গণেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এক বন্দির মৃ্ত্যু হয়েছে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পুলিস সেলে। মৃতের নাম ব্রজমোহন হাজরা ওরফে নবান (৭৩)। মন্তেশ্বর থানার বাঘাসন গ্রামে তাঁর বাড়ি। সাজা ঘোষণার পর থেকে তিনি বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে কনডেমড সেলে ছিলেন। সেখানেই শনিবার দুপুরে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাসপাতালের পুলিস সেলে রেখে তাঁর চিকিৎসা শুরু হয়। সোমবার গভীর রাতে তিনি মারা যান। তাঁর মৃত্যুর বিষয়ে একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু হয়েছে। বর্ধমান আদালতের দ্বিতীয় জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কল্লোল ঘোষকে বিচার বিভাগীয় তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের মরগে মৃতদেহের ময়না তদন্ত হয়েছে। ময়না তদন্তের ভিডিওগ্রাফি করা হয়েছে। তাঁর মৃত্যু সংবাদ রাজ্য মানবাধিকার কমিশন ও কারা দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া বিষয়টি জেলা জজ ও বর্ধমানের সিজেএমকে জানানো হয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, স্ত্রীকে খুনের দায়ে গত বছরের ৫ জানুয়ারি তাঁকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা শোনান কালনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক তপন কুমার মণ্ডল। কালনা আদালতের ইতিহাসে প্রথম ফাঁসির সাজা এটি। ২০০৭ সালে ৩০ জুন তাঁর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন মুির্শদাবাদের সালারের বাসিন্দা বিমল চন্দ্র ঘোষ। তাঁর অভিযোগ ছিল, ২৯ জুন তিনি বাঘাসন গ্রামে দিদির বাড়িতে বেড়াতে আসেন। একটি টেবিল ফ্যান দেওয়াকে কেন্দ্র করে জামাইবাবু ব্রজমোহনের সঙ্গে তাঁর দিদি নমিতা হাজরার অশান্তি হয়। কিছুক্ষণ পর বাড়ির দোতলায় নমিতাকে বগি দিয়ে কোপান ব্রজমোহন। ঘটনাস্থলেই নমিতা (৪৮)-এর মৃত্যু হয়। স্ত্রীকে খুনের পরই ব্রজমোহন গা-ঢাকা দেন। ২৩ জুলাই তাঁকে পুলিস গ্রেপ্তার করে। জামিন পাওয়ার পর তিনি ফের গা-ঢাকা দেন। ২০১৭ সালের ২৩ অক্টোবর তাঁকে ফের গ্রেপ্তার করে পুলিস। তারপর মামলার শুনানি হয়। ১৬ জনের সাক্ষ্যের ভিত্তিতে তাঁকে ফাঁসির সাজা শোনান বিচারক।