বিপুন ভট্টাচার্য, বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- রোগীর সুচিকিত্সার জন্য সিটি স্ক্যান করানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন চিকিত্সক। আর সেই সিটি স্ক্যানের রিপোর্ট এসে পৌঁছালো নির্ধারিত সময়ের অনেক পরে – রোগী মারা যাবার পর। আর এই ঘটনাকে ঘিরেই মঙ্গলবার দুপুরে উত্তাল হয়ে উঠল বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চত্বর। চিকিত্সার এই যে গাফিলতি তা আংশিকভাবে স্বীকারও করে নিয়েছেন এদিন বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সুপার ডা. উত্পল দাঁ। মৃত রোগীর নাম কালাচাঁদ মালিক (৩৬)। বাড়ি দেওয়ানদিঘী থানার খরিড্যা এলাকায়। মৃতের আত্মীয়দের অভিযোগ, বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি মাথার যন্ত্রণা ও বমিতে ভুগছিলেন। এজন্য তাঁকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় প্রায় ১০দিন আগে। হাসপাতালের চিকিত্সকরা তাঁকে দেখে সিটি স্ক্যান করার পরামর্শ দিয়ে কয়েকটি প্যারাসিটামল ট্যাবলেট লিখে দেন। এরপর বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সিটি স্ক্যান বন্ধ থাকায় তাঁকে অনাময় সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে তিনি ১৬ আগষ্ট সিটি স্ক্যান করান। এরপর বাড়ি চলে যান। পরের দিনই তাদের সিটি স্ক্যানের রিপোর্ট হাতে দেবার কথা ছিল। কিন্তু তা দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। এদিকে, রোগের উপসর্গ আরও বাড়ায় কালাচাঁদবাবুকে মঙ্গলবার সকালে ফের বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে আসা হয়। সেখান থেকে তাঁকে পাঠানো হয় রাধারাণী ওয়ার্ডে। কিছুক্ষণ পরই তাঁর মৃত্যু হয়। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, সিটি স্ক্যানের রিপোর্ট তাঁরা সঠিক সময়ে পাননি। রোগী মারা যাবার পর সিটি স্ক্যানের রিপোর্ট এসে পৌঁছায় হাসপাতালে। এরপরই তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে হাসপাতাল জুড়ে। রোগী পক্ষের লোকজন হাসপাতালের সুপারের অফিসের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান এবং চিকিত্সার গাফিলতির অভিযোগ দায়ের করেন। রোগীপক্ষের দাবী সংশ্লিষ্ট চিকিত্সকের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্ত মূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। সঠিক সময়ে সিটি স্ক্যানের রিপোর্ট আসলে কালাচাঁদ মালিকের যথাযথ চিকিত্সা হত। হয়ত তাঁকে বাঁচানোও যেত। এব্যাপারে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সুপার ডা. উত্পল দাঁ চিকিত্সার বিশেষত, সিটি স্ক্যানের রিপোর্টের বিষয়ে গাফিলতির অভিযোগকে আংশিকভাবে স্বীকার করে নিয়েছেন। গোটা বিষয়টি তদন্ত করে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন সুপার। তিনি জানিয়েছেন, নিয়মানুযায়ী যেদিন সিটি স্ক্যান করানো হয় সেই দিনই কিছু সময় পর সিটি স্ক্যান রিপোর্ট দেওয়ার কথা। কিন্তু কেন তা দেওয়া হল না, তানিয়ে তদন্ত করে দেখা হবে। তিনি স্বীকার করেছেন, সিটি স্ক্যান রিপোর্টটিতে দেখা গেছে, ওই রোগীর ব্রেনে টিউমার ছিল। স্বাভাবিকভাবেই সঠিক সময়ে রিপোর্ট আসলে তার যথাযথ চিকিত্সার সুযোগ পাওয়া যেত।
Tags Bardhaman Burdwan Burdwan Medical College & Hospital East Bardhaman East Burdwan Medical Negligence Purba Bardhaman খবর চিকিত্সার গাফিলতি পূর্ব বর্ধমান বর্ধমান বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বাংলা বাংলা খবর সংবাদ
Check Also
বর্ধমান টাউন হলে শুরু হলো লিটল ম্যাগাজিন মেলা, চলবে ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত
বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- শুক্রবার থেকে শুরু হলো ‘বর্ধমান লিটল ম্যাগাজিন মেলা ২০২৪’। বর্ধমান টাউন …