বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বুধবার বর্ধমানের গোদা বালির মাঠে (স্বাস্থ্য উপনগরী) সরকারি সভায় পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান জেলার একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন এবং একাধিক প্রকল্পের শিলান্যাস করবেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, মুখ্যমন্ত্রী মোট ৪৯১ টি প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন যার আর্থিক মূল্য ৩৬৫.৪৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে পূর্ব বর্ধমান জেলায় উল্লেখযোগ্য প্রকল্প গুলি হল, রাস্তাশ্রী প্রকল্পের আওতায় সমগ্র জেলা জুড়ে ৫১৯.৫৮ কিমি. মোট ৩৯০টি রাস্তা নির্মাণ যার আর্থিক মূল্য ১৭৪.৪৯ কোটি টাকা। রায়না-দামিন্যা ভায়া গোতান ১৭.২৫ কিমি. রাস্তা দৃঢ়করণের কাজ যার আর্থিক মূল্য ২৯.৭৯ কোটি টাকা। রায়না-জামালপুর ১০.০০ কিমি. রাস্তা দৃঢ়করণের কাজ যার আর্থিক মূল্য ১৩.৯৫ কোটি টাকা। কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ১০০ শয্যা বিশিষ্ট কোভিড হাসপাতাল ভবন, যার আর্থিক মূল্য ১২.১৬ কোটি টাকা। মৌগ্রাম ও তৎসংলগ্ন মৌজায় নলবাহী পানীয় জল সরবরাহ প্রকল্পের পরিবর্ধন যার আর্থিক মূল্য ১০.৮৩ কোটি টাকা। কুচুট ও তৎসংলগ্ন মৌজায় নলবাহী পানীয় জল সরবরাহ প্রকল্প যায় আর্থিক মূল্য ৯.১১ কোটি টাকা। বর্ধমান পুর এলাকায় পূর্ব বর্ধমান জেলার নব প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ, যার আর্থিক মূল্য ৮.০৩ কোটি টাকা। বর্ধমান মেডিকেল কলেজের নবনির্মিত অক্সিজেন মেনিফোল্ড বিল্ডিং, আর্থিক মূল্য ১.০৫ কোটি টাকা। বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইউরোলোজি মেশিন স্থাপন যার আর্থিক মূল্য ১.০০ কোটি টাকা। কচুরিপানা থেকে হস্তশিল্প সামগ্রী প্রস্তুত প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন, যার আর্থিক মূল্য ৪৭ লক্ষ টাকা। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এর পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী পূর্ব বর্ধমানের মোট ৫৪৭ টি প্রকল্পের শিলান্যাসও করবেন। যার আর্থিক মূল্য ৮৩৭.৮১ কোটি টাকা। এর মধ্যে রয়েছে বর্ধমান আরামবাগ রাস্তা (রাজ্য সড়ক ৭) ৬.৫০ কিমি. হইতে ৩২.৬২৫ কিমি. পর্যন্ত প্রশস্তিকরণ এবং দৃঢ়ীকরণ যার আর্থিক মূল্য ৭৮.৯৫ কোটি টাকা। ২০০ ছেলে এবং ২০০ জন মেয়েদের জন্য নতুন হোস্টেল ভবনের নির্মাণ যার আর্থিক মূল্য ২১.০৬ কোটি টাকা। বিষ্ণুপুর ও তৎসংলগ্ন মৌজায় নলবাহী পানীয় জল সরবরাহ যার জন্য খরচ ধরা হয়েছে ১৬.১১ কোটি টাকা। খণ্ডঘোষের গোপালবেরা ও তৎসংলগ্ন মৌজায় নলবাহী পানীয় জল সরবরাহ যার আর্থিক মূল্য ৯.৮৭ কোটি টাকা। ৩৬ টি বিভিন্ন বিদ্যালয়ে ৩৬ টি সায়েন্স ল্যাব এবং ৩০ টি লাইব্রেরি নির্মাণ করা হবে যার আর্থিক মূল্য ৯.৪০ কোটি টাকা। আরআইডিএফ-২৯ প্রকল্পে পাচুন্দি রেলস্টেশন থেকে আগরডাঙ্গা মোড় মুলগ্রাম পর্যন্ত ১২ কিমি. রাস্তা নির্মাণ। যার আর্থিক মূল্য ৭.৭৩ কোটি টাকা। বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ট্রমা কেয়ার বিল্ডিং নির্মাণ, যার আর্থিক মূল্য ৬.০০ কোটি টাকা। মেমারীর চাঁচাই গ্রামে ইডেন খালের উপর চেন ২৮৭.০০ তে একটি ব্রিজ নির্মাণ যার আর্থিক মূল্য ৪.