E Purba Bardhaman

দিলীপ ঘোষের প্রচারে এবার হাতপাখা; বললেন, পদ্মের গন্ধযুক্ত মিষ্টি হাওয়া

Hand fan was used in Dilip Ghosh's election campaign

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে চলছে তীব্র তাপপ্রবাহ। রবিবারও বর্ধমানে জায়গায় জায়গায় তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি ছুঁইছু্ঁই। তাই এবার ভোট প্রচারে দিলীপের অস্ত্র হাতপাখা। তীব্র গরমে পথ চলতি মানুষকে কিছুটা স্বস্তি দিতে হাত পাখা বিলি করলেন বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ। এব্যাপারে দিলীপবাবু জানান, গেঞ্জি, টুপি, পাখা দেখুন প্রচারে নতুনত্ব আনতে হবে। আজকাল কেউ ভাষণ শুনতে চায় না। সবাই সবাইকে জানে। মানুষের প্রয়োজনটা বুঝতে হবে। আমরা বুঝি, সকলে চা খেতে হয়। চায়ের কাপে পদ্ম ফুলের ছবি দিয়ে দিলীপ দা লিখেছি আমরা। এখানে প্রচণ্ড গরম পড়েছে। এত গরম সহ্য করা যাচ্ছে না। গ্রামে যাচ্ছি মায়েরা আঁচল দিয়ে হাওয়া খাচ্ছেন, দাওয়ায় বসে হাতপাখা নাড়ছেন। আমার মনে হয়েছে মানুষের হাতে যদি হাতপাখা দিই, সে দোকানদার হোক, পথ চলতি মানুষ হোক বা গ্রামের মানুষ – তাঁদের এটা কাজে লাগবে, আপনারাও হাওয়া খেয়ে দেখতে পারেন, পদ্ম ফুলের কী সুন্দর মিষ্টি হাওয়া। টিএমসির লু নয়, বিজেপির মিষ্টি হাওয়া। টিএমসি’র তো গরম হাওয়া, আমাদের একদম ঠান্ডা, মিষ্টি, পদ্ম ফুলের গন্ধের হাওয়া। রবিবার বর্ধমান টাউন হলে প্রাতঃভ্রমণে আসেন দিলীপ ঘোষ। এদিন তাঁর সঙ্গে দেখা করেন বর্ধমান শহরের একজন বিউটি পার্লারের মালিক। সম্প্রতি তাঁর পার্লারকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এদিন দিলীপবাবু বলেন, দেখুন কী অবস্থা। একজন মহিলা নিজে দাঁড়িয়ে বিউটি পার্লার চালাতেন। প্রধানমন্ত্রী মহিলাদের জন্য এত প্রোজেক্ট এনেছেন, তাঁরা যাতে স্বাবলম্বী হন। বাড়িঘর দিচ্ছেন। এখানকার মুখ্যমন্ত্রী একজন মহিলা, তাঁর রাজ্যে তাঁর এমএলএ খোকন তাঁর বৈধভাবে ভাড়া দিয়ে চালানো বিউটি পার্লার বন্ধ করে দিচ্ছেন। কীসের মামদোবাজি এত? বাপের জমিদারি পেয়ে গেছেন নাকি এগুলো? যা ইচ্ছা করবে নাকি। লুটপাট, মারকাট, ঝান্ডা তুলে দিচ্ছে, কোর্ট রায় দেওয়ার পরেও প্রশাসন খুলছে না। প্রশাসন নপুংসক হয়ে বসে আছে। একজন এমএলএ যে একজন সমাজবিরোধী, সে আজকে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন, একজন মহিলার উপর অত্যাচার করছেন, আর ওরা মহিলা-মহিলা করে বেড়াচ্ছেন। কীর্তি আজাদকে বলছি, তোমার চোখ থাকলে দেখে যাও, তোমার এমএলএ মহিলাদের কী ব্যবহার করছে, দিলীপ ঘোষকে শেখাতে হবে না। আমি বলে যাচ্ছি এখানে দাঁড়িয়ে, ভোটের পরে যদি খুলে না দেয়, দিলীপ ঘোষ এই তালা খুলে দেবে, ভেঙ্গে দেবে হাতুড়ি দিয়ে, কোনও অত্যাচার করতে দেবো না। মহিলাদের ওপর তো নয়ই। আপনি নিশ্চিন্তে