Breaking News

জাতীয় সড়কে পথ দুর্ঘটনায় মৃত ৩, আহত ৬

গণেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- গলসি থানা এলাকায় জাতীয় সড়কে পথ দুর্ঘটনায় ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে একটি শিশুও রয়েছে। জখম হয়েছেন ৬ জন। জখমদের মধ্যে ৩ জন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বাকি ৩ জনকে গলসির পুরষা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর সেখান থেকে দু’জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। পুলিস জানিয়েছে, মৃতদের নাম নূর মহম্মদ শেখ ওরফে সুরজ (৩২), আসরাফ মল্লিক ওরফে আজাহার (৩০) ও তামান্না খাতুন ওরফে দিয়া (৫)। নূরমহম্মদ গাড়িটি চালাচ্ছিলেন। গলসি থানার বোঁইচা গ্রামে ও দক্ষিণ বাবলা গ্রামে মৃতদের বাড়ি।।
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গলসি থানার শিমুলিয়া গ্রামের মৌসুমী শেখ (১৯) তার স্বামী সাদ্দাম শেখ (২৬) ও তাঁদের ৮ মাসের সন্তান সায়ন, মৌসুমীর দুই দাদা আজাহার ও মোশারফ মল্লিক (২২), মোশারফের স্ত্রী বৈশাখী (২১), তাঁদের আড়াই বছরের ছেলে সৌরভ ও বড় দিদির ৫ বছরের মেয়ে তামান্না হুন্ডাই গাড়িতে শুক্রবার ভোরে আউশগ্রাম থানার জয়রামপুরে পিরের মাজারে সিন্নি চড়াতে গিয়েছিল। সেখান থেকে ফেরার সময় গলসি চৌমাথার কাছে গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে গাছে গিয়ে ধাক্কা মারে। গাড়িটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। দুর্ঘটনার বিকট শব্দ পেয়ে এলাকাবাসী ছুটে আসেন। তারা গাড়ির দরজা ও কাঁচ ভেঙে জখমদের উদ্ধার করেন। পরে পুলিস এসে জখমদের হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনা হলে আজাহারকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ভরতির কিছুক্ষণ পর নূর মহম্মদ ও দিয়া মারা যায়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর পুরষা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে শেখ সাদ্দাম ও মৌসুমীকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মোশারফের ছেলে কিছুদিন ধরে অকারণে ভয় পাচ্ছিল। সে কারণে পরিবারের লোকজন তাকে জয়রামপুরে পিরের মাজারে ঝাড়ফুঁকের জন্য নিয়ে যায়। সেখানে সিন্নিও চড়ানো হয়। ফেরার সময় বেলা সাড়ে ১০টা নাগাদ গাড়িটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, গাড়িটি গাছে ধাক্কা মারার আগে টায়ার ফাটার শব্দ হয়। প্রচণ্ড গতিতে গাড়িটি চলছিল। টায়ার ফাটায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাড়িটি রাস্তার পাশে গাছে গিয়ে ধাক্কা মেরে উল্টে যায়। দরজা ও পিছনের কাচ ভেঙে জখমদের উদ্ধার করা হয়। মৌসুমী বলেন, মাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলাম। গাড়িটি খুব জোরে চলছিল। বড় ভাই আজাহার ও বোনঝি তামান্না সামনের সিটে বসেছিল। বাকিরা পিছনে ছিলাম। হঠাৎ চাকা ফাটার শব্দ শুনি। তারপর কিছু বুঝতে পারিনি। গাড়িটি সোজা গিয়ে গাছে ধাক্কা মেরে উল্টে যায়। কিছু একটা ঘটতে চলেছে বুঝতে পেরে ছেলেকে আঁকড়ে ধরে মুখ গুঁজে বসে পড়েছিলাম। তারপর কিছুই মনে নেই। মৌসুমী বলেন, গাড়ির গতি খুব বেশি ছিল। চালককে আমরা বারণ করেছিলাম। কিন্তু, চালক শোনেনি। বাচ্চারা গাড়িতে বমি করায় রেগে গিয়ে চালক জোরে গাড়ি চালাচ্ছিল। বারবার বলা সত্বেও গাড়ির গতি কমায়নি চালক। সাদ্দামের কাকা শেখ শ্যামল বলেন, ওরা সবাই মিলে মাজারে সিন্নি দিতে গিয়েছিল। এমন ঘটনা যে ঘটবে তা কে আর জানত? বর্ধমানের অতিরিক্ত পুলিস সুপার প্রিয়ব্রত রায় বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটিকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

About admin

Check Also

Doctor Birupaksha Biswas was transferred to Kakdwip a year ago, did not go

এক বছর আগেই কাকদ্বীপে বদলি করা হয় চিকিৎসক বিরূপাক্ষকে, যাননি; ক্যান্টিন মালিক আইনের পথে

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বিতর্কিত চিকিৎসক বিরূপাক্ষ বিশ্বাসকে এক বছর আগেই স্বাস্থ্য দপ্তর বদলির নির্দেশ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *