গণেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, মেমারী (পূর্ব বর্ধমান) :- মেমারির দুর্গাডাঙা ও ছিনুই থেকে অপহৃত হওয়া দুই কিশোরীকে গুজরাটের আহমেদাবাদের রামালো থানা এলাকা থেকে উদ্ধার করল পুলিস। একই সঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয়েছে কিশোরীদের অপহরণে জড়িত সঞ্জিত ক্ষেত্রপাল ওরফে বাগ ও মুন্না হাজরাকে। মেমারি থানার রসুলপুরের মাঠপাড়ায় সঞ্জিতের বাড়ি। মেমারি থানারই বেলুটের দিঘিরপাড়ে মুন্নার বাড়ি। তারা দু’জনেই বিবাহিত। সোমবার ধৃতদের বর্ধমান আদালতে পেশ করা হয়। ধৃতদের বিচার বিভাগীয় হেপাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন সিজেএম রতন কুমার গুপ্তা। মামলায় অপহরণ, ধর্ষণ ও পকসো অ্যাক্টের ধারা যুক্ত করার জন্য আবেদন জানান তদন্তকারী অফিসার উত্তম সামন্ত। মঙ্গলবার সেই আবেদনের শুনানি হবে।বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের গাইনি বিভাগে উদ্ধার হওয়া কিশোরীদের মেডিকেল পরীক্ষা করিয়েছে পুলিস। তাদের গোপন জবানবন্দি নথিভূক্ত করার জন্য আদালতে আবেদন জানিয়েছেন তদন্তকারী অফিসার। পাশাপাশি ধৃতদের মেডিকেল পরীক্ষা করানোর জন্য আবেদন জানান তদন্তকারী অফিসার। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের ফরেন্সিক স্টেট মেডিসিনের বিভাগীয় প্রধানকে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন সিজেএম।
পুলিস জানিয়েছে, গত ৫ জুলাই স্কুলে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয় দুর্গাডাঙার ওই কিশোরী। নির্ধারিত সময়ের পরও স্কুল থেকে সে বাড়ি না ফেরায় পরিবারের লোকজন বিভিন্ন জায়গায় খোঁজখবর শুরু করেন। তারা জানতে পারেন, একই সময়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়েছে কিশোরীর এক বান্ধবীও। দু’টি পরিবার কিশোরীদের খোঁজে নামে। পরিবারের সদস্যরা জানতে পারেন, সঞ্জিত ও মুন্না কিশোরীদের অপহরণ করে কোনও গোপন জায়গায় আটকে রেখেছে। কিশোরীদের পরিবারের লোকজন তাদের বাড়িতে যান। প্রথমে কিশোরীদের ফিরিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেয় অভিযুক্তদের পরিবার। পরে কিশোরীদের ফিরিয়ে দিতে অস্বীকার করে। এরপরই দুর্গাডাঙার কিশোরীর পরিবারের তরফে মেমারি থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। তদন্তে নেমে পুলিস জানতে পারে, একটি মোবাইল থেকে বাড়ির সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে মুন্না। সেই সূত্র ধরে জানা যায়, দুই কিশোরীকে নিয়ে আহমেদাবাদে রয়েছে মুন্না ও সঞ্জিত। এরপরই তদন্তকারী অফিসার ও দুই মহিলা কনস্টেবল কিশোরীদের উদ্ধারের জন্য আহমেদাবাদের উদ্দেশে ৩১ জুলাই রওনা দেয়। দলটি ২ আগস্ট আহমেদাবাদে পৌঁছায়। সেখানকার রামালো থানার পুলিসকে নিয়ে মেমারি থানার দলটি ভাসট্রাস রোডে একটি নির্মীয়মান বাড়িতে হানা দেয়। সেখান থেকেই উদ্ধার হয় দুই কিশোরী। ধরা পড়ে মুন্না ও সঞ্জিত। জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিস জেনেছে, দুর্গাডাঙার কিশোরীর সঙ্গে সঞ্জিত বিয়ে করেছে। মুন্না বিয়ে করেছে ছিনুইয়ের কিশোরীর সঙ্গে। তারা সেখানে স্বামী-স্ত্রীর মতো থাকত। আহমেদাবাদে রাজমিস্ত্রির কাজ করত ধৃতরা। উদ্ধার হওয়া দুই কিশোরী ও ধৃতদের আহমেদাবাদের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পেশ করে ট্রানজিট রিমান্ডের জন্য আবেদন জানান তদন্তকারী অফিসার। ৫ দিনের ট্রানজিট রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিচারক। এরপরই তাদের নিয়ে মেমারিতে ফেরে পুলিসের দলটি।
Tags Bardhaman Burdwan East Bardhaman East Burdwan Gujarat Kidnapped Purba Bardhaman খবর পূর্ব বর্ধমান বর্ধমান বাংলা বাংলা খবর সংবাদ
Check Also
বন্ধুর সঙ্গে পিৎজা খেতে বের হয়ে ধর্ষণের শিকার যুবতী, গ্রেপ্তার ৫
বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বন্ধুর সঙ্গে পিৎজা খেতে বের হয়ে ধর্ষণের শিকার হলেন এক যুবতী। …