বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- ভারতীয় বন্যপ্রাণী সুরক্ষা আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে কিভাবে নিষিদ্ধ পশু পাখির কেনাবেচা চলছে তা নিয়েই এবার বনদপ্তরের সঙ্গে যৌথভাবে অভিযানে নামতে চলেছে বর্ধমানের একটি পশুপ্রেমী সংগঠন। সূত্রের খবর, কোটি কোটি টাকা কারবারের এই কাজে বাংলাদেশের সরাসরি যোগের সূত্র মিলেছে। সূত্রের খবর, বাংলাদেশের ‘মামা’ নামে এক ব্যক্তি এই চক্রের মূল মাথা। তিনিই দেশী বিদেশী পশু পাখিকে বিভিন্ন দেশে এজেণ্টের মাধ্যমে বিক্রি করেন। সেক্ষেত্রে বর্ডার ম্যানেজ করার মত সবরকমের আঁটঘাট বাঁধা রয়েছে তাঁর। সূত্রের খবর, পশ্চিমবাংলায় মামার এজেণ্ট হিসাবে কাজ করছেন ‘বড়দা’ নামে এক ব্যক্তি। বড়দার অধীনে রয়েছে প্রতিটি জেলায় জেলায় একজন করে এজেণ্ট। জেলাস্তরের সেই এজেণ্টরা বিভিন্ন এলাকায় দুজন করে এজেণ্ট নিয়োগ করে রেখেছেন। তাঁরাই বিভিন্ন পশুপাখি বিক্রির দোকানের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। বর্ধমান শহরের ক্ষেত্রেও দুজন এজেণ্টের হদিশ মিলেছে। সেক্ষেত্রে যে সমস্ত পশু পাখি বেচাকেনায় কোনো সে ধরণের বাধা নেই (যেমন কুকুর ইত্যাদি) তার আড়ালেই চলছে দেদার এই নিষিদ্ধ পশু পাখি কারবার। সূত্রের খবর, মাঝে মাঝেই চাহিদা অনুসারে মামা এই রাজ্যে এই সমস্ত পাখি বা পশু সরবরাহ করেন। সেক্ষেত্রে এক একবারে প্রায় ৫০ লক্ষ থেকে ১ কোটি টাকার কাছাকাছি কারবার হয়। জানা গেছে, বাজারে রীতিমত চাহিদা রয়েছে আলেকজাণ্ডার টিয়া, হিল ময়না প্রভৃতি গোত্রের পাখি। এছাড়াও অত্যন্ত ছোট মাপের এ্যাকোরিয়ামে রাখার জন্য কচ্ছপ, প্যাঙ্গোলিন বা বন রুই-এর চাহিদাও তুঙ্গে। সূত্রের খবর, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই সমস্ত বন্য পশু পাখি যা ভারতীয় আইনানুসারে ও ভারতীয় বাজারে কেনাবেচা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ সেই সমস্ত পশুপাখির লেনদেনের মাধ্যম যেমন ট্রেন, তেমনি বাস বা প্রাইভেট কারের মাধ্যমেও চলছে দেদার এই অবৈধ কারবার। উল্লেখ্য, সাম্প্রতিককালে খোদ বর্ধমানেই ধরা পড়েছে প্রচুর সংখ্যায় কচ্ছপ। যার মধ্যে বেশ কিছু কচ্ছপ ছিল বিরল প্রজাতির। এছাড়াও বাইরে থেকে নিয়ে আসা বেশ কিছু পশু পাখির চোরাচালান মাঝপথেই আটকাতে সক্ষম হন ওয়ার্ল্ড লাইফের সদস্যরা। বর্ধমানের ওই পশুপ্রেমী সংগঠনের সভাপতি অভিজিত মুখার্জ্জী জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই এব্যাপারে পূর্ব বর্ধমান জেলা বনাধিকারিকের সঙ্গে তাঁদের কথা হয়েছে। এই কারবার বন্ধ করার জন্য অভিযানে নামতে চলেছেন তাঁরা। উল্লেখ্য, সম্প্রতি এই ধরণের পশুপাখির অবৈধ কারবার বন্ধ করতে এই সংগঠন অগ্রণী ভূমিকা নেওয়ায় প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে অভিজিতবাবুকে। এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। সম্প্রতি বর্ধমান শহরের বড়নীলপুর বাজারে দুই ব্যক্তি প্রায় ২০টি বিভিন্ন প্রজাতির টিয়াপাখি বিক্রি করতে আসায় তাদের হাতেনাতে ধরেন অভিজিতবাবারু। বনদপ্তরের হাতে সেই সমস্ত পাখিগুলিকে তুলে দেওয়া হয়। অভিজিত মুখার্জ্জী অভিযোগ তোলেন, এই পাখি চোরাচালানে যুক্ত রেলের কিছু কর্মী। আর এরপরেই তাঁকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এব্যাপারে অভিজিতবাবু জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই তিনি প্রশাসনিক সমস্ত জায়গায় মৌখিকভাবে সবকিছু জানিয়েছেন।
Tags Animal lovers
Check Also
বর্ধমানে আয়োজিত হলো পঞ্চম শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল
বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বর্ধমান চলচ্চিত্র চর্চা কেন্দ্রের উদ্যোগে আয়োজিত হলো শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। রবিবার …