Breaking News

মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরই আলিশা গ্রামের মানুষের হাতে পৌঁছে গেল ছাগল, হাঁস ও মুরগী এলাকার নাম মমতা নগরী করার প্রস্তাব মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের ~ মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরই প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ আলিশা গ্রামের মানুষের হাতে ছাগল, হাঁস ও মুরগী পৌঁছে দিলেন

Animal Resources Development Minister Swapan Debnath delivers Goat, Duck and Chick to the people of Alisha village soon after the Chief Minister's announcement

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- সোমবার বর্ধমানের সংস্কৃতি লোকমঞ্চের সভার পর শহর লাগোয়া যে আলিশা গ্রামের দাসপাড়ায় গিয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় সেই এলাকার নাম মমতানগরী বা মমতা কলোনী করার প্রস্তাব দিলেন রাজ্যের প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি মত দাসপাড়ার বাসিন্দাদের হাতে ছাগল, হাঁস ও মুরগী প্রদান করতে স্বপনবাবু এলাকায় যান। এলাকার মানুষের সামনেই তিনি এদিন এই নামকরণের প্রস্তাব রাখেন। Animal Resources Development Minister Swapan Debnath delivers Goat, Duck and Chick to the people of Alisha village soon after the Chief Minister's announcement এব্যাপারে বিডিওকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার আবেদন করেন স্বপনবাবু। উল্লেখ্য, বৈকন্ঠপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের আলিশা গ্রামের মধ্যে রয়েছে ৫টি পাড়া ঘোষপাড়া, কুমোরপাড়া, দাসপাড়া, জামতলা এবং পুলপাড়া। প্রায় ৫০০ পরিবারের বাস। অধিকাংশই ক্ষেতমজুর, দিনমজুর। উল্লেখ্য, প্রশাসনিক সভায় বসে মুখ্যমন্ত্রী সরকারী বিভিন্ন প্রকল্পে সাধারণ মানুষ কি কি সুবিধা পাচ্ছেন, আদপেও সেই সরকারী সুবিধা তাঁরা পাচ্ছেন কিনা সে বিষয়ে দফায় দফায় প্রশ্নবাণে জর্জরিত করেন সরকারী আমলাদের। কখনও বাংলা আবাস যোজনা আবার কখনও ১০০ দিনের কাজে জবকার্ড নিয়েও তিনি জানতে চান। Animal Resources Development Minister Swapan Debnath delivers Goat, Duck and Chick to the people of Alisha village soon after the Chief Minister's announcement প্রায় ২ ঘণ্টার প্রশাসনিক বৈঠকের পর একদিকে জনসংযোগ এবং অন্যদিকে, সরকারী রিপোর্টের বাস্তবতা খতিয়ে দেখতে হাজির হয়েছিলেন আলিশা দাসপাড়ায়। দাসপাড়ায় ঢুকে সেখানে শম্ভু রুইদাসের বাড়ির দাওয়াতে বসে চা-ও খান। চা খেতে খেতেই তিনি পাড়ার মহিলাদের কাছ থেকে তাঁদের অভাব অভিযোগ শোনেন। খোদ মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের বাড়ির দাওয়ায় বসে চা খাচ্ছেন – এই ঘোর কাটতে না কাটতেই গ্রামের মহিলারা অভিযোগ করেন, তাঁরা সরকারী কোনো সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন না। Animal Resources Development Minister Swapan Debnath delivers Goat, Duck and Chick to the people of Alisha village soon after the Chief Minister's announcement এমনকি রাস্তাঘাট, ড্রেন, পানীয় জলেরও অভাব রয়েছে। গ্রামের কয়েকজন মহিলা বাংলা আবাস যোজনায় বাড়়ি, প্রতিপালনের জন্য ছাগল, হাঁস মুরগীও চেয়ে বসেন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। তত্ক্ষণাত মুখ্যমন্ত্রী জেলাশাসককে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবার নির্দেশ দেন। এরই পাশাপাশি তাঁর সঙ্গী রাজ্যের প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথকে ওই পরিবারগুলোর দাবী মেনে মঙ্গলবার বিকালের মধ্যেই তাঁদের হাতে ছাগল, হাঁস মুরগী দেবার নির্দেশ দিয়ে যান। মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতির সেই ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই মঙ্গলবার বিকালে প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ দাসপাড়ার ১২টি পরিবারের মধ্যে ১০টি পরিবারের হাতে তুলে দিলেন একটি করে ছাগল এবং পরিবার পিছু ৫টি করে হাঁস ও মুরগী। Animal Resources Development Minister Swapan Debnath delivers Goat, Duck and Chick to the people of Alisha village soon