বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- গাঙ্গেয় ডলফিন-সহ অন্যান্য জলজ প্রাণীর সংরক্ষণের বিষয় নিয়ে বর্ধমানে আয়োজিত হল বিশেষ আলোচনাসভা। শনিবার পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বন বিভাগের উদ্যোগে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের দূরশিক্ষা ভবনের সভাকক্ষে আয়োজিত এই সভায় মালদা, নদীয়া, মুর্শিদাবাদ, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, উত্তর ২৪ পরগণা, দক্ষিণ ২৪ পরগণা, পূর্ব মেদিনীপুর এবং পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছিলেন। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল তথা বন বাহিনীর প্রধান সৌমিত্র দাসগুপ্ত। মূলত গঙ্গা তীরবর্তী এলাকাগুলির জেলাগুলিকে নিয়ে এদিন সভাটি আয়োজিত হয়। সৌমিত্র দাসগুপ্ত জানিয়েছেন, আমরা সাধারণত বাঘ, হাতি, গণ্ডার, লেপার্ড -এই সমস্ত প্রাণীর সংরক্ষণের বিষয়ে আলোচনা করে থাকি। কিন্তু বায়োলজিক্যাল গুরুত্ব আছে এমন অনেক প্রাণী নিয়ে আমরা তেমন আলোচনা করিনা। এদিন বর্ধমানে সেই ধরণের প্রাণী নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। সৌমিত্র দাসগুপ্ত জানিয়েছেন, পূর্ব বর্ধমান জেলার মধ্যে দিয়ে গঙ্গা নদী এবং তার শাখানদী-উপনদী বয়ে গেছে। যেখানে মাঝেমাঝে ডলফিন দেখতে পাওয়া যায়। এদিন এই ডলফিন এবং তার সাথে ঘড়িয়াল এবং ভোঁদড়-সহ অন্যান্য জলজ প্রাণী সংরক্ষণের বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, এই সমস্ত প্রাণী এখন আর সেভাবে দেখা যায় না। তাই আমরা ইকোসিস্টেম রক্ষা করতে সংরক্ষণের বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে এই সমস্ত প্রাণীকে ফিরিয়ে আনতে চাই। এদিনের আলোচনায় উপস্থিত প্রতিনিধিরা অনেক ধরনের পরামর্শ দিয়েছেন। শীঘ্রই ‘ডলফিন মিত্র’ নামে একটি প্রোজেক্ট শুরু করা হবে। ডলফিন রক্ষার জন্য নদীতে পেট্রোলিং বাড়ানো হবে। কীভাবে ডলফিন গণনা করা যায়, সেবিষয়েও এদিন বিশেষজ্ঞদের সাথে আলোচনা করা হয়েছে। এর পাশাপাশি সৌমিত্র দাসগুপ্ত জানিয়েছেন, জলজ প্রাণী সংরক্ষণ করতে হলে জল পরিষ্কার রাখতেই হবে। এই বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। তার জন্য কী কী করতে হবে। কোন কোন দপ্তরের সাথে কথা বলতে হবে সে সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। এবং ফিল্ড লেভেল আধিকারিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তাঁদের প্ল্যান এবং প্রোগ্রাম দ্রুত দপ্তরে জমা দেবেন। জাপানি প্রোজেক্ট ‘জাইকা’ এবং ভারত সরকারের পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের ‘ক্যাম্পা’ প্রোজেক্ট-এর অর্থ দিয়ে এই আর্থিক বছর থেকেই সংরক্ষণের কাজ শুরু করা হবে। গঙ্গা তীরবর্তী এলাকার মানুষজন এবং মৎস্যজীবীরাও এই প্রোজক্টের আওতায় আসবেন। মৎস্যজীবীদের কীভাবে সংরক্ষণের প্রক্রিয়ায় আনা যাবে সে বিষয়ে এদিন আলোচনা করা হয়েছে। সম্প্রতি কাটোয়ায় ডলফিন মৃত্যু প্রসঙ্গে সৌমিত্র দাসগুপ্ত জানিয়েছেন, কার্ডিওরেসপিরেটরি ফেইলিওর কারণে মৃত্যু হয়েছে। শিকারীদের হাতে বা মৎস্যজীবীদের জালে আটকে ডলফিনটির মৃত্যু হয়নি।
===================