Breaking News

“শাহজাহানকে প্রয়োজনে এনকাউন্টার করা হতে পারে” আশঙ্কা মহম্মদ সেলিমের

CPI(M) State Secretary Md Salim at the memorial service of Pradip Ta and Kamal Gayen

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- শুধু সন্দেশখালি নয়, রাজ্যের বহু জায়গাতেই সন্দেশখালির মত ঘটনা ঘটছে। ডিজি লঞ্চে গিয়ে সন্দেশখালি ঘুরে এসে বললেন, মানুষের সমস্ত অভিযোগের বিচার হবে। তাহলে এখনও শাহজাহানকে কেন গ্রেপ্তার করতে পারল না পুলিশ। আজ ডিজি সন্দেশখালিতে গিয়ে মানুষকে আশ্বাস দিলে মানুষ শুনবে? মানুষ বিশ্বাস করবে? এমন একটা লোককে ডিজি করা হয়েছে যাকে চিটফান্ড মামলায় লাল ডায়েরি, পেন ড্রাইভ প্রভৃতি সরাতে ব্যবহার করা হয়েছিল। তাঁকে মানুষ বিশ্বাস করবে? বৃহস্পতিবার বর্ধমান সংস্কৃতি লোকমঞ্চে প্রয়াত সিপিআই(এম) নেতা প্রদীপ তা এবং কমল গায়েনের স্মরণসভায় বক্তব্য রাখতে এসে সন্দেশখালি নিয়ে একথা বলে গেলেন সিপিআই(এম)-এর রাজ্য সম্পাদক তথা পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম। তিনি এদিন বলেন, ওই ডিজি সন্দেশখালি গিয়েছিলেন শাহজাহানের সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্কের তথ্য লোপাট করার জন্য। শাহজাহানকে পুলিশ এবং প্রশাসনের অতিথি করে রাখা আছে কোথাও। সেখানে তাঁকে শেখান হচ্ছে ধরা পড়লে কোর্টে গিয়ে কী বলতে হবে। সেলিমসাহেব এদিন আশঙ্কা ব্যক্ত করে বলেন, যদি তথ্য লোপাট করতে না পারে তাহলে এনকাউণ্টারও করা হতে পারে শাহজাহানকে। পুলিশ গেল, পুলিশের ডিজি গেলো, সারারাত কত তামাশা হল। উনি বললেন সব ঠিক করে দেবো। যত অপরাধী আছে তাদের ধরবেন, শাস্তি দেবেন। আমরা প্রথম দিন থেকে বলছি রাজ্য সরকার অপরাধীদের সরকার হয়েছে। পুলিশ অপরাধীদের পাহারা দিচ্ছে। তাঁরা গিয়ে দেখেছেন অপরাধের জগৎ যাতে ঠিকমতো চলে। স্মাগলিং, ঘর চুরি, টাকা চুরি তার সাথে জমি চুরি, পুকুর চুরির ব্যবস্থা যাতে ঠিমকত হয়। সবাই মনে করলেন উনি গেছেন গ্রেফতার করতে, তিনি নাম বললেন না। ডিজি বললেন যেই অপরাধ করবে তাকেই ধরবেন। তার মানে সাংবাদিক, সম্পাদক, বিরোধী রাজনৈতিক দলের কর্মীকে ধরবেন। নিরাপদ সর্দারকে গ্রেফতার করা হয়েছে শিবু হাজরার অভিযোগে। অথচ শিবু হাজরা নিজেই গণধর্ষণে অভিযুক্ত। সেলিম বলেন, মানুষকে কেন আইন নিজের হাতে তুলে নিতে হচ্ছে। কারণ রক্ষক যদি ভক্ষক হয় তখন এই ধরনের ঘটনা ঘটে। এটা একটা সন্দেশখালি নয় বীরভূম, হাওড়া, কোচবিহার বিভিন্ন জেলায় এরকম কয়েক ডজন সন্দেশখালি রয়েছে। তৃণমূল, পুলিশ, প্রশাসন, পঞ্চায়েত সহযোগে মুক্তাঞ্চল তৈরি করেছে। রাজ্য সরকার, রাজ্য প্রশাসনের সরকারের টনক যদি এখনও না নড়ে। তাহলে কোন টনিকে টনক নড়ে সেটা দেখতে হবে। CPI(M) State Secretary Md Salim at the memorial service of Pradip Ta and Kamal Gayen সন্দেশখালি খেলার মাঠের পাশে শাহজাহানের নাম মোছা নিয়ে তিনি বলেন, পুলিশের কাজ কি শুধু এটাই মুছে দেওয়া। অপরাধীরা তাদের স্বর্গরাজ্য পেয়েছে। খেলাধুলার