বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- ‘মাতৃদুগ্ধ ব্যাংক’ গড়ার উদ্যোগ নিল বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বর্ধমান মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মৌসুমি বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, প্রসূতি মায়েদের বাড়তি দুধ দিয়ে ওই ব্যাংক ভরিয়ে তুলবেন তাঁরা। এর ফলে যে সব সদ্যোজাত বা শিশু নানা কারণে মাতৃদুগ্ধ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, সেই সব শিশুদেরকে ব্যাংক থেকে প্রয়োজন মতো দুধ দেওয়া যাবে। তিনি জানিয়েছেন, বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে প্রতি বছর ২০ হাজারের মতো শিশুর জন্ম হয়। তার মধ্যে ৮ হাজার শিশু অপুষ্টি-সহ নানা কারণে এসএনসিইউতে ভর্তি হয়। এছাড়াও বছরে আরও প্রায় ৪ হাজার শিশুকে বর্ধমান হাসপাতালের এসএনসিইউতে ভর্তি করতে হয়। বর্ধমান হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধান কে এল বারিক জানিয়েছেন, প্রায় ১২ হাজার শিশুর জন্যে দুধ সংগ্রহ করে সংরক্ষিত রাখার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। গতবছর আগস্ট মাসে তাঁরা এব্যাপারে পরিকল্পনা জমা দেন। সম্প্রতি স্বাস্থ্য দপ্তর এব্যাপার সবুজ সংকেত দিয়েছে। উল্লেখ্য, শিশুদের অপুষ্টি জনিত রোগ দূর করতে এবং রোগ প্রতিরোধক শক্তি বাড়াতে সদ্যোজাতদের হলুদ দুধের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে গোটা বিশ্বজুড়ে চর্চা চলছে। শিশুর জন্মের এক ঘণ্টার মধ্যে মায়ের শরীর থেকে যে হলুদ রঙের দুধ নির্গত হয় সেই দুধেই রয়েছে শিশুর রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা ও অন্য অসুখ থেকে মুক্তি পাওয়ার প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণ। অনেক সময়ই মায়ের শারীরিক সমস্যার জন্য নবজাতকরা এই হলুদ দুধ পায় না, আবার হাসপাতালে ভর্তি থাকার সময়েও নানা কারণে মায়ের দুধ পায় না সদ্যজাতরা। ফলে শিশুর দুর্বলতা দেখা দেয়। তাই শিশুদের সুস্থ ও সবল রাখতে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই ‘মাতৃদুগ্ধ ব্যাংক’ গড়ার পদক্ষেপ নিয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের প্রসূতি ও স্ত্রী বিভাগের নীচেই মাতৃদুগ্ধ সংগ্রহ করা হবে। প্রাথমিকভাবে এই প্রকল্পের জন্যে প্রায় ৩১ লক্ষ টাকা খরচ ধরা হয়েছে। উল্লেখ্য, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশ অনুসারে শিশু জন্মের এক ঘণ্টার মধ্যে মায়ের শরীরের এই হলুদ দুধ শিশুকে বাধ্যতামূলক খাওয়াতে হবে। হাসপাতাল সুপার তাপস ঘোষ জানিয়েছেন, নতুন ভবনের সেমিনার রুমে মাতৃদুগ্ধ সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। আশা করা যায়, তিন মাসের মধ্যে এই প্রকল্প শুরু হয়ে যাবে।