বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বালি পাচার রোখার অভিযানে আগাম কোনো থানাকে জানানো হচ্ছে না। এমনকি থানার কোনো পুলিশকেও তাঁরা সঙ্গে নিচ্ছেন না। আগাম এক সপ্তাহের রুটিন দিয়ে জেলা পুলিশ সুপারকে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যেদিন তাঁরা অভিযান করতে যাচ্ছেন সেদিন থানা থেকে কোনো পুলিশকে নিয়ে যাচ্ছেন না, যাচ্ছেন রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স থেকে পুলিশ নিয়ে। কারণ তাঁরা পূর্ব অভিজ্ঞতায় দেখেছেন আগাম থানাকে রেইডে যাবার কথা বলার পর তাঁরা যখন ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন তখন কিছুই পাননি। তাই থানার পুলিশকে আগাম জানানো হচ্ছে না। শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে একথা বলেন বর্ধমানের অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি) শশীকুমার চৌধুরী। অন্যান্য বছরের মত এবারও বর্ষার সময়ে নদী থেকে বালি তোলা নিষিদ্ধ করল পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন। শুক্রবারই জেলাশাসক বিজয় ভারতী এব্যাপারে নির্দেশিকা জারী করলেও শনিবারই প্রতিটি ব্লকের বিএলআরও দপ্তর সহ সংশ্লিষ্ট ঘাটের ইজারাদারদের কাছে এই নির্দেশিকা পৌঁছালো। শনিবার বর্ধমানের অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি) শশীকুমার চৌধুরী সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছেন, শনিবার থেকেই লাগু হয়ে গেছে এই নিয়ম। এই নিয়ম লঙ্ঘন করে নদী থেকে বালি তোলা হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি জানিয়েছেন, ভূমি দপ্তরের ৫টি টিম পর্যায়ক্রমে বালি সংক্রান্ত বিষয়ে নজরদারী চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি জানিয়েছেন, পূর্ব বর্ধমান জেলায় মোট সরকারী ঘাটের সংখ্যা ৪২৭টি। তার মধ্যে ৩০৬টি ঘাটের নিলাম সংক্রান্ত কাজকর্ম চলছে। ১৫০টি ঘাট পুরোদমে চলছে। এই নির্দেশে সমস্ত ঘাটের ইজারাদারদেরই বালি তোলা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, এর মধ্যে ৮০টি ইজারাদারদের বালি মজুদ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে জিটিরোড বা হাইরোড থেকে ২০০ মিটার দূরত্বে এই বালি মজুদ করতে হবে। নিয়ম ভাঙলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রসঙ্গত, তিনি জানিয়েছেন, অবৈধভাবে বালি তোলার জন্য রায়না ১নং ব্লকের ১টি, জামালপুর ২ নং ব্লকের ২টি , মেমারী ১ নং ব্লকের ২টি, কালনা ১নং ব্লকের ১টি, মঙ্গলকোটের ২টি ঘাট মালিকের বিরুদ্ধে সরাসরি এফআইআর করা হয়েছে। এছাড়াও কাটোয়ায় একাধিক অভিযোগ এসেছে সেগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।তিনি জানিয়েছেন, ২০১৮–২০১৯ আর্থিক বছরে ভূমি দপ্তর বালি থেকে রয়ালটি বাবদ ১৬ কোটি ৯২ লক্ষ টাকা আদায় করতে পেরেছে। সেস বাবদ আয় হয়েছে ১ কোটি ৬ লক্ষ টাকা। ওভারলোর্ডিং সংক্রান্ত বিষয়ে জরিমানা বাবদ ১২ কোটি ৭৩ লক্ষ টাকা আদায় করা গেছে। এদিকে, দীর্ঘদিন ধরেই খোদ মুখ্যমন্ত্রী অবৈধ বালি কারবার বন্ধের জন্য প্রশাসনিক নির্দেশ দিলেও অবৈধ বালি পাচার অব্যাহতই। তার প্রমাণ বারবার মিলেছে। কেন বন্ধ করা যাচ্ছে না এই কারবার? অতিরিক্ত জেলাশাসক জানিয়েছেন, যখনই তাঁরা খবর পান তখনই তাঁরা জোরকদমে হানা দেন। বহু গাড়িকে আটক করা, জরিমানা করা সহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, এর আগে অভিযোগ উঠেছে, লরী ট্রাক্টর চালককে ওভারলোর্ডিং করার জন্য কার্যত বা্ধ্য করেন পুলিশ। রয়েছে বিভিন্ন থানার মাসিক চুক্তির কার্ড সিস্টেমও। কিন্তু আজ পর্যন্ত এব্যাপারে কোনো ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। অতিরিক্ত জেলাশাসক জানিয়েছেন, গোটা বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসনিক বৈঠকে আলোচনা করা হবে।
Tags illegal sand mining sand sand mining
Check Also
বর্ধমানে আয়োজিত হলো পঞ্চম শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল
বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বর্ধমান চলচ্চিত্র চর্চা কেন্দ্রের উদ্যোগে আয়োজিত হলো শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। রবিবার …