Breaking News

গত ১০ বছর ধরে কেন্দ্র ও রাজ্যের প্রদেয় ভর্তুকির টাকা বন্ধ থাকায় সমস্যায় তাঁতশিল্পীরা

11th Prak Puja Tant Bastro Mela was inaugurated. At Burdwan Town

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- কেন্দ্র সরকারের অনীহায় তাঁতশিল্পীদের বস্ত্র বিপণনের ভর্তুকি বাবদ বকেয়া টাকার পরিমাণ বেড়েই চলেছে। ফলে সংকটের মুখে পড়ছেন তাঁতীরা। শুধু কেন্দ্র সরকারই নয় বিভিন্ন মেলা বা এক্সপোতে গিয়ে তাঁতীরা তাঁদের উত্পাদিত বস্ত্র বিক্রি করতে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের কাছ থেকে যে ১০ শতাংশ হারে ভর্তুকি পেতেন তাও গত প্রায় ১০ বছর ধরে বন্ধ হয়ে থাকায় ক্রমশই সমস্যার মুখে পড়ছেন তাঁতীরা। বস্তুত, তাঁতশিল্পীদের আর্থিকভাবে উন্নয়ন ঘটাতে রাজ্য সরকার যে উদ্যোগ নিয়েছে তার ফলে প্রায় ১১ বছর আগেও তাঁতীদের যে অবস্থা ছিল তার থেকে অনেকটাই তাঁরা ঘুরে দাঁড়াতে পারলেও কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের ভর্তুকির এই টাকা বন্ধ থাকায় আর্থিক চাপের মুখে পড়েছেন তাঁতীরা। 11th Prak Puja Tant Bastro Mela was inaugurated. At Burdwan Town বুধবার থেকে প্রতিবছরের মত এবছরও বর্ধমান শহরের টাউন হলে শুরু হল ১১তম প্রাক্ পূজা তাঁতবস্ত্র মেলা। মেলার উদ্বোধন করেন বর্ধমান দক্ষিণ বিধানসভার বিধায়ক রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প দপ্তরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, জেলাশাসক বিজয় ভারতী, সভাধিপতি শম্পা ধাড়া, সহকারী সভাধিপতি দেবু টুডু। রাজ্য বস্ত্র নিগমের ডিরেক্টর দেবযানী দত্ত প্রমুখরাও। টাউনহল প্রাঙ্গণে প্রায় ৩৮টি স্টল নিয়ে এবারের এই তাঁতবস্ত্র মেলার বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে ২ কোটি টাকা। গত আর্থিক বছরে বিক্রি হয়েছিল ১ কোটি ৩০ লক্ষ ৫৭ হাজার ১৭৫ টাকা। এদিকে, এদিন এই মেলায় হাজির হওয়া কালনা মহকুমার ধাত্রীগ্রামের টাঙ্গাইল বসাক তন্তুবায় সমবায় সমিতির সদস্য নির্মল বসাক জানিয়েছেন, সরকারী তরফে এই ধরণের বিপণনের ব্যবস্থাপনায় সত্যিই তাঁতশিল্পের উন্নতি হয়েছে। 11th Prak Puja Tant Bastro Mela was inaugurated. At Burdwan Town সরাসরি খরিদ্দারদের সঙ্গে তাঁতীদের যোগ সাধন হচ্ছে। খরিদ্দাররা কি চাইছেন তা জানতে পারছেন তাঁরা। সেইমত তাঁরা কাপড় বোনার চেষ্টা করছেন। ফলও পাচ্ছেন হাতেনাতে। তিনি জানিয়েছেন, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার সংশ্লিষ্ট মেলা বা এক্সপোতে অংশগ্রহণকারী তাঁতীদের আর্থিক সহায়তা করতে ১০ শতাংশ করে মোট ২০ শতাংশ ছাড় দেয়। যে টাকা সরকারীভাবে তাঁদের এ্যাকাউণ্টে জমা পড়ে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত গত ১০ বছরে কেবলমাত্র পূর্ব বর্ধমান জেলার বহু তাঁতী তথা তন্তুবায় সমিতি কেন্দ্র সরকারের বিভিন্ন এক্সপোতে অংশ নিয়েছেন। কিন্তু এখনও তাঁরা সেই ভর্তুকির টাকা পাননি। সরকারীভাবে জানানো হয়েছে তাঁরা টাকা পাবেন। কিন্তু কবে পাবেন তা তাঁরা এখনও জানেন না। নির্মলবাবু আরও জানিয়েছেন, বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার তাঁতীদের ক্লাষ্টার করার ওপর জোড় দিলেও এই ধরণের এক্সপোর ক্ষেত্রে অনেকটাই অনীহা দেখাচ্ছেন। ফলে আগে যেখানে বিভিন্ন রাজ্য মিলিয়ে প্রায় সারাবছরেই ১০-১২টি এক্সপো হত। এখন সেই সংখ‌্যা অনেকটাই কমে গেছে। 