বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- জামালপুর থানার জৌগ্রামে তেলনুড়ি অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোট মিটে যাওয়ার পর বিজেপি ও তৃণমূলের সংঘর্ষের ঘটনায় ১০ জন বিজেপি সমর্থককে পুলিস গ্রেপ্তার করেছে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিস তাদের গ্রেপ্তার করে। নুড়ি, বেনেপুকুর ও তেলে এলাকায় ধৃতদের বাড়ি। মঙ্গলবার ধৃতদের বর্ধমান আদালতে পেশ করা হয়। তদন্তের প্রয়োজনে কিঙ্কর মণ্ডল, সত্যেন্দ্রনাথ বিশ্বাস, বসির মোল্লা ও শুভঙ্কর গোমস্তাকে ৫ দিন নিজেদের হেপাজতে নিতে চেয়ে আদালতে আবেদন জানায় পুলিস। ধৃতদের ২ দিন পুলিসি হেপাজতে পাঠানোর নিের্দশ দেন ভারপ্রাপ্ত সিজেএম সোমনাথ দাস। বাকিদের বিচার বিভাগীয় হেপাজতে পাঠানোর নিের্দশ দেন বিচারক।
পুলিস জানিয়েছে, সোমবার তেলনুড়ি অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোট মিটে যাওয়ার পর গণ্ডগোল বাধে। বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূলের লোকজন ভোট লুটের চেষ্টা করে। ভোট শেষ হওয়ার পর এনিয়ে স্কুলের গেটের সামনে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি। ইভিএম নিয়ে যেতে বাধা দেয় বিজেপি। এনিয়ে সংঘর্ষ বাধে। সেই সময় বিজেপির লোকজন তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের ব্যাপক মারধর করে বলে অভিযোগ। মারধরে এক তৃণমূল কর্মী জখম হন। গণ্ডগোলের খবর পেয়ে বিশাল পুলিস বাহিনী ঘটনাস্থলে যায়। পুলিস বিজেপি কর্মীদের ইভিএম ও ভোটকর্মীদের ছেড়ে দেওয়ার জন্য বলে। তা অমান্য করে বিক্ষোভ চালিয়ে যায় বিজেপির লোকজন। অভিযোগ, আচমকা বিজেপির লোকজন পুলিসের উপর হামলা চালায়। পুলিসকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোঁড়া হয়। তাতে কয়েকজন পুলিসকর্মী জখম হন। পুলিসের ৫টি গাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়। পরিস্থিতি আয়ত্বের বাইরে চলে যাওয়ায় পুলিস টিয়ার গ্যাসের দু’টি সেল ফাটায়। তাতে বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এরপর লাঠিচার্জ করে পুলিস পরিস্থিতি আয়ত্বে আনে। বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক রামকৃষ্ণ চক্রবর্তী বলেন, ভোট শেষ হওয়ার পর তৃণমূলের লোকজন ছাপ্পা দিতে যায়। সাধারণ মানুষ তা প্রতিরোধ করে। পুলিস অন্যায়ভাবে বিজেপি কর্মীদের ধরেছে।
এলাকায় তাণ্ডব চালিয়েছে পুলিস। জামালপুরের তৃণমূল নেতা মেহমুদ খান বলেন, ভোট লুটের চেষ্টার অভিযোগ একেবারে মিথ্যা। আমাদের এক কর্মীকে বিজেপির লোকজন আটকে রেখে মারধর করে। তাঁকে উদ্ধার করতে গেলে বিজেপির লোকজন পুলিসের উপর হামলা চালায়।
ঘটনার বিষয়ে জামালপুর থানার ওসি পুষ্পেন্দু জানা অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে বেআইনি জমায়েত, হামলা, সরকারি কর্মীকে কাজে বাধা দেওয়া, সরকারি কর্মীকে মারধর ও সরকারি সম্পত্তি নষ্টের ধারায় মামলা রুজু করেছে। ১৯ জনের বিরুদ্ধে সুনিির্দষ্ট অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।