বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- রাস্তায় সোনার মতো দেখতে ধাতব পদার্থ ফেলে রেখে লোক ঠকানোর একটি চক্রের হদিশ পেয়েছে পুলিস। চক্রের একজনকে গ্রেপ্তার করেছে বর্ধমান থানার পুলিস। ধৃতের নাম তালেব শেখ। বর্ধমান শহরের খোসবাগানের আমবাগান এলাকায় তার বাড়ি। ধৃতের কাছ থেকে ৪০ গ্রামের চারকোনা সোনার মতো দেখতে একটি ধাতব টুকরো বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তার কাছ থেকে একটি বিলও পাওয়া গিয়েছে। তাতে একটি সোনার দোকানের নাম লেখা রয়েছে। রাস্তায় সোনার মতো দেখতে ধাতব পদার্থ ফেলে রেখে একটি চক্র প্রতারণায় জড়িত বলে ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জেনেছে পুলিস। চক্রে আরও কয়েকজন জড়িত বলে জানা গিয়েছে। মঙ্গলবার ধৃতকে বর্ধমান আদালতে পেশ করা হয়। গ্যাংয়ের বাকিদের হদিশ পেতে এবং কারবারের বিষয়ে বিশদে জানতে ধৃতকে ১০ দিন নিজেদের হেফাজতে নিতে চেয়ে আদালতে আবেদন জানায় পুলিস। ধৃতকে ২ দিন পুলিসি হেফাজতে পাঠানোর নিের্দশ দেন সিজেএম।
পুলিস জানিয়েছে, সোমবার দুপুরে বর্ধমানে আসেন নদিয়ার নাকাশিপাড়া থানার বেথুয়াডহরির বাসিন্দা সুব্রত শিকারি। বেলা ২টো নাগাদ তিনি বর্ধমান স্টেশনের বাসস্ট্যান্ডের কাছ থেকে কার্জন গেটে আসার জন্য রিকশয় চাপেন। রিকশচালক তাঁকে জিটি রোড ধরে না এনে বিগ বাজারের দিকে নিয়ে যায়। চৌধুরি মাের্কটের কাছে আচমকা রিকশ দাঁড় করিয়ে রাস্তায় পড়ে থাকা একটি গিঁট বাঁধা রুমাল তোলে চালক। সেটি খুলে দেখা যায়, তার মধ্যে একটি সোনার মতো দেখতে চারকোনা ধাতব পদার্থ রয়েছে। সেটি রিকশ চালক সুব্রতবাবুকে দেন। সেটি সোনার কিনা তা দেখতে বলেন তাঁকে। রুমালের মধ্যে একটি সোনার দোকানের বিলও ছিল। ধাতব পদার্থটি দেখে সুব্রতবাবুর সন্দেহ হয়। তিনি সোজা মুরাদপুর ফাঁড়িতে এসে পুলিসকে বিষয়টি জানান। রিকশচালককে ধরে পুলিসের হাতে তুলে দেন তিনি। পরে তিনি ঘটনার কথা জানিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ পেয়ে জাল নথিপত্র তৈরি করে প্রতারণার ধারায় মামলা রুজু করে রিকশ চালক তালেবকে গ্রেপ্তার করে পুলিস। কিভাবে প্রতারণা করে চক্রটি? ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিস জেনেছে, চক্রের কেউ ধাতব পদার্থ রুমালে বেঁধে ফেলে রাখে। তার মধ্যে একটি সোনার দোকানের বিলও রাখা হয়। সেই বিলে সোনা বাটটি আংটি করার জন্য স্বর্ণকারের কাছে পাঠানোর কথা লিখে রাখা হয়। সোনা ২২ ক্যারেটের এবং ৪ ভরির বলে লেখা থাকে বিলে। তা দিয়ে সোনার চেন ও আংটি করে দেওয়ার কথা বলা হয়। চক্রের লোকজন রাস্তা থেকে সেটি কুড়িয়ে বিল সহ তা টাের্গট করে নেওয়া লোককে দেখায়। এরপর কম দামে সোনার বাট বিক্রির কথা বলা হয়। কম দামে সোনার পাওয়ার আশায় টাকা দিলেই কেল্লা ফতে। টাকা নিয়ে গা ঢাকা দেয় প্রতারকরা। উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে বর্ধমান পুরসভার অফিসের সামনে থেকে সোনার মতো দেখতে একটি ধাতব বস্তু উদ্ধার হয়। সেটির দাবিদার পাওয়া যায়নি। স্বর্ণকারকে দিয়ে পরীক্ষা করিয়ে সেটি সোনা নয় বলে জানতে পারে পুলিস। সেই ঘটনার সঙ্গে তালেবের যোগাযোগ রয়েছে বলে অনুমান পুলিসের।