বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- কলকাতার সংস্কৃত কলেজের ভাষা বিজ্ঞানের ছাত্র দেবাঞ্জন বল্লভকে মারধরের ঘটনায় ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে বর্ধমান থানার পুলিস। শহরের কানাইনাটশাল ও নীলপুর বাজার এলাকায় ধৃতদের বাড়ি। ঘটনার দিন রাতে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে পুলিস তাদের গ্রেপ্তার করে। ঘটনার পুনির্নর্মাণ ও মারধরে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারের জন্য ধৃতদের মধ্যে বিষ্ণু দাস, সুরজ হাজরা ও রাজু দাসকে ১০ দিন নিজেদের হেফাজতে নিতে চেয়ে আদালতে আবেদন জানান তদন্তকারী অফিসার সঞ্জয় ওরাং। সরকারি আইনজীবী নারদকুমার ভুঁইঞা পুলিসি হেফাজতের পক্ষে জোরদার সওয়াল করেন। তার বিরোধিতা করে ধৃতদের আইনজীবী কমল দত্ত বলেন, একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে মারধরে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে পুলিস কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। অথচ, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে মারধরে অভিযুক্তকে নিগ্রহের ঘটনায় অতি তৎপর হয়ে পুলিস ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। অভিযোগে কিল, চড়, ঘুষি মারার কথা বলা হয়েছে। যাকে মারধর করা হয়েছে তার কোনও চিকিৎসা হয়নি। সে দিব্যি সুস্থ আছে। তারপরও পুলিস অতি সক্রিয়তা দেখিয়ে হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানিয়েছে। সওয়াল শুনে পুলিসি হেফাজতের আবেদন খারিজ করে দেন সিজেএম রতন কুমার গুপ্তা। ধৃতদের বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন সিজেএম।
পুলিসের কাছে অভিযোগে সংস্কৃত কলেজের ভাষা বিজ্ঞানের ছাত্র দেবাঞ্জন বল্লভ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, তাঁর পরিবার কালীবাজার এলাকায় থাকে। মায়ের শরীর খারাপের খবর শুনে মঙ্গলবার রাতে তিনি বাড়ি আসেন। বুধবার বিকালে তিনি কলকাতায় যাওয়ার জন্য আলিশা বাসস্ট্যান্ডে যান। তাঁর সঙ্গে এক বান্ধবীও ছিল। আলিশা বাসস্ট্যান্ডে ৬-৭ জন মিলে তাঁকে আটকায়। তাঁকে কিল, চড়, ঘুষি মারা হয়। কোনও রকমে তিনি ও তাঁর সঙ্গী বাসে উঠে পড়ে। বাস থেকে নামিয়েও তাঁকে মারধর করা হয়। ২০-৩০ জন তাঁকে পরে দেখে নেবে বলে হুমকি দেয়। মারধরে জড়িতরা বিজেপি ও এভিবিপির সমর্থক বলে পরিচিত। উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে এভিবিপির একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। সেখানে তাঁকে শারীরিকভাবে নিগ্রহ করা হয়। তাতে ইউনাইটেড স্টুডেন্টস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের সক্রিয় কর্মী দেবাঞ্জনের নাম জড়ায়। এরপরই সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। তাঁর মা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছেলেকে ক্ষমা করে দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কাছে আবেদন জানান। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ট্যুইট করে দেবাঞ্জনকে ক্ষমা করে দেওয়ার জন্য জানান। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার বিষয়ে দেবাঞ্জনের বান্ধবীর বয়ান দেন। তাঁর বয়ান নথিভূক্ত করেছে পুলিস। বাসস্ট্যান্ডের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে মারধরে জড়িতদের তিনজনকে শনাক্ত করে পুলিস। তাদের ধরার পর মারধরে জড়িত বাকিদের হদিশ পায় পুলিস। এই ঘটনা সম্পর্কে বিজেপির জেলা সভাপতি সন্দীপ নন্দী জানিয়েছে্ন, পুলিশ মিথ্যাভাবে তাঁদের কর্মীকে ফাঁসিয়েছে। কারণ অভিযোগপত্রে কারও নাম নেই। তা সত্ত্বেও পুলিশ অতি সক্রিয়তা দেখিয়েছে। সন্দীপবাবু জানিয়েছে্ন, তাঁরাও প্রতিনিয়ত শাসকদলের হাতে আক্রান্ত হচ্ছেন। থানায় অভিযোগও হচ্ছে। কিন্তু পুলিশ কোনো ব্যবস্থাই নিচ্ছে না। অথচ এক্ষেত্রে সম্পূর্ণ উল্টো ছবি দেখছেন তাঁরা। সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবেই তাঁদের কর্মীদের ফাঁসানো হয়েছে।
Tags Babul Supriya BJP Debanjan Ballav Chattopadhyay United Students' Democratic Front USDF
Check Also
বর্ধমান টাউন হলে শুরু হলো লিটল ম্যাগাজিন মেলা, চলবে ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত
বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- শুক্রবার থেকে শুরু হলো ‘বর্ধমান লিটল ম্যাগাজিন মেলা ২০২৪’। বর্ধমান টাউন …