বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- সরকারি অর্থ আত্মসাতে অভিযুক্ত জামালপুরের আঝাপুর পঞ্চায়েতের ডাটা এন্ট্রি অপারেটার সুকান্ত পাল বৃহস্পতিবার বর্ধমান সিজেএম আদালতে আত্মসমর্পণ করে। তার বিরুদ্ধে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর কথা বলে তার আইনজীবী আদালতে জামিন চান। সরকারি আইনজীবী জামিনের বিরোধিতা করেন। সওয়াল শুনে আত্মসমর্পণকারীকে ৬ আগস্ট পর্যন্ত বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন ভারপ্রাপ্ত সিজেএম সোমনাথ দাস। এর আগে তার আগাম জামিনের আবেদন খারিজ হয়। তারপরও সে ধরা না পড়ায় পুলিসের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, শাসকদলের হওয়ায় পুলিস তাকে ধরেনি।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, জামালপুর থানার শুঁড়েকালনার বাসিন্দা সুকান্ত ২০১৮ সালে আঝাপুর পঞ্চায়েতে ডাটা এন্ট্রি অপারেটার হিসাবে কাজে যোগ দেয়। পরে তাকে বেড়ুগ্রাম পঞ্চায়েতে বদলি করা হয়। চলতি বছরের ১৭ থেকে ২৪ জানুয়ারি পঞ্চায়েতে অডিট হয়। অডিটে ইন্দিরা আবাস যোজনা ও ১০০ দিনের প্রকল্পে অর্থ নয়-ছয়ের বিষয়টি সামনে আসে। কোনও রকম বিল, ভাউচার ও অনুমোদন ছাড়াই টাকা দেওয়া হয়। এ ব্যাপারে অডিট টিমের তরফে পঞ্চায়েতকে চিঠি দেওয়া হয়। পঞ্চায়েত এ ব্যাপারে কৈফিয়ৎ দিতে পারেনি। পঞ্চায়েতের প্রধান অশোক কুমার ঘোষ জামালপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তাতে তিনি জানান, প্রধান ও ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী সহায়কদের ই-টোকেন ব্যবহার করে সরকারি অর্থ তছরুপ করেছে সুকান্ত। ১০০ দিনের প্রকল্পে ৬ লক্ষ ২৫ হাজার ৩০২ টাকা বিভিন্ন স্কিমে বাড়তি পেমেন্ট করা হয়েছে। অন্যের নাম ব্যবহার করে সেই টাকা আত্মসাত করেছে সুকান্ত। হাতিয়ে নেওয়া টাকা সে হুগলিতে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের শাখায় স্ত্রী, নাবালক পুত্র ও নিজের নামে জমা রেখেছে।
অন্যদিকে, বেড়ুগ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে নির্বাহী সহায়ক মলয় চন্দন মুখোপাধ্যায় আরও একটি অভিযোগ দায়ের করেন। তাতে তিনি জানান ১০০ দিনের প্রকল্পের ভার্মি কম্পোস্টের নামে ২৬ লক্ষ ২০ হাজার টাকা কোনও বিল ও ভাউচার ছাড়া পেমেন্ট করা হয়েছে। এনিয়ে পঞ্চায়েত থেকে কোনও অনুমোদন নেওয়া হয়নি। ইন্দিরা আবাস যোজনাতেও ১১ লক্ষ ৬১ হাজার টাকা অতিরিক্ত পেমেন্ট করা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী ১০০ দিনের প্রকল্পে সুপার ভাইজারকে গ্রামে গিয়ে ৪-ক ফর্ম পূরণ করে আনতে বলা হত। ফর্ম পূরণের পর মাস্টার রোল তৈরি করা হত। পরে তা বিডিও অফিস থেকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হত। মাস্টার রোল তৈরির পুরো বিষয়টি সুকান্ত দেখত বলে জানিয়েছেন নির্বাহী সহায়ক। অডিটে এইসব অনিয়মের বিষয়গুলি সামনে আসে। বাসিন্দারা বলেন, সরকারি অর্থ তছরুপ করে সুকান্ত বিশাল বাড়ি তৈরি করেছে। তার বিলাসবহুল জীবনযাপন এলাকায় চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তাকে গ্রেপ্তার না করা নিয়ে দিনকয়েক আগে বিজেপির তরফে থানায় ডেপুটেশন দেওয়া হয়। জামালপুর থানার এক অফিসার বলেন, তদন্তের প্রয়োজনে অভিযুক্তকে হেফাজতে নেওয়ার জন্য আবেদন জানানো হবে।
Tags data entry operator embezzlement embezzlement government money embezzlement money government money Panchayat Panchayat data entry operator
Check Also
বর্ধমানে আয়োজিত হলো পঞ্চম শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল
বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বর্ধমান চলচ্চিত্র চর্চা কেন্দ্রের উদ্যোগে আয়োজিত হলো শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। রবিবার …