Breaking News

বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের জমা রাখা টাকা তুলে নেওয়ার ঘটনায় জামিন পেলেন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের ম্যানেজার

The University of Burdwan - Administrative Campus

গণেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- জামিন পেয়ে গেলেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের জমা রাখা প্রায় ২ কোটি টাকা তুলে নেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের ম্যানেজার পিনাকী বিশ্বাস। গত শুক্রবার তাঁকে দুর্গাপুর থেকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। পরেরদিন আদালতে পেশ করে তাঁকে হেফাজতে নেওয়ার জন্য আবেদন জানায় সিআইডি। সিজেএম ধৃতকে ৫ দিন সিআইডি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। হেফাজতে থাকাকালীন তাঁকে নিয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কটির বর্ধমান স্টেশন বাজার এলাকার শাখায় হানা দেন গোয়েন্দারা। সেখান থেকে ঘটনার সময়ের ব্যবহৃত একটি কম্পিউটার বাজেয়াপ্ত করে সিআইডি। ধৃতকে নিয়ে খণ্ডঘোষ থানার তোড়কোনায় ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ভক্ত মণ্ডলের এক আত্মীয়ের বাড়িতে হানা দেয় সিআইডি। যদিও সেখান থেকে শূন্য হাতেই ফিরতে হয় গোয়েন্দাদের। সিআইডি জেনেছে, মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার আগেই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী আমানত প্রকল্পে জমা রাখা ১ কোটি ৯৩ লক্ষ ৮৯ হাজার ৮৭৬ টাকা তুলে নেওয়ার জন্য আবেদন জমা পড়ে। সেই আবেদনে থাকা সই ব্যাংকের নথিতে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিকের সইয়ের সঙ্গে মিলিয়ে দেখেন ব্যাংকের ম্যানেজার। তিনি সম্মতি দেওয়ার পরই বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা ঠিকাদার সুব্রত দাসের অ্যাকাউন্টে জমা পড়ে। নিয়ম অনুযায়ী, সেই টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টে জমা পড়ার কথা ছিল। সই না মেলা সত্ত্বেও কীভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের টাকা সেখানকার অ্যাকাউন্টে জমা না পড়ে ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে জমা পড়ল তা ভেবে পাচ্ছেন না গোয়েন্দারা। এখানেই শেষ নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা উঠে যাওয়ার বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে ব্যাংক থেকে ৭ মাস পর জানানো হল। কেন টাকা উঠে যাওয়ার বিষয়টি ব্যাংক থেকে এত বিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানানো হল তার উদ্দেশ্য নিয়েও সন্দেহ রয়েছে সিআইডির। ইচ্ছাকৃতভাবে ব্যাংকের ম্যানেজার টাকা তুলে নেওয়ার বিষয়টি ৭ মাস পর বিশ্ববিদ্যালয়কে জানান বলে মনে করছেন সিআইডির আধিকারিকরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিকের সইয়ের নমুনা সংগ্রহ করে তা টাকা তোলার চিঠির আবেদনে থাকা সইয়ের সঙ্গে মিলিয়ে দেখেছেন গোয়েন্দারা। সিআইডির বিশেষজ্ঞ দু’টি সই একই জনের নয় বলে রিপোর্টে জানিয়েছে। সই না মেলা সত্ত্বেও কীভাবে এত বিপুল পরিমাণ টাকা তুলে নেওয়ায় ব্যাংক থেকে সম্মতি দেওয়া হল তাও ভাবাচ্ছে গোয়েন্দাদের। যদিও ধৃতের আইনজীবীরা ঘটনার সঙ্গে অভিযুক্ত ব্যাংক ম্যানেজারের কোনও সম্পর্ক নেই বলে আদালতে দাবি করেছেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সম্মতি মেলার পরই ব্যাংক ম্যানেজার টাকা ট্রান্সফারে অনুমতি দেন বলে জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবীরা।
এদিকে, ভক্ত এখনও ধরা না পড়ায় সিআইডির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। একটি জামিনের আবেদনের শুনানিতে জেলা জজ ঘটনার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে যেসব প্রশ্ন তুলেছেন তার কোনওটারই উত্তর এখনও মেলেনি। জেলা জজ তাঁর পর্যবেক্ষণে জানিয়েছেন, ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ভূমিকা সন্দেহের ঊর্ধ্বে নয়। কীভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের হেফাজতে থাকা স্থায়ী আমানত প্রকল্পের শংসাপত্র ব্যাংক পর্যন্ত পৌঁছল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন জেলা জজ। দেরিতে অভিযোগ দায়ের করা নিয়েও তির্যক মন্তব্য করেছেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ভূমিকাও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে জেলা জজের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে। যদিও আদালতে পেশ করা সিআইডির রিপোর্টে এ সম্পর্কিত তেমন কোনও তথ্য এখনও পর্যন্ত আদালতে জমা পড়েনি বলে জানা গিয়েছে।

About admin

Check Also

The fifth short film festival was organized in Burdwan

বর্ধমানে আয়োজিত হলো পঞ্চম শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বর্ধমান চলচ্চিত্র চর্চা কেন্দ্রের উদ্যোগে আয়োজিত হলো শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। রবিবার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *