জামালপুর (পূর্ব বর্ধমান) :- জামালপুর থানার আঝাপুরে নিজের বাড়িতে রহস্যজনকভাবে খুন হলেন বর্ধমান আদালতের মহিলা আইনজীবী মিতালী ঘোষ (৫৮)। এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। চাঞ্চল্য ছড়িয়ে জেলার আইনজীবী মহলেও। রবিবার সকালে বাড়ির পরিচারিকা কাজে এসে বেশ কয়েকবার কলিং বেল টিপে সাড়াশব্দ না পেয়ে বিষয়টি প্রতিবেশিদের জানান। ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। মই দিয়ে রান্না ঘরের চালে উঠে এক প্রতিবেশি বাড়ির উঠানে সিঁড়ির পাশে তাঁকে পড়ে থাকতে দেখেন। তাঁর হাত-পা বাঁধা ছিল। শাড়ি অবিন্যস্ত ছিল। মাথায় ভারি কিছু দিয়ে আঘাতের চিহ্ন ছিল। খবর পেয়ে পুলিস দেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তে পাঠায়। ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। পুলিস সুপার সহ অন্যান্য পুলিস আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত করেন। এদিনই বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের মের্গ মৃতদেহের ময়না তদন্ত হয়েছে। ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে এটি খুনের ঘটনা বলে মনে হয়েছে চিকিৎসকের। তবে, খুনের মোটিভ এখনও পরিস্কার নয় পুলিসের কাছে। ঘটনার বিষয়ে মৃতার ভাই গৌরাঙ্গ ঘোষ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। তার ভিত্তিতে খুনের মামলা রুজু হয়েছে। বাড়ির পরিচারিকা ও প্রতিবেশিদের সঙ্গে কথা বলে খুনের মোটিভের বিষয়ে জানার চেষ্টা করছে পুলিস। লুটে বাধা পেয়ে তাঁকে খুন করা হয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিস। পুলিস সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। সম্পত্তিগত কারণে তাঁকে খুন করা হয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সব সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখে তদন্ত করা হচ্ছে।
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মিতালীদেবীর দুই ভাই ও এক বোন। বিবাহিত বোন চৈতালী ওড়িশায় থাকেন। দুই ভাই গৌতম ও গৌরাঙ্গ কর্মসূত্রে হুগলির বালিতে থাকেন। আসানসোলে মিতালীদেবীর বিয়ে হয়েছিল। বিয়ের কিছুদিনের মধ্যেই তাঁর স্বামী মারা যান। তারপর থেকে বাবার বাড়িতে থাকতেন তিনি। দোতলা বাড়ির নীচের তলার একটি ঘরে থাকতেন তিনি। আঝাপুর থেকে বর্ধমানে যাতায়াত করতেন তিনি। তিনি দেওয়ানি মামলা লড়তেন। এদিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, তিনি যে ঘরে থাকতেন সেটি লণ্ডভণ্ড অবস্থায় রয়েছে। জিনিসপত্র চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। কাগজপত্র মেঝেয় পড়ে রয়েছে। গয়নার বাক্স খোলা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। বাক্স থেকে সোনার গয়না উধাও। ইমিটেশনের গয়না মেঝেয় পড়ে রয়েছে। রান্না ঘরের কাছে বাঁধাকপি কাটা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। পাশেই কিছু আলু রয়েছে। তদন্তকারীদের প্রাথমিক অনুমান, সোনার গয়না ও টাকা কড়ি লুট হয়েছে। মৃতার কানে ক্ষত চিহ্ন রয়েছে। কানের দুল ছিনিয়ে নেওয়ার কারণে ক্ষত তৈরি হয়েছে বলে পুলিসের অনুমান। সন্ধে ৬ টা থেকে ৭টার মধ্যে খুনের ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করছে পুলিস। এদিকে জেলা আদালতের আইনজীবীরাও খবর পেয়ে ওই আইনজীবীর বাড়িতে পৌঁছান। বর্ধমান বার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সদন তা জানিয়েছেন, অবিলম্বে পুলিশ এই খুনের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেফতার করুক। এই ঘটনায় অভিযুক্ত কেও ধরা পরলে কোনও আইনজীবী তার হয়ে আদালতে মামলা লড়ব না বলেও জানিয়েছেন সদন তা।
Tags Lawyer lawyer murder Murder
Check Also
বর্ধমানে আয়োজিত হলো পঞ্চম শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল
বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বর্ধমান চলচ্চিত্র চর্চা কেন্দ্রের উদ্যোগে আয়োজিত হলো শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। রবিবার …