৫৮ কোটি টাকা। বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ছাত্রাবাস নির্মাণ যার আর্থিক মূল্য ৪.০০ কোটি টাকা। এবং দাঁইহাটে ২ পাম্প অগ্নিনির্বাপণ কেন্দ্র নির্মাণ যার আর্থিক মূল্য ৩.৩৬ কোটি টাকা। প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, মুখ্যমন্ত্রী হেলিকপ্টারে দুপুর ১টা নাগাদ সভাস্থলে পৌঁছাবেন। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, পশ্চিম বর্ধমানেরও বেশ কিছু নতুন রাস্তা, পুরোনো রাস্তার সংস্কার ও সম্প্রসারণ, নতুন প্রশাসনিক ভবন উদ্বোধন, স্বাস্থ্য কেন্দ্র-সহ একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করবেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে দামোদর নদের উপর সেতু তৈরি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী কিছু ঘোষণা করেন কিনা সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছেন জেলাবাসী। কৃষক সেতুর বিকল্প হিসেবে তা নির্মাণ নিয়ে বহুদিন ধরেই চর্চা চলছে। এছাড়াও কালনায় ভাগীরথী নদীর উপর সেতু নির্মাণের কথা রয়েছে। জমি অধিগ্রহণের কাজ প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এই সেতু নির্মাণ নিয়ে কোনও বার্তা দেন কিনা তা জানতেও জেলার বাসিন্দাদের মধ্যে উৎসাহ রয়েছে। এই সেতু নির্মাণ হলে পূর্ব বর্ধমানের পাশাপাশি নদীয়া জেলার বাসিন্দারাও উপকৃত হবেন।
এছাড়া মুখ্যমন্ত্রী গোদার সভা থেকে বিভিন্ন প্রকল্পের উপভোক্তাদের সরাসরি পরিষেবা প্রদান করবেন। জানা গেছে, বুধবার জেলার ৩ লক্ষ ২৬ হাজার ২৮১ জন উপভোক্তাকে বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা তুলে দেওয়া হবে। এরমধ্যে মুখ্যমন্ত্রী সভা মঞ্চ থেকে নিজে পূর্ব বর্ধমানের ৩০ জন ও পশ্চিম বর্ধমানের ২০ জন উপভোক্তাকে সরাসরি পরিষেবা তুলে দেবেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ৩৫ হাজার উপভোক্তাকে সভাস্থলে নিয়ে আসার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। সে জন্যে প্রায় ৫০০ টি বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কোন ব্লক থেকে কত জন আসবেন, সেটাও চূড়ান্ত করেছেন জেলাশাসক। মুখ্যমন্ত্রী হেলিকপ্টারে সভাস্থলে আসবেন। মঞ্চের কাছেই তৈরি হয়েছে অস্থায়ী হেলিপ্যাড। বুধবার হেলিকপ্টারের ট্রায়াল-রানও হয়। মঞ্চ বা সভাস্থলে পৌঁছানোর জন্যে বেশ কয়েকটি অস্থায়ী রাস্তা তৈরি হয়েছে। জেলার বিভিন্ন প্রান্তে প্রচুর গাড়ি আসবে বলে নানা জায়গায় পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। হেলিপ্যাড থেকে মঞ্চ পর্যন্ত আসার পথে আদিবাসী নৃত্য, ঢাক, শাঁখ বাজানোর ব্যবস্থা থাকবে। এ ছাড়াও স্বনির্ভর গোষ্ঠী মহিলাদের হাতের তৈরি জিনিস বিক্রিরও স্টল রাখা হবে।
Tags All India Trinamool Congress chief minister Chief Minister Mamata Banerjee mamata banerjee tmc Trinamool Congress West Bengal Chief Minister Mamata Banerjee
Check Also
বর্ধমানে আয়োজিত হলো পঞ্চম শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল
বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বর্ধমান চলচ্চিত্র চর্চা কেন্দ্রের উদ্যোগে আয়োজিত হলো শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। রবিবার …