বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- পুলিশকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অপরাধী বানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এর পিছনে রয়েছে একশ্রেণীর অসাধু রাজনীতির মানুষ আর বিক্রি হয়ে যাওয়া কিছু মিডিয়া এবং তথাকথিত কিছু বুদ্ধিজীবী। আর জি কর ঘটনার পর পুলিশ কর্মীদের ছেলেমেয়েরা স্কুলে পড়তে যেতে ভয় পাচ্ছে। তাদের চিহ্নিত করে দেওয়া হচ্ছে। এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি আমরা। বুধবার বর্ধমান সংস্কৃতি লোকমঞ্চে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ ওয়েলফেয়ার কমিটির উদ্যোগে পুলিশ পরিবারের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের কৃতি ছাত্রছাত্রীদের উৎসাহদান সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে এভাবেই সোচ্চার হলেন ওই কমিটির রাজ্য আহ্বায়ক বিজিতাশ্ব রাউত। এদিন পুলিশ কর্মীদের পরিবারকে তিনি মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়ানোর ডাক দিয়ে বলেন, পুলিশের কাজ ত্যাগের কাজ। পুলিশ কর্মীদের জীবন ত্যাগের মধ্যে দিয়ে বঞ্চনার মধ্যে দিয়ে এগিয়ে যায়। তিনি বলেন, বিভিন্ন উৎসবে পুলিশ কর্মীরা তাঁদের পরিবার নিয়ে কাটাতে পারেন না। এমনকি ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া, জীবনযাত্রা নিয়েও খোঁজ খবর রাখতে পারেন না। সপ্তাহে একদিন রাত্রে বাড়ি ফেরা আর সকাল হতেই বেড়িয়ে পড়া। ছেলেমেয়েদের সঙ্গে কার্যত দেখাই হয়না। তিনি বলেন, আমরাও চাই, পুলিশ কর্মীদের ছেলেমেয়েরাও বড় বড় পদে যাক। তারাও দেশের মুখ উজ্জ্বল করুক। বিজিতাশ্ব রাউত বলেন, গত দেড়–দুমাস ধরে যা দেখছি তাতে মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়াতেই হবে। পুলিশ পরিবারকে হেনস্তা করা হচ্ছে। আর জি করের ঘটনাকে আমরা প্রতিবাদ করেছি। কিন্তু এক-দুজন পুলিশ কর্মী বা পুলিশের সহকারীর জন্য গোটা পুলিশ পরিবারকে দোষারোপ করা হচ্ছে। পুলিশ কর্মীদের ছেলেমেয়েদের আক্রমণের শিকার করা হচ্ছে। ছেলেমেয়েরা স্কুলে গিয়ে হেনস্থার শিকার হচ্ছে অন্য সহপাঠীদের কাছ থেকে। ছেলে মেয়েরা স্কুলে যেতে চাইছে না। এমনকি আমরাও নিজেদের পুলিশ কর্মী হিসেবে পরিচয় দিতে পারছি না। ট্রেনে, বাসে, চায়ের দোকানে বলতে পারছি না আমরা পুলিশে কাজ করি, এমনই পরিস্থিতির সৃষ্টি করা হয়েছে। বুঝতে পারছেন চক্রান্তের গভীরতা কতদূর। তিনি বলেন, পুলিশ কর্মীদের টার্গেট করা হচ্ছে। যারা দুমিনিট পুলিশ ছাড়া বাড়ি থেকে বের হতে পারেন না, তারাও পুলিশকে দোষারোপ করছেন। বিজিতাশ্ববাবু বলেন, পুলিশের এই ওয়েলফেয়ার কমিটি সর্বদা পুলিশ পরিবারের জন্য রয়েছে। যেকোনো পরিস্থিতি ও প্রয়োজনে এই কমিটি সাহায্য করতে প্রস্তুত রয়েছে। এই প্রসঙ্গেই তিনি এদিন বলেন, পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের নিয়েও একটি সংগঠন করা হয়েছে। তাঁরা জানেন, অবসর নেওয়ার পর আর অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মীকে কেউ সাহায্য করেন না। এমনকি যে থানা বা ফাঁড়ি থেকে তিনি অবসর নিলেন সেই থানা বা ফাঁড়িও আর তাকে সাহায্য করে না। এজন্যই নতুন এই সংগঠন করা হয়েছে। উল্লেখ্য, এদিন হাওড়া, হুগলী, মেদিনীপুর, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ-সহ দুই বর্ধমান জেলার পুলিশ পরিবারের কৃতি ছাত্রছাত্রীদের হাতে এই উৎসাহ স্বরূপ পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহার, জেলা পুলিশ সুপার সায়ক দাস প্রমুখরা।
Check Also
বর্ধমানে আয়োজিত হলো পঞ্চম শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল
বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বর্ধমান চলচ্চিত্র চর্চা কেন্দ্রের উদ্যোগে আয়োজিত হলো শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। রবিবার …