after the Chief Minister's announcement দাসপাড়ার বাকি দুটি পরিবারের হাতে হাঁস ও মুরগি দিলেও এদিন ছাগল দেওয়া হয়নি। পরে দেওয়া হবে। এরই পাশাপাশি পাশের কুমোরপাড়া এবং জামতলার মোট ১৩টি পরিবারের হাতেও হাঁস ও মুরগির বাচ্চা তুলে দেন তিনি। স্বপনবাবু এদিন জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে নির্দেশ দিয়েছিলেন এদিন বিকালের মধ্যেই যেন এই পরিবারগুলোর হাতে পৌঁছে যায় ছাগল এবং হাঁস মুরগী। তিনি মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনেই এদিন দাস পাড়ার মোট ১২টি পরিবারের হাতেই এই সরকারী সহায়তা তুলে দিলেন। তবে কেবল দাসপাড়ায় নয়, আশপাশের পাড়াগুলিতেও যাঁরা ছাগল ও হাঁস মুরগী পালনে আগ্রহ দেখাবেন তাঁদের হাতে তা তুলে দেওয়া হবে। Animal Resources Development Minister Swapan Debnath delivers Goat, Duck and Chick to the people of Alisha village soon after the Chief Minister's announcement স্বপনবাবু এদিন জানিয়েছেন, গোটা রাজ্যে ১ কোটি হাঁস ও মুরগীর বাচ্চা দেবার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের। পূর্ব বর্ধমান জেলায় ৬৫ হাজার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই এই হাঁস ও মুরগীর বাচ্চা দেওয়ার কাজ চলছে। প্রসঙ্গত, স্বপনবাবু এদিন জানিয়েছেন, গোটা রাজ্যে প্রতিদিন ২ কোটি ডিমের চাহিদা রয়েছে। বর্তমানে রাজ্যের উত্পাদিত ডিম চাহিদার ১ কোটি ৬৫ লক্ষ মেটাতে সক্ষম হয়েছে। তাঁরা আশা করছেন আগামী বছরের মধ্যে ডিমের চাহিদা মেটাতে তা আর বাইরে থেকে আমদানি করতে হবে না। বাংলাই স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে যাবে। এদিন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ ছাড়াও হাজির ছিলেন সভাধিপতি শম্পা ধাড়া, জেলাশাসক বিজয় ভারতী, অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) প্রবীর চট্টোপাধ্যায়, সদর বর্ধমান উত্তরের মহকুমাশাসক পুষ্পেন সরকার, বর্ধমান ২ ব্লকের বিডিও অদিতি বসু, বিধায়ক সুভাষ মণ্ডল, জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ বাগবুল ইসলাম,বৈকুণ্ঠপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শর্মিলা মল্লিক, স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যা মিতা দাস প্রমুখরাও। এদিন ছাগল, হাঁস, মুরগী দেবার পর স্বপনবাবু শম্ভু রুইদাসের বাড়ির উঠানেই সকলকে ডেকে পাঠান। সেখানেই স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে জনসংযোগের কাজটি সেরে ফেলেন। গতকালই মুখ্যমন্ত্রীকে তাঁরা যে যে সমস্যার কথা জানিয়েছিলেন এদিন সেগুলি লিপিবদ্ধ করা করা হয়। বাসিন্দারা এলাকার ঢালাই রাস্তা মেরামত, পিএইচই-র পানীয় জল সরবরাহ প্রকল্প, বৃদ্ধ ভাতা প্রভৃতি বিষয় সম্পর্কে জানান। এই সময় মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ গ্রামবাসীদের কাছে জানতে চান সামাজিক সুরক্ষা যোজনা গ্রামবাসীরা করিয়েছেন কিনা? গ্রামবাসীরা জানান না। এরপরই তিনি পঞ্চায়েত সদস্যা মিতা দাসকে ডেকে ১৫ দিনের মধ্যে গ্রামবাসীদের সামাজিক সুরক্ষা যোজনার অন্তভূর্ক্ত করার নির্দেশ দেন। গ্রামবাসীদের স্বপনবাবু জানান, যদি কাজ না হয় তাহলে পঞ্চায়েত সদস‌্যাকে ঝাঁটা নিয়ে তাড়া করবেন। এদিন গ্রামবাসীরা এলাকায় মদ বিক্রি বন্ধেরও দাবী জানান। পাশাপাশি মহিলাদের গোষ্ঠী তৈরী করে স্কুল ড্রেস, মাশরুম চাষ করার প্রস্তাব রাখেন। গ্রামবাসীদের অভিযোগ সমস্ত কিছুই নথীভুক্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে যান স্বপন দেবনাথ। প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেন বিডিও এবং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শ্যামল দত্ত এবং গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানকেও।

About admin

Check Also

Doctor Birupaksha Biswas was transferred to Kakdwip a year ago, did not go

এক বছর আগেই কাকদ্বীপে বদলি করা হয় চিকিৎসক বিরূপাক্ষকে, যাননি; ক্যান্টিন মালিক আইনের পথে

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বিতর্কিত চিকিৎসক বিরূপাক্ষ বিশ্বাসকে এক বছর আগেই স্বাস্থ্য দপ্তর বদলির নির্দেশ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *