জামালপুর (পূর্ব বর্ধমান) :- জন্মের পর মাত্র দেড় মাস বয়সেই ছোট্ট ঐশিকার ধরা পড়েছিল থ্যালাসেমিয়া। এখন ঐশিকার বয়স প্রায় আট বছর। ইতিমধ্যে প্রাণঘাতি থ্যালাসেমিয়া রোগে ঐশিকার জীবন বিপন্ন। আর তাই বর্ধমানের জৌগ্রামের কালুপুকুর গ্রামের বাসিন্দা ছোট্ট ঐশিকাকে বাঁচাতে এগিয়ে এলেন গ্রামবাসীরাই। গ্রামবাসী বাদশা সেখ জানিয়েছেন, ঐশিকার বাবা তরুণ ঘোষ কলকাতার একটি বেসরকারী সংস্থায় কাজ করতেন। মা শুভ্রা ঘোষ গৃহবধু। তাঁদের একমাত্র সন্তান ঐশিকার জন্মের দেড় মাসের মাথায় তাঁর থ্যালাসেমিয়া রোগ ধরা পড়ে। শুরু হয় তার চিকিত্সা। কিন্তু যতই সে বড় হয়েছে ততই তার চিকিত্সার ধরণ, পদ্ধতিও বদলেছে। সম্প্রতি কলকাতার টাটা হাসপাতালের চিকিত্সকরা জানিয়েছেন, ঐশিকাকে বাঁচাতে গেলে তার বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট বা অস্থি মজ্জা প্রতিস্থাপন করা ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই। আর এই চিকিত্সা করাতে এক লপ্তে লাগবে ২৫ লক্ষ টাকা। এছাড়াও চিকিত্সার পরবর্তী ২ বছরে লাগতে পারে আরও ১০ লক্ষ টাকা। বিপুল এই টাকা জোগাড় কিভাবে হবে তা নিয়েই এখন রীতিমত মুষড়ে পড়েছেন ঘোষ পরিবারটি। বাদশা সেখ জানিয়েছেন, তরুণবাবু তাঁর এই একমাত্র মেয়ের চিকিত্সা করাতে, তাঁর খরচ জোগাতে গিয়ে তাঁর একমাত্র বেসরকারী সংস্থায় সেলসের চাকরিটিও হারিয়েছেন। ফলে তিনি আরও অসহায় হয়ে পড়েছেন। এরই পাশাপাশি তাঁদের যেটুকু গচ্ছিত সম্পত্তি, জমি বা্ড়ি তাও তাঁরা বিক্রি করে দিয়েছেন। কিন্তু তাতেও টাকার জোগান হয়ে ওঠেনি। ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে আবেদন জানানোয় সেখান থেকে ৩ লক্ষ টাকা সাহায্য দেওয়া হয়েছে তরুণবাবুকে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর থেকেও দেওয়া হয়েছে ১ লক্ষ টাকা। সব মিলিয়ে এখন তরুণবাবু জোগাড় করতে পেরেছেন মোট প্রায় ১০ লক্ষ টাকা। গত জুন মাসেই তাঁকে হাসপাতালে ভর্তির নির্দেশ দিয়েছিলেন চিকিত্সকরা। কিন্তু টাকা জোগাড় করতে না পারায় এখন রীতিমত অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন জৌগ্রামের কালুপুকুরের এই বাসিন্দারা। তাঁদের এই অসহায় অবস্থায় এগিয়ে এসেছেন গ্রামবাসারীও। তাঁরা সাধ্যমত সাহায্য করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু বিপুল এই সংখ্যক টাকা জোগাড় কিভাবে হবে তা নিয়েই দিন কাটাচ্ছেন তরুণবাবুরা। তরুণবাবু জানিয়েছেন, ঐশিকার শারীরিক অবস্থা খুব একটা ভাল নয়। দ্রুত তার চিকিত্সার প্রয়োজন। কিন্তু তাঁরা নিরুপায়, অসহায় হয়েই দিন কাটাচ্ছেন। সবরকমের চেষ্টাও চালাচ্ছেন।