বিপুন ভট্টাচার্য, বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বিজেপির ডাকা বনধের পরিপ্রেক্ষিতে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের দূরশিক্ষা বিভাগের পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করেও কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সিদ্ধান্ত বদল করলেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিমাই সাহা জানিয়েছেন, যথারীতি বুধবার সমস্ত পরীক্ষা নেওয়া হবে। উল্লেখ্য, মঙ্গলবার বিজেপির ডাকা বনধের জেরে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের দূর শিক্ষা বিভাগের পরীক্ষা বন্ধের নির্দেশ দেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শুধু দূর শিক্ষা বিভাগই নয় বিভিন্ন কলেজে বুধবার যে প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা ছিল সেই পরীক্ষাও পিছিয়ে দিতে বলা হয়েছিল। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালের উপাচার্য নিমাইচন্দ্র সাহা বলেন, ‘বনধের জন্য দূর শিক্ষা বিভাগের পরীক্ষার দিনও পিছোতে বলা হয়েছিল। বিভিন্ন কলেজে প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষাও বন্ধ রাখতে বলা হয়েছিল। কোথাও পরীক্ষা হলে, আবার কোন কলেজের কোথাও না হলে সমস্যা হবে। তাই বন্ধ রাখার সিধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এদিকে, সরকার যেখানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার কথা ঘোষণা করেছেন, সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় বনধের কারণ দেখিয়ে পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার ঘোষণা করায় শুরু হয় তীব্র আলোড়ন। শুরু হয় সমালোচনাও। আর এই সিদ্ধান্ত ঘোষণার কয়েকঘণ্টার মধ্যেই পাল্টা ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিলেন, কোথাও কোনো পরীক্ষা পিছনো হচ্ছে না। যথারীতি সূচী অনুযায়ীই সব পরীক্ষা নেওয়া হবে। এদিকে, বুধবার বিজেপির ডাকা বনধের পরিপ্রেক্ষিতে শহরের বেশ কয়েকটি ইংরাজি মাধ্যমের স্কুল বন্ধ রাখা হচ্ছে। বনধ নিয়ে প্রস্তুত জেলা প্রশাসনও। জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, বনধের বিষয়ে সরকারের অবস্থান এর আগেও স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। সেই নির্দেশ মেনেই কাজ হবে। কোন সরকারি কর্মী অনুপস্থিত থাকলে নিয়ম মেনেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোথাও কোন সাধারণ মানুষ তার কাজে অসুবিধায় পড়লে প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করলেই পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। সমস্ত সরকারি অফিস, স্কুল, কলেজ খোলা রাখা হবে। প্রতিমুহূর্তেই পরিস্থিতির দিকে নজর রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সমস্ত ধরণের গাড়ি, বাস চলাচল করবে। বাজারহাট সবই খোলা থাকবে। কোন সমস্যা হলে প্রশাসনকে জানাতে বলা হয়েছে। উল্লেখ্য, বিজেপির ডাকা বনধ নিয়ে এদিন তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথ জানিয়েছেন, বিজেপি রাজ্যে অশান্তি করতে চাইছে। সরকার তার মোকাবিলা করবে। মানুষ বনধের রাজনীতিতে বিশ্বাস করেন না। সমস্ত কিছুই স্বাভাবিক থাকবে। অপরদিকে, এদিন বিকালে বিজেপির পক্ষ থেকে বনধের সমর্থনে একটি মিছিলও বের করা হয় ডিভিসি মোড় থেকে বর্ধমান রাজবাটি পর্যন্ত। অন্যদিকে, জেলা পুলিশের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, জেলার জনজীবন সুস্থ ও স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ সমস্ত রকমের ব্যবস্থা নেবে। অতিরিক্ত পুলিশ রাস্তায় থাকবে। কোথাও কেউ জোর করে কিছু করার চেষ্টা করলে পুলিশ আইন মেনেই ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।