বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- পূর্ব বর্ধমান জেলাকে আক্ষরিক অর্থেই নির্মল জেলা হিসাবে চিহ্নিত করতে শুক্রবার থেকে পর্যায়ক্রমে একাধিক কর্মসূচী শুরু করল জেলা প্রশাসন। শুক্রবার বর্ধমান শহর থেকে এব্যাপারে কর্মসূচীর সূচনা করলেন রাজ্যের প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। বর্ধমান শহরের কার্জনগেটে আয়োজিত সভায় হাজির ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়া, সহকারী সভাধিপতি দেবু টুডু, জেলাশাসক বিজয় ভারতী সহ জেলার সমস্ত পদাধিকারীরাও।
স্বপনবাবু এদিন সমস্ত নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি সহ সাধারণ মানুষকেও স্বচ্ছ জেলা হিসাবে গড়ে তোলার জন্য এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সদস্য উপাধ্যক্ষ অশোক বিশ্বাসকে উদ্দেশ্য করে বলেন, অশোকবাবু তাঁর নিজের দোকানের সামনেটা যেন পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখেন। শুধু তাই নয়, এদিন গোটা জেলাকে নির্মল জেলা হিসাবে গড়ে তোলার জন্য স্বপনবাবু জোড়ালো আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে পূর্ব বর্ধমান জেলাকে নির্মল জেলা হিসাবে ঘোষণা করে গেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। কিন্তু তারপরে বেস সার্ভেতে সম্প্রতি উঠে আসে জেলায় প্রায় ৬৭ হাজার পরিবার শৌচাগারহীন। এরপরেই শুরু হয় প্রশাসনিক তৎপরতা। তারই অঙ্গ হিসাবে শুক্রবার থেকে শুরু হল জেলাকে নির্মল করার জন্য নতুন অভিযান।
এদিকে, এই কর্মসূচীকে সফলতা দিতে বর্ধমান শহরের বীরহাটা মোড় থেকে বাদামতলা মোড় পর্যন্ত মানব বন্ধনের ডাক দেওয়া হয়। বিভিন্ন স্কুলের ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক শিক্ষিকা সহ জেলা প্রশাসনের কর্তারাও হাজির হন। এরই মধ্যে মানববন্ধনে নজর কাড়েন বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়া এবং সহকারী সভাধিপতি দেবু টুডু।
বেশ কিছুদিন ধরেই জেলা পরিষদের এই দুই কর্তার মধ্যে মনোমালিন্যের ঘটনায় চর্চা তুঙ্গে উঠেছে। এর আগেও দুই কর্তার বিরোধ মেটাতে রাজ্য নেতৃত্ব বৈঠকও করেছেন। এমনকি খোদ তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথ দুজনকেই একসঙ্গে চলার জন্য নির্দেশও দিয়েছিলেন। কিন্তু তারপরেও দুজনের মধ্যে বিরোধ মেটেনি।
আর এদিন মানব বন্ধনকেই সেই কাজে লাগানোর উদ্যোগ নিলেন স্বপন দেবনাথ। শম্পা ধাড়া এবং দেবু টুডুকে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে খোদ স্বপন দেবনাথই দুজনের হাত ধরিয়ে দেন – যা নিয়ে উপস্থিত জেলা প্রশাসনের কর্তাব্যক্তি থেকে সাধারণ মানুষও হেসে ওঠেন। আর এই মানববন্ধনে দুজনকে হাত মিলিয়ে দিয়ে স্বপনবাবু যে নতুন করে বন্ধন তৈরী করলেন তা কতদূর সফল হল তা নিয়েও এবার নতুন করে চর্চা শুরু হয়েছে।
যদিও এব্যাপারে খোদ শম্পা ধাড়া জানিয়েছেন, তাঁর সঙ্গে সহকারী সভাধিপতি দেবু টুডুর কোনো বিরোধই ছিল না – আজও নেই। এসবই কিছু মানুষের তৈরী করা গল্প। তিনি জানিয়েছেন, নিয়মানুযায়ী তিনি জেলা পরিষদ পরিচালনার ক্ষেত্রে সহকারী সভাধিপতির সঙ্গে আলোচনা করেই চলছেন। তাই এইসব গল্পের কোনো ভিত্তিই নেই। অন্যদিকে, এব্যাপারে দেবু টুডু জানিয়েছেন, কোথায় বিরোধ? কোনো বিরোধই নেই। স্বপনবাবু একটু মজা করেছেন। তাতে তিনি সহ সকলেই মজা পেয়েছেন। এটা নিয়ে সিরিয়াস কিছু ভাবার বিষয় নেই।