থাকুন, দেখে নিচ্ছি আমরা। এদিন দিলীপবাবুকে জিজ্ঞাসা করা হয় তৃণমূল বলছে আপনার রাজনৈতিক সন্ন্যাসের সময় হয়ে গেছে। তার উত্তরে তিনি বলেন, কে সন্ন্যাস নেবে, কে জেলে যাবে সেটা তো লোক ঠিক করবে, কে দেশ ছাড়া হয়ে বাংলাদেশে চলে যাবে, সেটা তো ৪ তারিখের পর জানা যাবে। তারা জানে যে তাদের কোনো চান্স নেই। তাই বিজয় উৎসব পালন করে দিচ্ছে। দিলীপবাবু বলেন, যার জীবনী কেউ লিখবে না, সে নিজের জীবনী লিখে যায়। যার স্ট্যাচু কেউ বানাবে না, সে নিজের স্ট্যাচু বানিয়ে যায়। আর যারা জিৎ-এর উৎসব করতে পারবে না তারা আগেই বিজয় উৎসব করে। তিনি বলেন, রেজাল্ট বের হওয়ার পর তখন তো তুর্কি নাচ নাচবে। এখন বাজনা বাজিয়ে নাচে নাচুক, সে নাচটা দেখবে ওরা।
সবুজ সাথি সাইকেল বাংলাদেশের হাটে বিক্রি হওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে দিলীপবাবু এদিন বলেন, আমরা বাংলাদেশে চাল ডাল এসব পাঠানো হয় জানতাম। গরুও পাঠানো হতো, সবুজ সাথীর সাইকেলে যে যাচ্ছে এটা এখন জানা গেল। আর কত নিচে নামবে? এখানকার মানুষের ট্যাক্সের টাকা বিলি করে ভোট পাচ্ছে আবার বিদেশেও পাচার করে দিচ্ছে। টিএমসি নেতাদের টাকা অ্যাম্বুলেন্সে করে বাংলাদেশে গেছে। এই যে এখানকার মানুষকে দিনের পর দিন শোষণ, অনৈতিক কাজ করে যাচ্ছে। আমার মনে হয় পুরো সমাজ বিরোধীদের হাতে পার্টিটা চলে গেছে। সোমবার এসএসসি-র চূড়ান্ত রায় দেবে আদালত, তার আগে শুভেন্দুকে বলতে শোনা যাচ্ছে আগামী সপ্তাহে বিস্ফোরণ হবে, তৃণমূল কংগ্রেস বেসামাল হয়ে পড়বে। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, এরকম অনেক ঘটনা ঘটেছে, আশা করছি তা হবে এবং যেটা বাস্তব পরিস্থিতি সেটাই হবে। প্রত্যেকটা কেসেতে টিএমসি সরকার হারছে কারণ তারা অন্যায় করেছে, তার বিচার শুরু হয়েছে তারা সাজা পাবে, যে মানুষ লড়াই করছে তারা সুবিচার পাবে। দূরদর্শনের লোগো গেরুয়া করা প্রসঙ্গে মমতার বক্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, আগে যে বন্দে ভারত ট্রেন বেড়িয়েছিল তার রঙ ছিল নীল সাদা। সবাই বলল দিদির রং দাদার রেলে। আজকে গেরুয়া বেরিয়েছে, মেরুনও বেরিয়েছে, পরিবর্তন তো হবেই। সব নীল সাদা কেন? গেরুয়া তো দেশের প্রতীক পরম্পরা, সব জায়গায় গেরুয়া থাকা উচিত। দূরদর্শনের অধিকার আছে তারা কোন লোগোটা ব্যবহার করবে। তারা তো মমতা বন্দোপাধ্যায়ের বিশ্ববাংলা লোগো লাগাবে না। অভিষেক বলছে বিজেপিকে বিসর্জনের বার্তা দিয়ে বাংলার মহিলারা সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করবে। তার উত্তরে এদিন দিলীপবাবু বলেন, ওটা গিয়ে একবার সন্দেশখালিতে বলুন, বাংলার মহিলারা কি করবেন, তারা সন্দেশখালিতে ঘুরে ঘুরে প্রচার করবে চারিদিকে, তাদের উপর কি রকম অত্যাচার হয়েছে তা বলছেন, তার জবাব ওনারা পাবেন।

Exit mobile version