আউশগ্রাম ও বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- জুনিয়র ডাক্তার আর মাওবাদীদের মধ্যে কোনো তফাত দেখছি না বলে রবিবার পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রাম ২ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের বিজয়া সম্মিলনীতে এসে মন্তব্য করে গেলেন তৃণমূল নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, জুনিয়র ডাক্তাররাও হুমকি দিচ্ছেন, শর্ত মানুন না হলে তাঁরাও মানুষ মারার খেলায় নামবেন। স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে ধর্মঘট মানে কী? সে তো মানুষ মারার খেলাতেই নামা। দেবাংশু ভট্টাচার্য বলেন, কাদম্বিনীর মৃত্যুকে নিয়ে অহেতুক রাজনীতি করছে চিকিৎসক ও বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। চক্রান্ত করছেন বাংলার স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে পঙ্গু করে দেওয়ার জন্য। স্বাস্থ্য সাথি কার্ড শুরু হওয়ায় বেসরকারি হাসপাতালগুলি চিকিৎসকদের একাংশের ইনকাম কমে গেছে। আবার বাংলাদেশে অস্থিরতার জন্য পশ্চিমবঙ্গের বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে আর বাংলাদেশ থেকে রোগী আসছিলো না। এর ফলে এদের ব্যবসা লাটে উঠতে বসেছিল। স্বাস্থ্য মাফিয়ারা সুযোগের অপেক্ষায় ছিল। আর কাদম্বিনীর মৃত্যুর পর, এই সুযোগটার সদ্ব্যবহার করলো বেসরকারি হাসপাতালগুলি আর চিকিৎসকদের একাংশ। জুনিয়র ডাক্তারদের ভুল বুঝিয়ে এরা অনশন করাচ্ছে আর কর্মবিরতি করাচ্ছে, এতে বাংলার গরিব মানুষের ক্ষতি হচ্ছে। এদিকে, তৃণমূল কংগ্রেসের সোশ্যাল মিডিয়া এবং আই টি সেলের প্রধান দেবাংশুর এই মন্তব্যের এদিন তীব্র সমালোচনা করে গেলেন বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক লকেট চট্টোপাধ্যায়। বর্ধমানের জেলা বিজেপি অফিসে আসেন তিনি। এদিন তিনি দেবাংশুর এই মন্তব্য প্রসঙ্গে বলেন, জুনিয়র ডাক্তাররা বিচার চেয়েছেন, অনশনে বসে আছেন। ওনারা বিচার ছাড়া সব কিছু করছেন। ১০ দফা দাবি বাদে তাঁদেরকে ছোট করার জন্য এই ধরনের কথা বলছেন। দেবাংশুর কী অউকাত আছে। ডাক্তাররা মানুষের কাছে ঈশ্বর, তাঁদেরকে এই ধরনের কথা বলা। লজ্জা লাগে। হ্যাঁ, অনেকে তাঁদেরকে ব্যবহার করে রাজনীতি করতে এসেছে। কিন্তু জুনিয়র ডাক্তারদের মধ্যে সেটা কখনও দেখা যায়নি। বিজেপি এদের সঙ্গে আছে। তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের ডাক্তারদের সম্পর্কে সম্প্রতি ১৩ দফা দাবি প্রসঙ্গে লকেট বলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই আছেন। তাহলে এতদিন ধরে জিনিসগুলো চলছে। আজ কেন হঠাৎ করে বলছেন। তাঁরা অনশন করছেন বলে। আজ হঠাৎ করে খেয়াল পড়ল ওষুধ কোম্পানিগুলোর বিষয়গুলি। উল্লেখ্য, শনিবার কালনায় তৃণমূলের বিজয়া সম্মিলনীতে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কালনার বিধায় দেবপ্রসাদ বাগ বিচারকদের কাঠগড়ায় তুলেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সেই প্রসঙ্গে লকেট এদিন বলেন, বিচার একটা নিরপেক্ষ জায়গা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের হাতে আইন তুলে নিয়ে হিটলারি শাসন চালাচ্ছেন। তাঁদের মুখে এই ধরনের কথা মানায় না। হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্টের বিচার তাঁদের পক্ষে না গেলেই বিজেপির লোক বলেন। তিনি বলেন, নিরপেক্ষ কোন নির্বাচন করলেই তৃণমূল জিততে পারবেন না। অনেক টাকা-পয়সা-সহ অনেক কিছুই এর সাথে জড়িয়ে আছে বলে স্বাস্থ্য সচিবকে তিনি সরিয়ে দিতে পারছেন না। উনি এত নিষ্ঠুর হতে পারেন যতদিন যাচ্ছে আমরা জানতে পারছি। বিভিন্ন জায়গায় এই ধরনের ঘটনা ঘটছে। আমরা নিশ্চিত সিবিআই ভালো তদন্ত করছে। জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনকে সমর্থন করি কিন্তু তাঁদেরকে নিয়ে যারা রাজনীতি করতে চাইছে তাঁদেরকে সমর্থন করিনা। তাঁরা রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চাইছে। আন্দোলনকে ঘুরিয়ে দিতে চাইছে।
Check Also
বর্ধমানে আয়োজিত হলো পঞ্চম শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল
বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বর্ধমান চলচ্চিত্র চর্চা কেন্দ্রের উদ্যোগে আয়োজিত হলো শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। রবিবার …