বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- সরকারী সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফের তোয়াক্কা না করে প্রতি সপ্তাহেই ছুটির দিনে জাতীয় সড়কে বেপরোয়া ঝুঁকিবহুল বাইক রেসিং আটকাতে এবার উদ্যোগী হল পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ। গত প্রায় মাসখানেক ধরেই জেলা পুলিশ তথা ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে বর্ধমানের ২নং জাতীয় সড়কে স্পিডো লেজার গান মেশিন নিয়ে গাড়ীর গতির ওপর নজরদারী চালাচ্ছিল। প্রায় মাস খানেক ধরেই জাতীয় সড়কে বেপরোয়া বাইক চালানোর বিষয়টি নজরে আসার পরই রবিবার থেকে তা বন্ধে উদ্যোগ নিল জেলা পুলিশ। জেলা পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, বাইক রেসিং এবং কার রেসিং ঠেকাতে তাঁরা ধারাবাহিকভাবেই হানাদারি চালাবেন। রবিবার বর্ধমানের উল্লাস মোড়ে বেপরোয়া বাইক রেসিং-এর দায়ে আটক করা হয় ৩৮টি গাড়ি। বেপরোয়া এবং নির্দিষ্ট গতির বেশি গতিতে বাইক চালানোর দায়ে তাদের জরিমানাও করা হয়। পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, এই ধরণের বেপরোয়া বাইক চালানোর ঘটনায় একদিকে যেমন সরকারী নিয়মকে ভঙ্গ করা হচ্ছে, তেমনি প্রাণহানির মত ঘটনাও ঘটছে। তিনি জানিয়েছে্ন, এই ধরণের বাইক রেসিং এবং কার রেসিং-এর পিছনে কিছু সংস্থাও দায়ী। তাদের বিরুদ্ধেও তাঁরা আইনগতভাবে ব্যবস্থা নিতে চলেছেন। উল্লেখ্য, কার্যত প্রতি সপ্তাহেই ছুটির দিন বিশেষত রবিবারগুলিকে বেছে নেন কিছু উঠতি যুবক যুবতী। তাঁরাই বেপরোয়াভাবে জাতীয় সড়কে বাইক রেসিং করতে শুরু করেছেন। সম্প্রতি বর্ধমান শহরের নীলপুরের বাসিন্দা দুই যুগলের মর্মান্তিক মৃত্যুও হয় গলসী থানা এলাকায় এই বাইক রেসিং করতে গিয়ে। কিছুদিন আগে কলকাতার এক ব্যবসায়ীরও মৃত্যু হয় শক্তিগড়ের কাছে দ্রুতগতিতে বাইক নিয়ে বর্ধমানের দিকে আসার পথে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় সড়কে বাইকের ক্ষেত্রে ৮০ কিমি প্রতি ঘণ্টায় সর্বাধিক গতি থাকার কথা। কিন্তু দেখা যাচ্ছে স্পিডোমিটারের কাঁটা ছাড়াচ্ছে কখনও দেড়শো কখনও বা ২০০-র কাছাকাছি। সেফ ড্রাইভ সেভ লাইভকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েই গতির নেশায় ছুটছে তারা। তারই মধ্যে চলছে নানান কারসাজি। স্ট্যাণ্টবাজি। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কলকাতা হাওড়া বর্ধমানের পাশাপাশি এই বাইক এবং কার রেসিং-এ সামিল হচ্ছে আসানসোল, ধানবাদের যুবক যুবতিরাও। জানা গেছে, কোনো কোনো বাইকের দাম আট দশ লাখ টাকা থেকে আঠারো কুড়ি লাখ টাকা পর্যন্ত। প্রতি রবিবার বর্ধমানের উল্লাস কিংবা শক্তিগড়ে জেলা এবং ভিন জেলার একদল তরুণ তরুণী দামী বাইক নিয়ে হাজির হয়ে যায়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা চলে বাইক রেসিং ও স্ট্যাণ্ট। রবিবার জেলা পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, জরুরী কাগজ বাজেয়াপ্ত করার পাশাপাশি এদিন জরিমানাও করা হয়। ধারাবাহিকভাবে এই অভিযান চলবে। শুধু বাইকই নয়, একইসঙ্গে নির্দিষ্ট গতির বাইরে চারচাকা গাড়িগুলিকেও এই নজরদারীর মধ্যে আনা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।