বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- সোমবার বর্ধমানের সংস্কৃতি লোকমঞ্চে প্রশাসনিক সভা করার পর শহরের একটি স্কুল, একটি আদিবাসী অধ্যুষিত পাড়ায় সরজমিনে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে গেলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। সংস্কৃতি লোকমঞ্চ থেকে বেড়িয়েই তিনি সরাসরি চলে যান বর্ধমানের ইছলাবাদ বালিকা বিদ্যালয়ে। সেখানে গিয়ে ছাত্রছাত্রী, স্কুলের শিক্ষিকাদের সঙ্গে কথা বলেন। মুখ্যমন্ত্রীকে কাছে পেয়ে এদিন ছাত্রীরা তাঁদের খেলাধূলার সমস্যায় খেলার মাঠের কথা তুলে ধরে। ছাত্রীদের কাছ থেকে এই আবেদন পেয়েই তিনি মাঠ নিয়ে সমস্যার দ্রুত সমাধান করার প্রতিশ্রুতি দেন। উল্লেখ্য, এই স্কুলের মাঠের অর্ধেক অংশ স্কুলের নামে থাকলেও বাকি অংশটি বর্ধমান পুরসভার নামে রয়েছে। ফলে স্কুলের মাঠটি পুরোপুরি স্কুলের দখলে না থাকায় মেয়েরা স্বাধীনভাবে খেলাধূলা করতে বা স্কুল কর্তৃপক্ষের উন্নয়নমূলক কাজ করতে অসুবিধার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। এদিন ছাত্রীদের আবেদন মেনে মুখ্যমন্ত্রী পুরসভার অধীনে থাকা মাঠের অংশটি স্কুলকে দান করেন। পাশাপাশি তিনি স্কুলের উন্নয়ন তহবিলে ১০ লক্ষ টাকা দান করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে যান। এদিকে, ছাত্রছাত্রীদের আবেদন মানায় মুখ্যমন্ত্রীর আব্দারও মেনে নেয় ছাত্রীরা। মুখ্যমন্ত্রীকে তারা ধনধান্যে পুষ্পে ভরা গানটি গেয়ে শোনান। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ভাস্বতী লাহিড়ী জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীকে কাছে পেয়ে তাঁরা এদিন অত্যন্ত খুশী হয়েছেন। গত প্রায় ৯ বছর ধরে মাঠ নিয়ে যে সমস্যা চলছিল যার জন্য তাঁরা পুরসভা এবং প্রশাসনের কাছে বারবার আবেদন জানিয়ে গেছেন এদিন এক লহমায় মুখ্যমন্ত্রী সেই সমস্যার সমাধান করে দিয়ে যাওয়ায় তাঁরা ভীষণ খুশী। এদিকে, এই স্কুল থেকে মুখ্যমন্ত্রী চলে যান তাঁর স্বপ্নের মিষ্টি হাব দেখতে। গাড়ি থেকেই তিনি মিষ্টি হাবের এলাকা দেখেন। এরপর তিনি চলে যান মিষ্টি হাবের পিছনের দিকে থাকা আলিশা রুইদাসপাড়ায়। সেখানে গিয়ে তিনি গ্রামের মহিলাদের সঙ্গে কথা বলেন। মুখ্যমন্ত্রীকে কাছে পেয়ে এদিনগ্রামবাসী শিশু রুইদাস চা ও বিস্কুট খেতে দেন। যদিও মুখ্যমন্ত্রী একটি বিস্কুট স্বপন দেবনাথ এবং অন্য বিস্কুটটি ফিরহাদ হাকিমকে দিয়ে জল ও চান খান। এরপরই তিনি গ্রামবাসীদের কাছ থেকে তাঁদের সমস্যার কথা শোনেন। ঝর্ণা রুইদাস এদিন মুখ্যমন্ত্রীকে জানান, তাঁরা কিছুই পাননি। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বাড়ি এবং প্রতিপালনের জন্য ছাগল চেয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী তা দেবেন বলে জানিয়েছেন। একইকথা বলেছেন শিশু রুইদাসও। তিনি জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী চা খেতে চেয়েছিলেন। তাই চা ও বিস্কুট দিয়েছেন। শিশু রুইদাস জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তিনি বাড়ি,ছাগল, রাস্তা ও ড্রেনের পাশাপাশি খাবার জলের জন্য টিউবওয়েল করে দেবার দাবী জানালে তিনি সঙ্গে সঙ্গে তা দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী এদি্ন জানিয়েছেন, এলাকার মানুষজন তাঁদের কিছু সমস্যার কথা জানিয়েছেন। জেলাশাসককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বিষয়টি দেখার জন্য। এদিকে, আলিশা গ্রাম থেকে মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি চলে যান সার্কিট হাউসে । সেখানে মিনিট খানেক থেকেই ফিরে যান শহরের ঘোড়দৌড়চটি এলাকায় কানাইনাটশালের সেচ বাংলোয়। এদিন মুখ্যমন্ত্রী এই সেচ বাংলোতেই থাকবেন। মঙ্গলবার সকালে তিনি হুগলী চলে যাবেন বলে জানা গেছে। এদিকে, মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক সভা এবং তার পরবর্তী শহর জুড়ে ঘুরে বেড়ানোয় পুলিশ ও প্রশাসনিক কর্তাদের ঘুম ছুটে গেছে।
Tags administrative riview meeting Alisha chief minister Chief Minister Mamata Banerjee mamata banerjee
Check Also
বর্ধমানে আয়োজিত হলো পঞ্চম শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল
বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বর্ধমান চলচ্চিত্র চর্চা কেন্দ্রের উদ্যোগে আয়োজিত হলো শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। রবিবার …