জায়াগাগুলোও পিসি-ভাইপো-কাকা দখল করে নিয়েছে। আর খেলা হবে নাম করে পঞ্চায়েতের টাকা লুট করছে। ৭৫-২৫ শতাংশের তত্ত্ব যতদিন না খারিজ হচ্ছে ততদিন পর্যন্ত লুটের এই স্বর্গরাজ্য ভাঙা যাবে না। সেলিম বলেন, সন্দেশখালি আর নবান্নের মাঝের সংযোগের দায়িত্ব রাজীব কুমার নিয়েছেন। যে-রকম চীটফান্ডের সব কিছু মেটানোর দায়িত্ব নিয়েছিলেন। এই জন্যই মমতা তাঁকে সবকিছু টোপকে ডিজিপি করেছেন। অমিত শাহ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সহযোগিতা করেছেন। শাহজাহানকে কোন পুলিশ খুঁজবে? দু-দিন আগে রাজীব কুমারকে তো ইডি, সিবিআই খুঁজছিল। তারপর কী হলো সেই কেসটা? এটা তো বিজেপিকে বলতে হবে। মানুষ তো অভিযোগ করছেন। কিন্তু রাজ্য বা কেন্দ্রের কমিশনগুলো কী করছে? সব কমিশনখোর। ২০১১ সালের পর থেকে তৃণমূল ও ২০১৪ সালের পর থেকে বিজেপি সবকটা কমিশনের পদগুলো দলের লোক দিয়ে ভরিয়ে দিয়েছে। কখনই কোনও মানুষের কাজে লাগছে না। রাজনৈতিক স্বার্থে যখন দরকার হয় তখন ঝাঁপি থেকে বের করা হয়। মমতা, অমিত শাহ, মোদি চাইলে কমিশন থেকে আসে, আবার ফিরে যায়। কিন্তু তার রিপোর্ট দিয়ে কী হয়? এগুলো থেকে মানুষের আস্থা উঠে গেছে। যতক্ষণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, পুলিশ ও তৃণমূলের হাত মস্তানদের মাথায় থাকবে ততদিন তাদের দাপট আছে। যাদের আমরা জমি দিয়েছিলাম, সেই জমিগুলো কেড়ে নিয়েছে। কাকুর কণ্ঠস্বর সংগ্রহ নিয়ে নাটক হল। এবার উকিলকে সরিয়ে দেওয়া হলো। নীচের তলার লোককে গরম করা হচ্ছে, উপর তলায় সেটিং হচ্ছে। তিনি এদিন বলেন, কালীঘাটের কাকুর কণ্ঠস্বর সংগ্রহ নিয়ে নাটক চলেছে। একটা কণ্ঠস্বর সংগ্রহ করতে মাসাধিককাল সময় নেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেই কণ্ঠস্বরে কি পাওয়া গেল? কেনই বা এনিয়ে সিবিআই ইডির কণ্ঠস্বর পাওয়া যাচ্ছে না? তিনি এদিন বলেন, বুদ্ধিজীবীরা পরিবর্তন চেয়ে একটা বাম সরকারের পরিবর্তন চেয়েছিলো। কিন্তু বাস্তবে আইন ব্যবস্থারই পরিবর্তন করা হয়েছে। লুঠেরা লুঠতরাজ করছে। প্রধানমন্ত্রীর ছাতি ৫৬ ইঞ্চি কেউ জানেন? জানেন না। একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানেন। কেননা একমাত্র তিনিই প্রতি পুজোতে তাঁকে পাঞ্জাবী কিনে পাঠান।
উল্লেখ্য, এদিন এই স্মরণসভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আভাষ রায় চৌধুরি, অঞ্জু কর, রাজ্য কমিটির সদস্য অমল হালদার, অচিন্ত্য মণ্ডল, জেলা সম্পাদক সৈয়দ হোসেন, প্রদীপ তা-এর স্ত্রী চিত্রলেখা তা, মেয়ে পৃথা তা প্রমুখ।

About admin

Check Also

Doctor Birupaksha Biswas was transferred to Kakdwip a year ago, did not go

এক বছর আগেই কাকদ্বীপে বদলি করা হয় চিকিৎসক বিরূপাক্ষকে, যাননি; ক্যান্টিন মালিক আইনের পথে

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বিতর্কিত চিকিৎসক বিরূপাক্ষ বিশ্বাসকে এক বছর আগেই স্বাস্থ্য দপ্তর বদলির নির্দেশ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *