বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- পুরসভার পক্ষ থেকে চাকরীর প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রশিক্ষণ দেবার পরও ৬০ জন ছেলেমেয়ে আজও কোনো কাজ না পাওয়ায় বৃহস্পতিবার জেলাশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিলেন চাকরীপ্রার্থীরা। একইসঙ্গে এদিন চাকরীপ্রার্থীরা অভিযোগ করেছেন, তাঁদের যে কাজে নিয়োজিত করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল সেই জায়গায় খোদ বর্ধমান পুরসভার চেয়ারম্যান থেকে বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়কের অনুগতদের কাজ পাইয়ে দেওয়া হয়েছে যোগ্যতা ছাড়াই। চাকরীপ্রার্থীদের এই অভিযোগকে কেন্দ্র করে এদিন চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এদিন বর্ধমান শহরের বাসিন্দা তথা চাকরীপ্রার্থীরা জানিয়েছেন, বর্ধমান পুরসভার পক্ষ থেকে ২০২১ সালের ৪ সেপ্টেম্বর বিজ্ঞাপন দিয়ে জানানো হয় জাতীয় শহুরে জীবিকা মিশন প্রকল্পের আওতায় বর্ধমান পৌরসভা থেকে বেসিক ট্রেনিং কোর্সে বিনামূল্যে কারিগরী প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। চাকরীপ্রার্থীরা জানিয়েছেন, সেই বিজ্ঞাপন দেখে মোট ১০০ জন আবেদন করেন। তাঁদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয় পুরসভার পান্থশালায়। চাকরীপ্রার্থীরা জানিয়েছেন, প্রশিক্ষণের পর তাঁদের সার্টিফিকেট দেবার কথা থাকলেও তা দিতে দীর্ঘদিন গড়িমসি করা হয়। এরপর সার্টিফিকেট পেতে ফের তাঁদের আন্দোলন করতেও হয় বলে জানিয়েছেন চাকরীপ্রার্থীরা। এদিন জেলাশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিতে আসা চাকরীপ্রার্থীরা জানিয়েছেন, তাঁদের জানানো হয়েছিল প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে একটি করে স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরী হবে। সেই কেন্দ্রগুলিতে তাঁদের নিয়োজিত করা হবে। কিন্তু বাস্তবে তাঁরা দেখলেন ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরীর পর খোদ চেয়ারম্যান থেকে বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়কদের লোকজনই সেখানে কাজ পেয়েছেন এবং তাঁরা বেতনও পাচ্ছেন। চাকরীপ্রার্থীদের অভিযোগ, যাঁরা চাকরী পেয়েছেন তাঁদের কোনো প্রশিক্ষণও নেই। এমনকি সপ্তম বা অষ্টম শ্রেণী পাস করারাও কাজ করছেন। চাকরীপ্রার্থীরা জানিয়েছেন, এব্যাপারে তাঁরা দফায় দফায় পুরসভার চেয়ারম্যান থেকে বিধায়কের কাছে তাঁদের বিষয়টি নিয়ে গেছেন। কিন্তু কেউ কোনো উদ্যোগ নেয়নি। এমনকি খোদ বিধায়ক তাঁদের আবেদনপত্র এবং সুডার সার্টিফিকেট ছুঁড়ে ফেলেও দিয়েছেন বলে অভিযোগ। উল্লেখ্য, এই প্রশিক্ষণ যখন দেওয়া হয় সেই সময় বর্ধমান পুরসভার পৌর প্রশাসক হিসাবে ছিলেন প্রণব চট্টোপাধ্যায়। এদিকে, এব্যাপারে এদিন বর্ধমান পুরসভার চেয়ারম্যান পরেশচন্দ্র সরকার জানিয়েছেন, তাঁদের পুরবোর্ড গঠনের আগেই ওই প্রার্থীদের প্রশিক্ষণ হয়ে যায়। ফলে তাঁদের বোর্ডের আমলে কিছু হয়নি। উপরন্তু তিনি জানিয়েছেন, রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তরের নির্দেশ অনুসারে তাঁরা কোনো নিয়োগই করতে পারছেন না। তিনি জানিয়েছেন, পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তর থেকে এ ব্যাপারে যে তালিকা তাঁদের পাঠানো হয়েছিল সেই তালিকা অনুসারেই নিয়োজিত করা হয়েছে। যদিও তিনি স্বীকার করেছেন তাঁর কাছে এই চাকরীপ্রার্থীরা আবেদন করেছেন। এ ব্যাপারে রাজ্যের কাছ থেকে অনুমোদন চাওয়াও হয়েছে। কিন্তু কোনো উত্তর আসেনি। অনুমোদন আসলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিধায়ক খোকন দাসও।
Tags Burdwan Burdwan Municipality Employment Municipal Affairs Municipality non-employment State Urban Development Agency SUDA training Urban Development Urban Development & Municipal Affairs
Check Also
বর্ধমান টাউন হলে শুরু হলো লিটল ম্যাগাজিন মেলা, চলবে ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত
বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- শুক্রবার থেকে শুরু হলো ‘বর্ধমান লিটল ম্যাগাজিন মেলা ২০২৪’। বর্ধমান টাউন …