বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বড়সড় ডাকাতির ছক কষেছে বিহারের একটি গ্যাং। ইতিমধ্যেই পূর্ব বর্ধমান জেলার কালনা, কাটোয়া এবং বর্ধমান শহরে তারা রেইকিও করা শুরু করেছে। আর তাই বড়সড় এই ঘটনা রুখতে গোটা জেলার সমস্ত সোনা-রূপা ব্যবসায়ীকে সন্ধ্যে সাড়ে সাতটার মধ্যে দোকান বন্ধ রাখার জন্য নির্দেশ দিল জেলা পুলিশ। একইসঙ্গে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে সন্দেহভাজন কয়েকজন ব্যক্তির ছবিও সোনারূপা ব্যবসায়ীদের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়া ওই ব্যক্তিদের যে ছবি প্রকাশ করা হয়েছে তাতে দেখা গেছে ওই সন্দেহভাজন ব্যক্তিরা সোনা-রূপার দোকানের সামনেই ঘোরাফেরা করছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোটা জেলা জুড়েই ব্যাপক আতংকের সৃষ্টি হয়েছে স্বর্ণশিল্পী তথা সোনা-রূপা ব্যবসায়ীদের মধ্যে। বৃহস্পতিবার বর্ধমান সদর স্বর্ণশিল্পী ওয়েলফেয়ার সোসাইটি সম্পাদক স্বরূপ কোনার জানিয়েছেন, বুধবার সন্ধ্যে প্রায় ৭টা নাগাদ বর্ধমান থানা থেকে পুলিশ ও সিভিক ভলেণ্টিয়াররা এসে বর্ধমান শহরের স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের জানিয়ে যান- বিহার থেকে একটি বড় গ্যাং ঢুকেছে। তাই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। প্রত্যেক ব্যবসায়ীদের এব্যাপারে সতর্ক থাকারও নির্দেশ দিয়ে যান পুলিশ কর্মীরা। এদিকে, এই ঘটনার পরই গোটা জেলা জুড়েই সমস্ত স্বর্ণব্যবসায়ীদের সতর্ক করেছে জেলা পুলিশ। এরই মাঝে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে কালনায়। যেহেতু কালনা থেকে সহজেই নদীয়া যাওয়া যায় তাই অপরাধীরা অপরাধ সংগঠিত করে যাতে পালিয়ে যেতে না পারে সেজন্য বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হয়েছে কালনার ক্ষেত্রে। স্বরূপ কোনার জানিয়েছেন, সম্প্রতি করোনার জেরে সমস্ত ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও সংকট নেমে এসেছে জুয়েলারী ব্যবসাতেও। একদিকে করোনার সংকট কাটিয়ে উঠে দাঁড়ানো এবং তার সঙ্গে সোনা-রূপার দাম বাড়ায় তাঁরা ক্রমশই কোণঠাসা হয়ে পড়ছেন। আর এই অবস্থায় বিহারের গ্যাংয়ের এই দৌরাত্মের আগাম খবর পেয়ে তাঁরা আতংকিত হয়ে পড়েছেন। স্বরূপবাবু জানিয়েছেন, বুধবার সন্ধ্যায় পুলিশের কাছ থেকে এই খবর পাওয়ার পরই পুলিশের পাশাপাশি তাঁরাও রাত্রিকালীন পাহারাকে জোরদার করতে উদ্যোগী হয়েছেন। উল্লেখ্য, স্বরূপবাবু জানিয়েছেন, ২০১৫ সালের পর বর্ধমান শহরে একের পর এক জুয়েলারী দোকানে ডাকাতি, ছিনতাই, কেপমারি প্রভৃতির পর তাঁরা নিজেরাই দফায় দফায় বড়বাজার সোনাপট্টি এলাকা থেকে বড়বাজার, বিসিরোডে প্রায় ৪৩টি সিসিটিভি ক্যামেরা লাগান। বর্তমানে এগুলি পুলিশ দেখভাল করছে। তিনি জানিয়েছেন, বিহারের এই গ্যাংয়ের খবর আগাম পুলিশ তাঁদের কাছে দেওয়ায় তাঁরা সতর্ক হলেও যেহেতু বারে বারেই বর্ধমানে এই ধরণের ঘটনা ঘটছে তাই এই এলাকাগুলিতে নিয়মিত পুলিশী টহলের দাবী উঠেছে। উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১৭ জুলাই খোদ বর্ধমান শহরের জনবহুল বিসিরোডে প্রকাশ্য দিনের বেলায় একটি স্বর্ণ বন্ধকী সংস্থার অফিসে হানা দিয়ে ডাকাতদল ৩০ কেজি ২০৫ গ্রাম ২০ মিলিগ্রাম সোনা নিয়ে চম্পট দেয়। এছাড়াও শহরের কেন্দ্রস্থল কার্জন গেটের পাশে কয়েক বছরের মধ্যে দুটি ব্যাঙ্কে পরপর ডাকাতিরও ঘটনা ঘটে। ফলে সবমিলিয়ে এই পুলিশী সতর্কতা নিয়ে রীতিমত আতংকের মধ্যে পড়েছেন স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা। এদিকে, এই বিষয় সম্পর্কে জেলা পুলিশের কেউই মুখ খুলতে রাজী হননি।
Tags Bihar's criminal Bihar's criminal gang Bihar's gang Gold gold traders jewellery Jewellery traders traders
Check Also
বর্ধমানে আয়োজিত হলো পঞ্চম শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল
বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বর্ধমান চলচ্চিত্র চর্চা কেন্দ্রের উদ্যোগে আয়োজিত হলো শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। রবিবার …