বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- অসামাজিক কার্যকলাপের প্রতিবাদ করায় এক তৃণমূলকর্মীকে খুনের অভিযোগ উঠল তৃণমূল এক সমর্থকের বিরুদ্ধে। মৃতের নাম সুভাশীষ মহন্ত ওরফে কার্তিক (৪৮)। বাড়ি বর্ধমান শহরের ইছলাবাদ এলাকায়। ঘটনাটি ঘটেছে বর্ধমান শহরের ১০ নং ওয়ার্ডের পারবীরহাটা শ্রীপল্লী এলাকায়। মৃতের পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শনিবার গভীর রাতে বর্ধমান শহরের ১০ নং ওয়ার্ডের সক্রিয় তৃণমূলকর্মী সুভাশীষ মহন্ত ওরফে কার্তিক পারবীরহাটা শ্রীপল্লী এলাকায় একটি হোটেল থেকে খাবার নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। অভিযোগ, সেই সময় শঙ্কর ঘোষ নামে এক ব্যক্তি সুভাশীষ মহন্তকে মারধর করে এবং কানের ভিতরে কোনো কিছু দিয়ে আঘাত করে। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে বর্ধমান হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। কার্তিকের মা মন্দিরা মহন্ত জানিয়েছেন, পুরনো শত্রুতার জেরেই কার্তিককে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে। ছেলে তৃণমূল করত। অন্যায়ের প্রতিবাদ করত। তিনি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান। ছেলের খুনীর ফাঁসি চান তিনি। তিনি জানিয়েছেন, এর আগেও শংকর তাঁর ছেলেকে মারধর করেছিল। হাসপাতালে ভর্তিও ছিল কার্তিক। উল্লেখ্য, এই শংকর ঘোষ বর্ধমান পুরসভার একজন তৃণমূল কাউন্সিলারের গাড়ির চালক ছিলেন। ধর্মরাজ হোটেলের মালিক শিবশংকর চ্যাটার্জ্জী জানিয়েছেন, শনিবার রাতে ৩ জন আসেন। ৫টা রুটি নেন। ১০০ টাকা দেন। এই ৩ জনের মধ্যে কার্তিক ছিল। কার্তিক এবং আরও একজন চলে যান। কিছুক্ষণ পরেই কার্তিক রক্তাক্ত অবস্থায় ছুটে আসে। তাঁর কান ও মুখ দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিল। তারপর টোটোতে চাপিয়ে তাঁরা হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। তিনি জানিয়েছেন, ওরা প্রায়ই আসত রুটি নিতে। টোটোচালক সুজিত ব্যানার্জ্জী জানিয়েছেন, তিনিও রুটি নিতে এসেছিলেন। রুটি নিয়ে তিনি দাম চুকিয়ে ফিরে যাবার সময় কার্তিক এবং সোনা নামে একজনকে ছুটে আসতে দেখেন। কার্তিক রক্তাক্ত ছিল। তিনি তাঁর টোটোতে চাপিয়েই কার্তিককে থানায় নিয়ে যান। সুজিতবাবু দাবী করেছেন, যাবার সময় কার্তিক তাঁকে বলেছেন, শংকর তাঁকে কানে কিছু দিয়ে আঘাত করেছে, তিনি মরে যাবেন। সুজিতবাবু জানিয়েছেন, থানায় কার্তিককে নিয়ে যাবার পর তিনিই হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। সুজিতবাবু জানিয়েছেন, শংকরের সঙ্গে কার্তিকের অনেকদিনের ঝামেলা চলছিল। কার্তিক ভাল ছেলে ছিল, পরোপকারী ছিল। কার্তিকের বন্ধু অভিষেক সিনহা জানিয়েছেন, শংকরের সঙ্গে নরেনের ঝামেলা চলছিল। কার্তিকের জন্য শংকর নরেনকে কিছু করতে পারছিল না। সেজন্য তাঁকে খুন করা হয়েছে। এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, কিছুদিন আগে ইছলাবাদ কাঠেরপুল এলাকায় একজন প্রবীণ সিপিএম নেতাকে মারধরের চেষ্টা করেছিল শংকর। এদিকে, এই ঘটনা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে বর্ধমান থানার পুলিশ। জানা গেছে, এই ঘটনার পর থেকেই শংকর পালিয়ে গেছে। তার খোঁজে পুলিশ তল্লাশি শুরু করেছে।
Tags All India Trinamool Congress Trinamool Trinamool Congress
Check Also
বর্ধমানে আয়োজিত হলো পঞ্চম শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল
বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বর্ধমান চলচ্চিত্র চর্চা কেন্দ্রের উদ্যোগে আয়োজিত হলো শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। রবিবার …