11th Prak Puja Tant Bastro Mela was inaugurated. At Burdwan Town এদিকে, চলতি সময়ে তাঁদের শাড়ীর বিক্রি কিছুটা হলেও মন্দাবাজার বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন নির্মলবাবু। তার কারণ হিসাবে তিনি জানিয়েছেন, পুরনো ডিজাইন একঘেঁয়ে হয়ে গেছে। তাঁতশিল্পীদের সূক্ষ্ম কাজের কদর সেভাবে মিলছে না। উল্লেখ্য, এবছর পূজোর মূল আকর্ষণ সরু তথা সূক্ষ্ম কাজের টাঙ্গাইল শাড়ি। টাউনহলের মেলাতেও নিয়ে আসা হয়েছে এই শাড়ি। এবছর তাঁতের শাড়ির ফ্যাশন এটাই। দাম ৭০০ থেকে ২০০০ টাকা পর্যন্ত। নির্মলবাবু জানিয়েছেন, একটা শাড়িতে সূক্ষ্ণ টাঙ্গাইলের কাজ করতে শিল্পীর যে সময় ও ধৈর্য্যের পাশাপাশি তাঁর মজুরী প্রয়োজন তা পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে শিল্পীরাও আর সেই ধরণের কাজে আগ্রহ দেখাতে পারছেন না। তাঁরাও চটজলদি কাজ সেরেই টাকা তুলে নিতে চাইছেন। ফলে একঘেঁয়েমি হয়ে যাচ্ছে। যদিও তিনি তিনি জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার প্রতিনিয়তই ডিজাইন নিয়ে গবেষণা করছেন। নতুন নতুন ডিজাইনের শাড়িও তৈরী হচ্ছে। তবে একসময় ধুঁকতে থাকা তাঁতশিল্পে এখন অনেকটাই ভাল সময় বলে নির্মলবাবু জানিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, ভর্তুকিবাবদ কমবেশী বিভিন্ন তন্তুবায় সমবায় সমিতির প্রচুর টাকা পাওনা রয়েছে। এই বকেয়া টাকা পেয়ে তাঁরা অনেকটাই সুবিধাজনক জায়গায় দাঁড়াতে পারেন। কারণ তাঁতীদের সুবিধার্থে তৈরী হওয়া সমবায় সমিতিগুলিকে তাঁতীদের মজুরীবাবদ অর্থ মিটিয়ে দিতে হয়। আর উত্পাদিত কাপড় বিক্রি করে সেই টাকা তুলতে হয় সমবায় সমিতিকে। নির্মলবাবু জানিয়েছেন, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের কাছ থেকে এই মেলায় অংশ নেওয়ার জন্য ভর্তুকির টাকা না পাওয়ায় তাঁদেরই ভর্তুকিতে কাপড় বিক্রি করতে হচ্ছে। ফলে কিছুটা হলেও তাঁরা চাপের মধ্যে পড়ছেন। লাভের পরিমাণও কমছে। এদিকে, এদিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ জানিয়েছেন, ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্পের অধীনে বেশ কিছু নতুন শিল্পের জন্য সরকারী অর্থ বরাদ্দ হয়েছে। বাতাসা, নকুলদানা থেকে মিছরি তৈরীর জন্য উত্সাহ দেওয়া হচ্ছে। ক্লাষ্টার তৈরী করে দেওয়া হচ্ছে। তিনি জানিয়েছে্ন, বর্ধমানের মেমারী থেকে জামালপুর এই বিস্তীর্ণ অংশে প্রচুর কুমড়ো উত্পাদিত হয়। এই কুমড়ো দিয়ে কি ধরণের শিল্প তৈরী করা যায় তা নিয়ে নতুন করে ভাবনা চিন্তা শুরু হয়েছে।

About admin

Check Also

MLA's mother-in-law and panchayat pradhan's names are on the list of people getting houses under the Bangla Awas Yojana

বাংলা আবাস যোজনায় নাম দোতলা বাড়ির মালিক বিধায়কের শাশুড়ি এবং পঞ্চায়েত প্রধানের

খণ্ডঘোষ (পূর্ব বর্ধমান) :- পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষের তৃণমূল বিধায়ক নবীনচন্দ্র বাগের শ্বশুরবাড়ির একাধিক বাড়িতে হুকিং …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *