E Purba Bardhaman

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে কুকথায় দুঃখ প্রকাশ করেও সুর চড়ালেন দিলীপ ঘোষ

Dilip Ghosh raised the tone even as he expressed regret for the bad words about the Chief Minister

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- ভাঙবেন, তবু মচকাবেন না। নিজের করা মন্তব্য নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করলেও কার্যত নিজের বক্তব্যেই অনঢ় থাকলেন বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ। মঙ্গলবার সকালে দুর্গাপুরের সিটি সেন্টার এলাকায় প্রাতঃভ্রমণে বেড়িয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে কু-কথা বলেন দিলীপ। তা নিয়ে নির্বাচন কমিশনে তাঁর প্রার্থীপদ বাতিল-সহ শাস্তির দাবিতে স্মারকলিপি দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। এমনকি এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে খোদ বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব দিলীপবাবুকে শোকজও করেছেন। এই ধরনের মন্তব্য দলের পরম্পরা বিরোধী বলে কড়া বার্তাও দেওয়া হয়েছে তাঁকে। আর বুধবার বর্ধমানে প্রচারাভিযানে বেড়িয়ে এই প্রসঙ্গেই দিলীপ ঘোষ জানান, ”আমার বক্তব্য নিয়ে বিতর্ক প্রথমবার নয়। কারণ যে ভণিতা করে, অন্যায় করে, আমি তার সামনে বলি। মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী, যার সাথে আমার কোনো ব্যক্তিগত ঝগড়া নেই, যার সম্বন্ধে আমার মনে কোনো ক্লেশ নেই। উনি লোককে বিভ্রান্ত করার জন্য বারবার রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়েছেন। আমি তার প্রতিবাদ করে প্রশ্ন করেছি। আমার ভাষা শব্দ প্রয়োগ নিয়ে বহু লোকের আপত্তি আছে, পার্টিও বলেছে, অন্যরাও বলেছে। বলেছে অসংসদীয়। যদি তাই হয় আমি তার জন্য দুঃখিত। কিন্তু তাঁরই পার্টির (তৃণমূল কংগ্রেস) পরিবার এক নেতা কাঁথিতে গিয়ে আমার বিধায়কের নামে, তাঁর পরিবারের নামে এর থেকেও খারাপ খারাপ কথা বলবে, গালাগালি দেবে কেন? মান সম্মান নেই? তাঁর বাবা একজন বরিষ্ঠ রাজনীতিবিদ, তার মান সম্মান নেই? তখন তো টিএমসির কেউ প্রতিবাদ করে না। এই ধরনের যারা শুরু করেছে, রোজ বাপান্তর করা হচ্ছে, শুভেন্দু অধিকারী পুরুষ বলে তার সম্বন্ধে? তাঁর বাবার সম্মান নেই? কেবল মহিলা বলে তাঁর সম্মানের প্রশ্ন উঠবে?” দিলীপবাবু এদিন বলেন, “অফিসিয়াল চিঠির উত্তর অফিসিয়ালি দেব।” অন্যদিকে, কৃষ্ণনগরের মহুয়া মিত্রকে তৃণমূল স্টার ক্যাম্পেনার হিসেবে না রাখা সম্পর্কে দিলীপবাবু বলেন, এটা ওদের পার্টির ব্যাপার। প্রার্থী পাওয়া যাচ্ছে না বলে দাগি প্রার্থীদের সব নিয়ে আসতে হচ্ছে। না পেলে বিহার থেকে খুঁজতে খুঁজতে গুজরাট পর্যন্ত যেতে হচ্ছে। কৃষ্ণনগর চৈতন্য মহাপ্রভুর স্মৃতি বিজড়িত সেখানকার একজন সাংসদ দিয়ে পার্লামেন্টে যা মুখে আসছে তাই বলছে। সেই রকম ব্যক্তিকে কেউ কি ভোট দেবেন? আমরা তাঁর সামনে একজন রাজ পরিবারের এক রাজমাতাকে রেখেছি এবার ওখানকার মানুষের দায়িত্ব কাকে ভোট দেবেন। টিকিট না পাওয়া রুদ্রনীলের বিস্ফোরক বক্তব্য সম্পর্কে দিলীপবাবু বলেন, পার্টিতে বহু লোক এসেছেন, অ্যাপ্লাই করেছেন, যারা পুরোনো নেতারা তাঁরাও চেয়েছেন। অনেকেই টিকিট চেয়েছে। পার্টি সবার কথা ভেবেছে। তারপরে যেটা ঠিক মনে হয়েছে সেটা ঘোষণা করেছে। আমরা পার্টির সৈনিক হিসেবে সেটা মেনে নিয়েছি। এখনো বাকি আছে কিছু ঘোষণা। সর্বোচ্চ নেতৃত্ব এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। মাদক-কারবারি অভিযোগে বারাসাতের বিজেপি প্রার্থীকে নিয়ে বিক্ষোভের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সব জায়গায় কিছু ক্ষোভ বিক্ষোভ থাকে। বসিরহাটে প্রার্থী হয়েছে সন্দেশখালীর লড়াইয়ে মুখ তিনি। তারাই তাঁর বিরুদ্ধে প্ল্যাকার্ড নিয়ে প্রতিবাদ করছিল। কিন্তু পরে তারাই বলছে জিন্দাবাদ, বিজেপিকে ভোট দেবো। রাজনীতিতে অনেক খেলা চলে, কি হয়েছে? কেন হয়েছে? ওখানকার লোক বলতে পারবে। আমি স্বপনকে চিনি, পার্টির লড়াকু নেতৃত্ব, তাঁকে পার্টির মুখ করেছে, বাকিটা পার্টি দেখবে। স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহাকে ইডির তলব সম্পর্কে তিনি বলেন, ডাকাডাকি চলছে, চলতেই থাকবে। ইডি সিবিআই-এর বিরুদ্ধে কৃষ্ণনগর দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচনী প্রচার শুরু করছেন ৩১ মার্চ, ১ এপ্রিল বহরমপুরে। হারা সিট দিয়ে শুরু করছেন। এই সব জায়গায় রেজাল্ট কী হবে বুঝতে পারছেন। উল্লেখ্য, এদিন সকালে বর্ধমান টাউন হল প্রাঙ্গণে চায়ে পে চর্চার পর দিলীপবাবু সর্বমঙ্গলা মন্দিরে পূজাও দেন। পরে দলীয় কার্যালয়ে সাংগঠনিক বৈঠক করেন।

Exit mobile version