বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- রাজ্যের কৃষি বিপণন দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার পর আশ্বাস পেতেই আলু নিয়ে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নিল পশ্চিমবঙ্গ প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতি। সোমবার মন্ত্রীর সঙ্গে সভার পরে মঙ্গলবার বর্ধমানে আলু ব্যবসায়ীরা বৈঠকে মিলিত হন। সেখানেই তাঁরা কর্মবিরতি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেন। এই বৈঠকের পর আলু ব্যবসায়ী সমিতির রাজ্য সভাপতি জগবন্ধু মণ্ডল এবং রাজ্য সম্পাদক লালু মুখার্জী জানিয়েছেন, সোমবার তাঁরা রাজ্যের মন্ত্রী বেচারাম মান্নার সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন। সেখানে মন্ত্রীর আশ্বাস পাওয়ার পর এদিন নিজেরা আলোচনা করে তাঁরা কর্মবিরতি তুলে নিলেন। ফলে বৃহস্পতিবার থেকে বাজারে আলুর জোগান ফের স্বাভাবিক হবে। উল্লেখ্য, সম্প্রতি ভিন রাজ্যে আলু পাঠানো নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই রাজ্য আলু ব্যবসায়ী সমিতি সোমবার রাত থেকে কর্মবিরতিতে সামিল হন। এর জেরে মঙ্গলবার থেকেই বাজারে খুচরো আলুর দাম বাড়তে শুরু করে। সোমবার গড়ে বর্ধমানের বাজারে ৩২ টাকা কেজি আলু বিক্রি হলেও মঙ্গলবার বাজারে আলু বিক্রি হয়েছে ৩৪ টাকা দরে। এদিন জগবন্ধু মণ্ডল জানিয়েছেন, মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার পরে সাধারণ জনগণের কথা ভেবে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নেওয়া হলো। কর্মবিরতি প্রত্যাহার করার জন্য মন্ত্রী অনুরোধ করেছেন, তিনি জানিয়েছেন তাঁদের দাবি মানার চেষ্টা করা হবে। মঙ্গলবার বর্ধমানে সংস্থার অফিসে আয়োজিত সভায় ঠিক হয়েছে বুধবার পর্যন্ত ৪৮ ঘণ্টার কর্মবিরতি চলবে। বুধবার রাতে হিমঘরের চেম্বার থেকে আলু বের করে রেখে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বাজারে আলু ছাড়া হবে। জগবন্ধুবাবু জানিয়েছেন, তাঁদের দাবি, বাইরের রাজ্যে আলু পাঠাতে দিতে হবে। কম আছে বলে বাইরের রাজ্যে আলু পাঠানোর বিষয়ে সরকার পাঠানোর নিষেধাজ্ঞা জারি করছে। মেদিনীপুর, বাঁকুড়া জেলা থেকে বেশি পরিমাণে আলু বাইরের রাজ্যে যায়। পূর্ব বর্ধমানেরও ২০ শতাংশ আলু বাইরের রাজ্যে যায়। হুগলি থেকেও বাইরে পাঠানো হয়। উড়িষ্যা, ঝাড়খণ্ড, অন্ধ্রপ্রদেশ-সহ বেশ কিছু রাজ্যে পশ্চিমবঙ্গ থেকে আলু যায়। দীর্ঘ বছর ধরেই একটা ব্যবসায়িক লেনদেন শুরু হয়ে গেছে। এখন হঠাৎ করে আলু পাঠাতে না পারলে এই রাজ্যের ব্যবসায়ীদের টাকাগুলো আটকে যাবে। তিনি জানিয়েছেন, গতবছর গোটা রাজ্যে ১২ কোটি ৫৫ লক্ষ প্যাকেট আলু হিমঘরে ঢোকানো হয়েছিল। বর্তমানে সাড়ে ৬ লক্ষ মেট্রিক টন আলু এখনও হিমঘরে আছে। পূর্ব বর্ধমানে ২ কোটি ৯ লক্ষ ৬২ হাজার ৭৯৮ প্যাকেট আলু হিমঘরে ঢোকানো হয়েছিল। বর্তমানে এই জেলার প্রায় ৯ শতাংশ আলু হিমঘরে রয়েছে। বর্তমানে আলুর পাইকারি দর ২৬-২৮ টাকা কেজি। পাইকারি বাজারের সঙ্গে খুচরো বাজারে দরের ফারাক সম্পর্কে এদিন লালু মুখার্জি জানিয়েছেন, এই গোটা বিষয়টি দেখার জন্য রাজ্য সরকারের কোনো পরিকাঠামোই নেই। এর পাশাপাশি লালু মুখার্জি প্রশ্ন তুলেছেন, অন্য রাজ্য থেকেও এই রাজ্যে আলু আসে তাহলে এই রাজ্যের আলু অন্য রাজ্যে যেতে বাঁধা কেন?
Tags Burdwan Potato Price potato Potato Price Burdwan Potato Traders supply potatoes West Bengal Progressive Potato Traders Association
Check Also
বর্ধমান পৌরসভার নাকের ডগায় অবৈধভাবে ৮ তলা ভবন নির্মাণ, কাজ বন্ধের নোটিশ
বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বর্ধমানে ৯ নম্বর ওয়ার্ডে একেবারে জিটি রোডের পাশে বহুতল নির্মাণ নিয়ে …