বিপুন ভট্টাচার্য, বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- সাঁতরাগাছি ষ্টেশনে ফুটব্রীজের দুর্ঘটনার জেরে ২জনের মৃত্যু এবং বেশ কয়েকজনের আহত হওয়ার ঘটনা ঘটলেও বর্ধমান ষ্টেশনে এই ধরণের ঘটনার কোনো সম্ভাবনা দেখছেন না যাত্রী থেকে ষ্টেশনের কর্তারাও। যদিও সাঁতরাগাছির ফুটব্রীজ দুর্ঘটনার পরে বর্ধমান জংশনেও জারী করা হয়েছে বিশেষ সতর্কতাও। বর্ধমান ষ্টেশন ম্যানেজার স্বপন অধিকারী জানিয়েছেন, বর্ধমান ষ্টেশনে গড়ে দূরপাল্লা, লোকাল এবং বর্ধমান ষ্টেশনে না দাঁড়ানো এরকম প্রতিদিন প্রায় ৪০০ ট্রেন যাতায়াত করে। গড়ে প্রতিদিন ১ লক্ষ যাত্রী যাতায়াত করে এবং প্রতিদিন গড়ে ৪৯ হাজার টিকিট বিক্রি হয়। যার আর্থিক মূল্য প্রায় ১০ লক্ষ টাকা। স্বাভাবিকভাবেই অন্যান্য ষ্টেশনের তুলনায় বর্ধমান ষ্টেশনে যাত্রীদের চাপ থাকেই। কিন্তু তার জন্য তাঁরাও প্রস্তুত রয়েছেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এই দুর্ঘটনার পর বুধবার বর্ধমান ষ্টেশনের একাধিক যাত্রীদের সঙ্গে কথা বললেও তাঁরা জানিয়েছেন, বর্ধমান ষ্টেশনে যেহেতু দুটি ফুটব্রীজ রয়েছে, তাই স্বাভাবিকভাবেই যাত্রী চাপ থাকলেও তা সামলানোর মত পরিকাঠামো থাকায় তাঁরা এই সমস্যা দেখছেন না। এদিকে, বর্ধমান ষ্টেশন ম্যানেজার স্বপন অধিকারী জানিয়েছেন, সাঁতরাগাছি ফুটব্রীজের দুর্ঘটনার ঘটনায় বর্ধমান রেল ষ্টেশনে আরপিএফ এবং জিআরপি ফোর্সকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। কোনোভাবেই ফুটব্রীজে হুড়োহুড়ি করে যাত্রীরা যাতে ওঠানামা করতে না পারেন সে ব্যাপারে কড়া নজরদারী রাখারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, স্বপনবাবু জানিয়েছেন, বর্ধমান জংশনে রয়েছে ৮টি প্ল্যাটফর্ম। তিনি জা্নিয়েছেন, বিশেষ করে যাত্রীদের চাপ থাকে ১ ও ৩নং প্ল্যাটফর্মের মধ্যে বেশি। সেজন্য বর্ধমান ষ্টেশনে এই প্ল্যাটফর্মগুলির জন্য রয়েছে দুটি ফুটব্রীজ। ফলে সাঁতরাগাছিতে যে দুর্ঘটনা ঘটেছে বর্ধমানের ক্ষেত্রে তার কোনো সম্ভাবনা তাঁরা দেখছেন না। তবুও এব্যাপারে তাঁরা্ সতর্কতা অবলম্বন করেছেন। মঙ্গলবারের এই দুর্ঘটনার জেরে বর্ধমান ষ্টেশনের আরপিএফ এবং জিআরপিকে কড়া সতর্কতা অবলম্বন করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরই পাশাপাশি স্বপনবাবু জানিয়েছেন, টেকনিক্যাল কারণে অনেক সময়ই নির্ধারিত প্ল্যাটফর্মের পরিবর্তে অন্য প্ল্যাটফর্মে গাড়ি দেওয়া হয়। তখন যাত্রীদের মধ্যে তাড়াহুড়ো শুরু হয়। কিন্তু সেক্ষেত্রে আচমকা প্ল্যাটফর্ম পরিবর্তনজনিত কারণে তাঁরা ট্রেন থামার সময়সীমাকে বাড়িয়ে দেন যাতে যাত্রীদের কোনো অসুবিধা না ঘটে। অবশ্য তিনি স্বীকার করেছেন, সেক্ষেত্রে এই বর্ধিত সময়ের বিষয়টি ঘোষণা করা হয় না। প্রসঙ্গত, উল্লেখ্য, দীর্ঘকাল ধরে বর্ধমান ষ্টেশনের যাত্রী এবং নিত্যযাত্রীদের পক্ষ থেকে দফায় দফায় দাবী জানানোর পর অবশেষে বর্ধমান ষ্টেশনে চলমান সিঁড়ি তৈরীর কাজ শুরু হয়েছে। স্বপনবাবু জানিয়েছেন, অনেক দিন ধরেই বর্ধমান ষ্টেশনের জন্য চলমান সিঁড়ির দাবী চলছিলই। একইসঙ্গে রাম্পেরও দাবী উঠেছিল। কিন্তু রাম্পের জন্য প্রয়োজনীয় জায়গা দিতে না পারায় তা কার্যত বাতিলের পর্যায়ে চলে গেছে। তিনি জানান, চলমান সিঁড়ির জন্য প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা তৈরী করে সেই মোতাবেক কাজও শুরু হয়েছে। প্রথম ধাপে ২ ও ৩ প্ল্যাটফর্মে, দ্বিতীয় ধাপে ৪ ও ৫ নং প্ল্যাটফর্মে এবং তৃতীয় পর্যায়ে ৬ ও ৭ নং প্ল্যাটফর্মে কেবলমাত্র ওঠার জন্য এই চলমান সিঁড়ি চালু করা হবে। তিনি জানিয়েছেন, যেভাবে কাজ শুরু হয়েছে তাতে সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ইংরাজী নতুন বছর তথা জানুয়ারী মাসেই বর্ধমান ষ্টেশনের রেলযাত্রীরা পেতে চলেছেন চলমান সিঁড়ি। স্বপনবাবু জানিয়েছেন, আগামী ২ মাসের মধ্যে চলমান সিঁড়ি বসানোর কাজ শেষ হবে। তারপরের ১৫দিন ট্রায়াল রান করার পরই যাত্রীদের জন্য তা খুলে দেওয়া হবে।
Tags Bardhaman Railway Station Burdwan Railway Station Escalator Railway Station
Check Also
বর্ধমানে আয়োজিত হলো পঞ্চম শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল
বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বর্ধমান চলচ্চিত্র চর্চা কেন্দ্রের উদ্যোগে আয়োজিত হলো শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। রবিবার …