পূর্বস্থলী (পূর্ব বর্ধমান) :- প্রকৃতিকে আমরাই ধ্বংস করছি, তাই প্রকৃতিও আমাদের শিক্ষা দিচ্ছে। আমরা সচেতন হতে না পারলে প্রকৃতিই আমাদের ধ্বংস করে দেবে। সোমবার পূর্বস্থলীর বিদ্যানগরে ‘খাল-বিল-চুনো মাছ, পিঠে পুলি ও প্রাণী পালন উৎসব’-এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসে একথা বলে গেলেন পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজী। তিনি এদিন বলেন, আমরাই খালবিল, জলাশয় বুজিয়ে দিচ্ছি। আমরা বুঝতে পারছিনা, কি ভয়ংকর বিপদ ডেকে আনছি আমরা। প্রকৃতির ভারসাম্যকে আমরা নষ্ট করছি। এ ব্যাপারে আমাদের সকলকে সজাগ হতে হবে। উল্লেখ্য, পূর্বস্থলীর বাঁশদহ ও চাঁদের বিলকে কেন্দ্র করে আয়োজিত এই উৎসব এবছর ২৩ বছরে পা দিল। প্রতিবছরই রাজ্যের বর্তমান প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের উদ্যোগে এবং খাল-বিল ওয়েলফেয়ার সোসাইটির পরিচালনায় এই উৎসবের আয়োজন করা হয়। মূলত জলাশয়গুলিকে রক্ষা করা এবং তারই সঙ্গে বাংলার হারিয়ে যাওয়া পুঁটি, খলসে, মৌরলা প্রভৃতি চুনোমাছকে বাঁচিয়ে তোলার লক্ষ্য নিয়েই এই উৎসবের আয়োজন করে থাকেন স্বপনবাবু। এদিন তিনি জানিয়েছেন, ইতোমধ্যেই বিদ্যানগর এলাকায় চুনো মাছের প্রজননকেন্দ্র গড়ে তোলা হচ্ছে। হচ্ছে বাটারফ্লাই গার্ডেন। এদিন এই উৎসবের উদ্বোধন করেন রাজ্যের মৎস্য দপ্তরের মন্ত্রী বিপ্লব রায়চৌধুরী। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিজ্ঞান ও জৈব প্রযুক্তি দপ্তরের মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস, পূর্ব বর্ধমান জেলাপরিষদের সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহার, সহকারী সভাধিপতি গার্গী নাহা-সহ প্রাণী সম্পদ ও মৎস্য দপ্তরের আধিকারিকরাও। উৎসবকে সফল করার আহ্বান জানিয়ে ইতোমধ্যেই আয়োজিত হয়েছে দু’টি শোভাযাত্রা। গত শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) দোলগোবিন্দপুর মুড়ি গঙ্গার পার থেকে দক্ষিণ শ্রীরামপুর অটো স্ট্যান্ড পর্যন্ত শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। রবিবার (২৪ ডিসেম্বর) শোভাযাত্রা করা হয় বড় কোবলা বাঁশদহ বিলের পাড় থেকে চাঁদের বিল মুন্সী পাড়া ঘাট পর্যন্ত। ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে এই উৎসব। স্বপনবাবু জানিয়েছেন, এই দু’দিন ধরে বাঁশদহ বিলের ভাসমান মঞ্চ এবং চাঁদের বিল ও বাঁশদহ বিলের পাড়ে একাধিক মঞ্চে চলবে সানাই, পল্লিগীতি, বাউল ও ভাটিয়ালি গান। এছাড়াও আয়োজিত হবে আঁকা প্রতিযোগিতা। বিলের জলে তালের ডিঙি, নৌকা বাইচ ও সাঁতার প্রতিযোগিতা। মৎস্য ও প্রাণী পালনের সচেতনতা শিবির। সন্ধ্যায় বিলের জলে কলার ভেলায় মাটির প্রদীপ ভাসানো-সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।