E Purba Bardhaman

তৃণমূলের আহত কর্মীকে দেখতে হাসপাতালে ছুটলেন দিলীপ ঘোষ

Dilip Ghosh went to the hospital to see the injured Trinamool supporter

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে আহত এক তৃণমূল কর্মীকে দেখতে হাসপাতালে গেলেন দিলীপ ঘোষ। শনিবার এই ঘটনায় চর্চা শুরু হয়েছে। জানা গেছে, গলসীর মনোহর সুজাপুর এলাকার বাসিন্দা স্বপন মল্লিক ইদের আগেরদিন রাতে স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি ফেরার সময় তাঁকে বাইক থেকে নামিয়ে লাঠি রড দিয়ে মারা হয়। এমনকি ধারালো অস্ত্রের কোপ মারা হয় বলে অভিযোগ। গুরুতর জখম হন তৃণমূল কর্মী স্বপন মল্লিক। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে বর্ধমান মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। অভিযোগ ১০০ দিনের কাজের টাকা নিয়ে দুর্নীতির প্রতিবাদ করায় তৃণমূলের অপর গোষ্ঠীর লোকজন মারধর করে। ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার তাঁকে দেখতে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে আসেন বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ। তাঁর সাথে কথা বলার পাশাপাশি তাঁর পরিবারের লোকজনের সঙ্গেও কথা বলেন দিলীপবাবু। দিলীপবাবু জানিয়েছেন, একশ দিনের টাকা চুরি,শৌচালয়ের টাকা, আবাস যোজনার টাকা লুঠ হওয়ার প্রতিবাদ করায় তাঁকে মারধর করা হয়েছে। তিনি তৃণমূল করেন, মারধর করেছে তৃণমূলেরই লোকজন। মানবিক কারণে তাঁকে দেখতে আসেননি তিনি। এদিকে, শনিবার সকালে বর্ধমান জেলা কৃষি খামারে প্রাতঃভ্রমণ যান দিলীপ ঘোষ। পরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় একটা শাখা আছে এখানে। সেখানে আমরা গিয়েছিলাম মর্নিং ওয়ার্ক করতে। ভিতরে ঘুরলাম । এই ৬০০ কোটি টাকা খরচা করে কেন্দ্রের সাহায্য, রাজ্যের টাকা, এখানে ভূতের আড্ডা হয়েছে। কৃষি বলে কিছু দেখলাম না। ধান চাষ হয়েছে যেটা, পাশে গিয়ে দেখুন আমাদের চাষিরা তার চেয়ে অনেক ভালো করেছে। সেখানে তিল চাষ হয়েছে তার চেয়ে অনেক ভালো হয়। কেন এটা রাখা হয়েছে? হাতি পোষা হয়েছে? এই কৃষি খামারে মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের মাটি তীর্থ কৃষি কথা এলাকা দেখে দিলীপবাবু বলেন, এসব ভালো ভালো নাম মুখ্যমন্ত্রী লিখে দিয়েছেন। কৃষিকথা, মুখ্যমন্ত্রীর জন্য হেলিপ্যাড তৈরি হয়েছে, গেস্ট হাউস তৈরি হয়েছে, চাষীদের জন্য কি হয়েছে? ৬০০ কোটি টাকা চাষীদের ট্যাক্সের টাকায় এটা চলছে। কি হয় এখানে? কি পেয়েছে চাষিরা? আগে নাকি শুনতাম ধানের ইত্যাদির বীজ দেওয়া হতো এখন তো সেটাও বন্ধ হয়ে গেছে। এই ধরনের টাকা অপচয় করে কিছু নিজের লোককে পোষার ব্যবস্থা হয়েছে। সাধারণ মানুষের ট্যাক্সের টাকা নষ্ট করে এই বিশাল হাজার হাজার বিঘা জমি কৃষকরা দিয়ে দিয়েছে কিন্তু তিন ফসলি জমি আর সেগুলো বেকার, নষ্ট হচ্ছে আর ভূতের আড্ডা আর লুট চলছে। সরকারকে এই অধিকার কে দিয়েছে। তিনি বলেন, কোনো পরিকাঠামো নেই। আমি দেখলাম এত বড় পাঁচিল ঘেরা প্রোজেক্টের জায়গা। তার মধ্যে আবার বিরাট বড় তার কাঁটার বেড়া দেওয়া হচ্ছে, কি আছে ওখানে? কেন তারকাঁটা? ফাঁকা জমির মধ্যে, খালি টাকা খরচা করে লুটের ব্যবস্থা হচ্ছে। সরকারের দেখা উচিত এটা। বিভিন্ন ধরনের চাষের এক্সপেরিমেন্ট হতে পারতো, বিকল্প চাষ, আজকে গতানুগতিক চাষে লাভ নেই বলে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ফরেন থেকে অনেক ফল, ফুল এসেছে, ড্রাগনের মত বা আপেল কুল এগুলো যদি এক্সপেরিমেন্ট হতো ট্রেনিং হতো চাষীরা অনেক লাভবান হতো। ভোটের প্রচারে গিয়ে কি ধরনের সমস্যা উঠে আসছে তার উত্তরে দিলীপবাবু বলেন, শিল্প ও কৃষি দুটোই জর্জরিত। শিল্পও বন্ধ হয়ে গেছে, আজ নয় সেই সিপিএমের আমল থেকে। হাজার হাজার লোক বেকার, বাকিগুলো ধুঁকছে। প্রশ্ন করছে বিজেপি কেন খুলছে না? বন্ধ কে করেছে? বিজেপি যেগুলো খোলার খুলবে। কৃষিতেও তাই। জল নেই, ড্যামের জল কমে গেছে। ফলে কৃষির অনেক জমি পড়ে আছে চাষ করতে পারছেন না ওনারা। অন্যদিকে, শুক্রবার প্রথম ভোটের পর তৃণমূলের বিজয় মিছিল করা নিয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, এসব ড্রামাবাজি চলবে। ৪ জুনের পর বোঝা যাবে কে কোথায় আছে। টিএমসি যত হারছে, তত গলার আওয়াজ করছে, সবাইকে দোষ দিচ্ছে, নির্বাচন কমিশন থেকে আরম্ভ করে সেন্ট্রাল ফোর্স থেকে আরম্ভ করে সবাইকে গালাগাল দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। যদি জিতছেন তো গালাগালি দিচ্ছেন কেন? টেনশনটা আমরা বুঝি। সবই চাপ, সেই চাপটা এমন বাড়বে আস্তে আস্তে সব ঘর ঢুকে যাবে। শক্তি নায়েকের দলত্যাগ সম্পর্কে তিনি বলেন, উনি আমাদের ক্যান্ডিডেট ছিলেন গতবারের। তারপরে গণ্ডগোলের সময় দাঁতন ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। দিল্লিতে ছিলেন। কর্মীরা ওনাকে স্বীকার করছিলেন না, কাজও করতে পারছিলেন না, অনেকদিন ধরে উনিও বলছিলেন। সংকটের সময় আপনি ছেড়ে পালিয়ে গেছেন আপনাকে স্বীকার করবে কেন, তাই হয়েছে। বিধায়ক খোকন দাস বলেছেন বিপুল পরিমাণে ভোটে হারিয়ে আপনাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেবে। এর উত্তরে তিনি বলেন, উনি আগে নিজের সিটটা ধরে রাখুন,ওখানেই লিড নেব আমরা এবারে। মারপিট করে, ভয় দেখিয়ে, গুন্ডা রেখে আর সুবিধা করতে পারবেন না, তাহলে ভিতরে যেতে হবে।

Exit mobile version