হাইকোর্টের নির্দেশে বর্ধমান জেলার বিদ্যালয় পরিদর্শক (সেকেন্ডারি) নীলিমা রানি গিরিকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। বিদ্যালয় পরিদর্শক এবং কাটোয়া মহকুমার সীতাহাটি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিবসাধন সাহাকে গ্রেপ্তার করে শুক্রবার আদালতে পেশ করার জন্য জেলার পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেন হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাশিষ কর গুপ্ত। নূন্যতম এস ডি পি ও পদমর্যাদার অফিসারকে দিয়ে দুজনকে হাইকোর্টে হাজির করানোর জন্য নির্দেশ দেন বিচারপতি। সেইমত বৃহস্পতিবার বর্ধমান থানার পুলিশ জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শককে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসে। পরে তিনি পুলিশের সঙ্গে হাইকোর্টে যাওয়ার ব্যাপারে লিখিত প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর বন্ডে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। যদিও প্রধান শিক্ষককে এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি কেতুগ্রাম থানার পুলিশ। তাঁকে ধরতে এদিন স্কুলে এবং বাড়িতে হানা দেয় পুলিশ। যদিও রাত পর্যন্ত তাঁর হদিশ মেলেনি।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ৯৫ সালে সীতাহাটি হাইস্কুলের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অমৃত দাস মারা যান। গ্র্যাচুয়িটির টাকা পেতে তাঁর স্ত্রী কৃষ্ণা দাস বিভিন্ন দপ্তরে দরবার করেন। কিন্তু, তিনি প্রাপ্য টাকা পাননি। বহু আবেদন-নিবেদনের পরেও প্রাপ্য টাকা না পেয়ে মৃত প্রধান শিক্ষকের স্ত্রী কৃষ্ণা দাস হাইকোর্টে মামলা করেন। চলতি বছরের ১২ জুন মামলাটির শুনানি হয় হাইকোর্টে। মামলাটির নিষ্পত্তিতে শুনানি চলা কালীন স্কুলের বর্তমান প্রধান শিক্ষক এবং জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের উপস্থিতি অত্যন্ত জরুরী বিবেচনা করে আদালতে তাঁদের হাজির থাকার জন্য বিচারপতি নির্দেশ দেন। ২০ জুন তাঁদের আদালতে হাজির থাকার জন্য নির্দেশ দেন বিচারপতি। কিন্তু, সেদিন প্রধান শিক্ষক উপস্থিত থাকলেও শুনানির প্রথম পর্বে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক হাই কোর্টে হাজির হননি। সরকারি আইনজীবী বি ভুইঞা আদালতে জানান, জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক হাইকোর্টে হাজির হওয়ার জন্য রওনা দিয়েছেন। তাই, দ্বিতীয় পর্বে আবেদনের শুনানির আবেদন জানান সরকারি আইনজীবী। কিন্তু, দ্বিতীয় পর্বের শুনানি শুরু হতেই সরকারি আইনজীবী জানান, অন্য একটি জরুরি মিটিং-এ ব্যস্ত থাকার কারণে বিদ্যালয় পরিদর্শক হাই কোর্টে হাজির হতে পারছেন না। সরকারি আইনজীবীর এই যুক্তি ঠিক বলে মনে হয়নি বিচারপতির। এর পরই বিদ্যালয় পরিদর্শক এবং প্রধান শিক্ষকের আদালতে উপস্থিত নিশ্চিত করতে দুজনেরই বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরওয়ানা জারির নির্দেশ দেন বিচারপতি। শুক্রবার দুপুর দুটোয় মামলাটির ফের শুনানি হবে। নির্দেশ কার্যকর করতে জেলার পুলিশ সুপারকে ব্যবস্থা নিতে বলেন বিচারপতি। নির্দেশের কপি রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিবকেও পাঠানো হয়। বর্ধমানের পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মীর্জা বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।