বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- গোটা দেশের সঙ্গে বর্ধমানেও নয়া তিন ফৌজদারি আইন চালুর বিরোধিতা করা হল। পূর্বের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ীই ১ জুলাই ২০২৪ থেকে এতদিন ধরে চলা ফৌজদারি আইনগুলিকে বাতিল করে লাগু হলো নয়া তিন ফৌজদারি আইন ভারতীয় ন্যায় সংহিতা, ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা এবং ভারতীয় সাক্ষ্য অধিনিয়ম। পূর্ব বর্ধমান জেলা আদালতের বর্ধমান বার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে নয়া এই আইন লাগুর প্রতিবাদে সোমবার একটি মিছিলও করা হয়। অন্যদিকে, এদিন বর্ধমানের কার্জন গেটের সামনে মানবাধিকার সংগঠন সিপিডিআরএস বর্ধমান শাখার পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানানো হল। এই কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন জেলা সম্পাদক বর্ধমান জেলা কোর্টের আইনজীবী কাজী মুফাস্বর হোসেন, সুদীপ সরকার, জামাল মল্লিক প্রমুখরা। এদিন কাজী মুফাস্বর হোসেন জানান, ১ জুলাই থেকে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার হরণকারী তিনটি নতুন আইন চালু করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। ঔপনিবেশিকতা থেকে মুক্ত করে আইনের আধুনিকীকরণের কথা বলা হলেও, নতুন আইন তিনটির ধারা ও উপধারা বাস্তবে ঔপনিবেশিক আইনের থেকেও আরো মারাত্মক। এই আইনে অভিযুক্তদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ, সরকারি আইনি পরিষেবা পাওয়ার সুযোগ কমিয়ে পুলিশের হাতে মাত্রাছাড়া ক্ষমতা তুলে দেওয়া হয়েছে। সন্ত্রাস দমনের জন্য বিশেষ আইন (যে আইন প্রয়োগ করতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি প্রয়োজন হতো) তা কার্যত সাধারণ আইনে পরিণত করে, এই কঠোর আইন যে কোন প্রতিবাদী মানুষের ওপর প্রয়োগ করার অবাধ স্বাধীনতা পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। পুরনো আইনের সর্বাধিক ১৫ দিন থেকে বাড়িয়ে সর্বাধিক ৯০ দিন পর্যন্ত, অভিযুক্তকে পুলিশ হেফাজতে বন্দী রাখার সুযোগ পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, মানবাধিকার সংগঠন সিপিডিআরএস বর্ধমান শাখার পক্ষ থেকে মনে করি, গণতান্ত্রিক অধিকারের ছিটেফোঁটা যেটুকু অন্তত কাগজে-কলমেও আছে, নতুন আইনগুলি চালু করার মাধ্যমে তা-ও নিঃশেষিত হয়ে যাবে। ভারত পরিণত হবে এক পুলিশি রাষ্ট্রে। তিনি জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের এই সর্বনাশা পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ১ জুলাই “সারা বাংলা প্রতিবাদ দিবস” পালন করা হচ্ছে। অন্যদিকে, এই তিন আইনের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতার ৩৭ ধারা অনুসারে অনুসারে জেলাস্তরে একজন এবং প্রতিটি থানা ভিত্তিক একজন করে নোডাল অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জেলাস্তরের নোডাল অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে মহম্মদ ফইজুল আমিনকে। তাঁর ফোন নং ৭৯০৮৮১১৬৮১। পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তির নাম, ঠিকানা এবং তাঁকে গ্রেপ্তারের কারণ প্রভৃতি বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত সংরক্ষণ করবেন এবং জানাবেন এই নোডাল অফিসাররা। এমনকি গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তির এই সমস্ত তথ্য জেলা পুলিশ সুপারের অফিসে টাঙানোরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। থানা এলাকার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট থানায় এব্যাপারে তথ্য টাঙিয়ে দেবার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
Tags Bharatiya Nagarik Suraksha Sanhita Bharatiya Nyaya Sanhita Bharatiya Sakshya Adhiniyam BNS BNSS BSA Criminal Law Criminal Laws Indian Penal Code IPC law Nagarik Suraksha Sanhita New Criminal Law New Criminal Laws New Law Nyaya Sanhita Sakshya Adhiniyam
Check Also
বর্ধমানে আয়োজিত হলো পঞ্চম শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল
বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বর্ধমান চলচ্চিত্র চর্চা কেন্দ্রের উদ্যোগে আয়োজিত হলো শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। রবিবার …